নতুন সরকারের শুরুতেই এ যাবতকালের সবচেয়ে বড় উচ্ছেদ প্রকল্প হাতে নিয়েছে বলে জানিয়েছেন নৌপ্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। আর এর অংশ হিসাবে ঢাকা প্রাণ বুড়িগঙ্গা নদীর দুই প্রান্তে গড়ে ওঠা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ বিশেষ অভিযান পরিচালনা করছে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-চলাচল কর্তৃপক্ষ, বিআইডব্লিউটিএ।
বিআইডব্লিউটিএ সূত্র থেকে জানা গিয়েছে, ঢাকার জীবিত একমাত্র জলাশয় বুড়িগঙ্গার সৌন্দর্য বর্ধন ও দখল এড়াতে নতুন পরিকল্পনাও হাতে নিয়েছ সরকার। আরো জানায়, আগামী মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত চলবে এই অভিযান। এতে কাঁচা-পাকাসহ মোট ৬৪টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে। এর মধ্যে ১৪টি পাকা বড় স্থাপনা রয়েছে।
আজ অভিযানের দ্বিতীয় দিনে কামরাঙ্গীরচরের খোলামুড়া ঘাট এলাকায় চালিয়ে বেশ কিছু অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়।
এবিষয়ে বন্দর ও নৌচলাচল বিভাগের পরিচালক শফিকুল হক দ্বিতীয় দিনের অভিযান শেষ জানান, ২দিন আমরা প্রায় ২৮ টি অবৈধ স্থাপনা ভেঙ্গেছি। এছাড়া আমরা ছোট ছোট করে যারা নদী পার ঘষে যারা অবৈধ স্থাপনা গড়ে তুলেছে তাদেরকে উচ্ছেদ করার পাশাপাশি জরিমানা করা হচ্ছে।
তিনি আরো জানান, অভিযানের সকল কার্যক্রম শেষ বুড়িগঙ্গা নদীর পাড় বাঁধার কার্যক্রম শুরু হবে এবং পাড় ঘেষে ২টি স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে যেখানে ইকোপার্ক করা হবে।
এদিকে, কয়েকজন বাড়ির মালিক দাবি করেছেন, তাদের বাড়ি-ঘর বৈধ জায়গায় রয়েছে। বিআইডব্লিউটিএ নোটিশ দেয়া ছাড়াই অবৈধভাবে অভিযান চালাচ্ছে বলেও অভিযোগ তাদের।
অভিযানের বিষয়ে নৌপ্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, নদী বাঁচলে ঢাকা বাঁচবে। আর এখনই যদি নদী রক্ষার বিষয়ে সচেতন না হওয়া যায় তাহলে ঢাকা বাসবাসের অনুপযোগী হয়ে উঠবে। তাই ঢাকার চারপাশের সব নদী ও খাল রক্ষায় এই ক্রাশ প্রোগ্রাম। আর যত বড় প্রভাবশালীই হোক না কেন; কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। আর অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থাও নেয়া হবে।
ঢাকা নদী বন্দরের উপ-পরিচালক মিজানুর রহমান জানান, প্রাথমিকভাবে বুড়িগঙ্গা তীরের ছয় শতাধিক অবৈধ স্থাপনা চিহ্নিত করা হয়েছে। এসব উচ্ছেদের জন্য ১১ দিনের একটি ক্রাশ প্রোগ্রাম হাতে নেয়া হয়েছে। এর অংশ হিসেবে প্রথম দিন কয়েকটি বহুতল ভবন, আধাপাকা ভবন, ঝুপড়িঘর, টং দোকানসহ ১৬৪টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে।
বিআইডব্লিউটিএ’র নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোস্তাফিজুর রহমানের নেতৃত্বে এই উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হয়। উচ্ছেদ অভিযানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিআইডব্লিউটিএ’র পরিচালক (বন্দর) শফিকুল হক, যুগ্ম পরিচালক একেএম আরিফ উদ্দিন, উপ-পরিচালক মিজানুর রহমান, সহকারী পরিচালক রেজাউল করিম, নূর হোসেন স্বপন ও আসাদুজ্জামান মিয়া। পুলিশ, নৌ-পুলিশ, আনসার সদস্য ও শতাধিক শ্রমিক উচ্ছেদ অভিযানে সহায়তা করে।