আইনি কাঠামোর মধ্যে থেকেই নারী অধিকার নিশ্চিত করতে হবে বলে মন্তব্য করে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, বিশ্বে নারী নেতৃত্বে পথিকৃত হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার নেতৃত্বেই নারীকে সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে সাবলম্বী করতে বৃহৎ কর্মপরিকল্পনা হাতে নিয়েছে সরকার।
আজ শুক্রবার বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে আয়োজিত বাংলাদেশ মহিলা জজ এসোসিয়েশানের বার্ষিক সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
মন্ত্রী বলেন, নারীর প্রতি সম্মান, শ্রদ্ধা, নারীদের আর্থিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় নারী দিবস নারী আন্দোলনের এক অনন্য ইতিহাস। নারী দিবস উদযাপনের পেছনে রয়েছে নারী শ্রমিকদের অধিকার আদায়ের সংগ্রামের ইতিহাস।
মন্ত্রী বলেন, অনেক দেশের তুলনায় বিচারিক কাজে আমাদের দেশে নারীদের সংখ্যা তুলনামূলক বেশি। এ ছাড়া সব ক্ষেত্রেই রয়েছে নারীদের অংশগ্রহণ। আর এই অংশগ্রহণ দিন দিন বাড়ছে। বাংলাদেশ মহিলা জজ অ্যাসোসিয়েশন সদস্যসহ অন্যান্য সবাইকে আমি বলতে চাই- বিচারিক কাজে সাধারণ মানুষ যেন হয়রানির শিকার না হয়। দ্রুততম সময়ের মধ্যেই যেন তারা তাদের সেবা পায় সে দিকে আপনাদের নজর দিতে হবে। একজন বিচারক নিজেকে নারী বা পুরুষ- এই মানদণ্ডের চেয়ে একজন বিচারক হিসেবে ভাবতে হবে। আপনাদের কর্মঘণ্টার পুরো সময় নিজের সর্বোচ্চটা দিয়ে সাধারণ মানুষকে সেবা দেবেন, এটাই আমাদের প্রত্যাশা। সর্বক্ষেত্রে নিজের পরিশ্রম এবং সততা বজায় রাখবেন।
এদিকে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বলেন, নারী অধিকার রক্ষায় রাষ্ট্রের সব বিভাগ নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। বর্তমানে নারী বিচারকের শতকরা হার ২৭ দশমিক ৫ শতাংশ। বিচারবিভাগে নারীর অংশগ্রহন আমেরিকা, ইউরোপ ও ভারতের থেকে বেশি।
প্রধান বিচারপতি আরও বলেন, আমাদের দেশে নারীর উন্নতি সাধিত হয়েছে সব ক্ষেত্রেই। নারী অধিকারসহ অন্যান্য সব বিষয়ে সুপ্রিম কোর্ট নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। সংসার কর্মক্ষেত্রসহ সব কিছুতেই রয়েছে নারীর অংশগ্রহণ এবং অবদান। নারীদের আরও এগিয়ে নিতে নানা সুবিধা দেয়ার পাশাপাশি অনেক উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, কর্মক্ষেত্রে মহিলা জজদের নানা সুযোগ-সুবিধা দিতে কাজ চলমান রয়েছে। জেলা আদালত ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। আপনাদের সুযোগ-সুবিধার বিষয়ে যেমন সরকার কাজ করছে তেমনি আপনারাও সাধারণ মানুষকে বিচারিক কাজে সর্বোচ্চ সহযোগতি করবেন। কোনো মানুষকে যেন হয়রানির শিকার না হতে হয়। বর্তমান সময়ে নির্যাতিত মহিলাদের জন্য সরকারি খরচে আইনি সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে। নারীরা আজ একা নয়, সকলেই এক সঙ্গে মিলে সর্বক্ষেত্রে নারীর অধিকার নিশ্চিত করা হচ্ছে। সেই আজকের নারীরা তাদের অগ্রযাত্রায় সক্রিয় ভূমিকা রাখছেন।
সিনিয়র জেলা জজ সদস্য তানজীনা ইসমাইলের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ মহিলা জজ অ্যাসিয়েশনের মহাসচিব জেসমিন আরো বেগম, বিচারপতি জিনাত আরা, বিচারপাতি ফাতেমা নজিব,অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা প্রমুখ।