Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০৬ বুধবার, আগষ্ট ২০২৫ | ২২ শ্রাবণ ১৪৩২ | ঢাকা, ২৫ °সে

ম্যাজিস্ট্রেট পরিচয়ে ১২ বিয়ে, হাতিয়ে নিয়েছেন লাখ লাখ টাকা

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৫ মার্চ ২০১৯, ১০:৫৪ AM
আপডেট: ০৫ মার্চ ২০১৯, ১০:৫৪ AM

bdmorning Image Preview


মা লোক প্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের (বিপিএটিসি) ট্রেনিং ডিরেক্টর। ভাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) রসায়ন বিভাগ থেকে পাস করে এখন বিপিএটিসি’র ফিজিকাল ইন্সট্রাক্টার। বড়বোন বঙ্গবন্ধু মেডিকেলে গাইনি বিভাগের অধ্যাপক ও দুলাভাই প্রকৌশলী। একমাত্র চাচা সেনাবাহিনীর ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এবং মামা একজন মন্ত্রী।

এই পরিচয় দিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে এক নারীর বিরুদ্ধে। তিনি নিজে ৫ম শ্রেণী পাস হলেও প্রচার করতেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজিতে পাস করে এখন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে কর্মরত।

ইংরেজিতে অনর্গল কথা বলার কাজটিও রপ্ত করেছেন ভালোভাবেই। এসব পরিচয়ে তিনি অগণিত পুরুষকে ফাঁদে ফেলে বিয়ে করে কথিত স্বামী ও তাদের স্বজন ও বন্ধুদের কাছ থেকে চাকরি এবং বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তির প্রলোভন দিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।

৩৬ তম বিসিএস ক্যাডার শাহনুর আক্তারের নামের সঙ্গে মিল রেখে শাহনুর রহমান সিক্ত নামে তিনি প্রতারণা করছিলেন। এরই মধ্যে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই সাবেক শিক্ষার্থীসহ (একজন ব্যবসায়ী ও অপরজন শিক্ষক) অন্তত ১২ জনকে বিয়ের ফাঁদে ফেলার তথ্য পাওয়া গেছে।

সম্প্রতি প্রতারণার শিকার ঐ নারীর কথিত স্বামীর রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানায় করা মামলার পর পুলিশ ২ ফেব্রুয়ারি তাকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠায়। মায়ের সঙ্গে তিনি বিপিএটিসি’র কর্মচারী কোয়ার্টারে থাকতেন।

বিসিএস ক্যাডারদের বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ এখানেই হয়। এই সুযোগে সে প্রথম শ্রেণীর সরকারী চাকুরেদের পদ মর্যাদা, চাল-চলন রপ্ত করে ফেলেন। বাসা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস সংলগ্ন হওয়ায় ঐ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সব কিছুই তার নখদর্পনে চলে আসে।  প্রতারণার জন্য তিনি এগুলোকেই হাতিয়ার হিসবে ব্যবহার করেন।

তিনি ফেসবুকে বিশ্বদ্যিালয়ের ৩-৪ হাজার ফ্রেন্ড গড়ে তোলে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ব্যাচের রি-ইউনিয়নে সে অংশগ্রহণ করতেন। এভাবে তিনি জাহাঙ্গীরনগরের ২২ ব্যাচের সাবেক শিক্ষার্থীকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে বিয়ে করেন।

পরে তার স্বামীর আত্মীয় স্বজনদের চাকরি দেয়ার নাম করে ৭ লাখ টাকা ও ১০ লাখ টাকার স্বর্ণালংকার হাতিয়ে নেয়। এছাড়া একজন আত্মীয়কে ক্যাডেট কলেজে ভর্তির নাম করে হাতিয়ে নিয়েছে মোটা অঙ্কের অর্থ। এছাড়া জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৫ ব্যাচের এক শিক্ষার্থীকেও প্রেমের ফাঁদে ফেলে বিয়ে করে তার সর্বস্ত হাতিয়ে নিয়ে সটকে পড়েন তিনি।

জানা গেছে, উত্তরা থানার করা মামলার পর পুলিশের তদন্তে বেরিয়ে আসছে এই নারীর ভয়ঙ্কর সব প্রতারণার গল্প। শাহনুর রহমান সিক্ত ছাড়াও তিনি সিক্ত খন্দকার, তাহামিনা আক্তার পলি ও তামিমা আক্তার পলি বলে পরিচয় দিতেন।

পুলিশের উত্তরা বিভাগের ডিসি নাবিদ কামাল শৈবাল বলেন, একটি প্রতারণার মামলায় সিক্ত নামের ওই নারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, ঐ নারী ১০-১২ বছর ধরে প্রতারণা করছিল। তার পরিবারের সদস্যরাও প্রতারণায় তাকে সহায়তা করতো। প্রতারণার অপর এক মামলায় সিক্তর দুলাভাই আফতাব উদ্দিনকেও পুলিশ গ্রেফতার করেছে।

Bootstrap Image Preview