মিয়ানমারের সঙ্গে সমুদ্র জয়ের ৭ বছর পেরিয়ে গেলেও দীর্ঘদিনেও বিশাল সমুদ্রসীমা থেকে তেল-গ্যাস উত্তোলনে উল্লেখযোগ্য কোনো অগ্রগতি নেই। বহুমাত্রিক জরিপ মাল্টি ক্লাইন্ট সার্ভেও ঝুলে আছে নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের সিদ্ধান্তহীনতায়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন সমুদ্র থেকে জ্বালানি সন্ধানে জোর দেয়া হলে ঝুঁকতে হতো না ব্যয়বহুল এলএনজি নির্ভরতার দিকে।
বেশ ঢাকঢোল পিটিয়ে উদযাপন করা হয়েছিলো ২০১২ সালের ১৪ মার্চ মিয়ানমারের বিপক্ষে সমুদ্র জয়কে। তবে ৭ বছরেও এর সুফল তুলতে পারেনি বাংলাদেশ। এর বিপরীতে সমুদ্রসীমা বিরোধ নিষ্পত্তির পর বাংলাদেশের সীমানা ঘেষে চলছে মিয়ানমারের তেল গ্যাস উত্তোলন।
অথচ বাংলাদেশের বিশাল সমুদ্র সীমানায় ২৬ ব্লকের ২২টিতেই শুরু হয়নি কোনো কার্যক্রম। আর বাকি ৪ ব্লকের কর্মযজ্ঞও কেবল অনুসন্ধান পর্যায়েই। গভীর সমুদ্রের ১৫ ব্লকের মধ্যে একমাত্র মিয়ানমার লাগোয়া ১২ নম্বর ব্লকে দ্বিমাত্রিক জরিপ করেছে দক্ষিণ কোরিয়ার কোম্পানি পোস্কদায়ো। আর অগভীর সমুদ্রে ১১ ব্লকের মাত্র একটিতে শেষ হয়েছে অস্ট্রেলিয়ার কোম্পানি স্যান্তোসের ত্রিমাত্রিক জরিপ। আর দুটি ব্লকের শিগগিরই অনুসন্ধান কূপ খননের কথা ভারতীয় কোম্পানি ওএনজিসির।
অন্যদিকে তেল গ্যাস উত্তোলনে বহুজাতিক কোম্পানিকে আকর্ষণ করতে বিশেষায়িত জরিপ মাল্টি ক্লেয়ান্ট সার্ভের উদ্যোগও ৫ বছর ধরে থমকে আছে সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের অনুমোদনের অপেক্ষায়।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, মাল্টি ক্লাইন্ট সার্ভে টেন্ডার হয়ে গেছে। কিন্তু এখন এটাকে স্থগিত রাখার জন্য বলা হয়েছে, যার জন্য আমরা এখনো কাজ শুরু করতে পারিনি। এই বিষয়গুলোর জন্য ওপর মহলের সিদ্ধান্ত দরকার।
সম্ভাবনা থাকার পরও সমুদ্রবক্ষে তেল গ্যাস অনুসন্ধানে ধীর গতির কারণেই জ্বালানি সংকট কাটাতে ধীরে ধীরে প্রাধান্য পাচ্ছে আমদানি নির্ভরতা। আর আমদানি করা এলএনজির ব্যয় মেটাতে এক বছরের মধ্যে দ্বিতীয় বার নিতে হলো গ্যাসের দাম বাড়ানোর উদ্যোগ।