Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৬ মঙ্গলবার, আগষ্ট ২০২৫ | ১১ ভাদ্র ১৪৩২ | ঢাকা, ২৫ °সে

শর্ত মানলে শিগ্রই চাকসু নির্বাচন

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৪ জানুয়ারী ২০১৯, ০৮:৪৩ PM
আপডেট: ১৪ জানুয়ারী ২০১৯, ০৮:৪৩ PM

bdmorning Image Preview
ছবি: সংগৃহীত


পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচন এখন সময়ের দাবি। ছাত্রদের দাবির মুখে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (চাকসু) নির্বাচন যে কোনো সময় দিতে প্রস্তুত রয়েছে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী। তবে এ জন্য ছাত্রসংগঠনগুলোর কাছ থেকে ‘ঝামেলাহীন পরিস্থিতির’ নিশ্চয়তা চান তিনি।

চাকসুর নির্বাচনের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রসংগঠনগুলো বিভিন্ন সময়ে আন্দোলন করে আসছে। সোমবারও (১৪ জানুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা নির্বাচনের দাবিতে এক মাসের আল্টিমেটাম দিয়েছেন।

ছাত্রসংগঠনের নেতারা বলছেন, শিক্ষার্থীদের শিক্ষার মান, নাগরিক জীবনে সত্যিকারের নেতৃত্ব প্রদান ও অধিকার সম্পর্কে তাদের মতপ্রকাশের জন্য চাকসু নির্বাচন দরকার। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ে সিন্ডিকেট নির্বাচন, ডিন নির্বাচন, শিক্ষক সমিতির নির্বাচন থেকে শুরু করে সব ধরনের নির্বাচন হলেও দীর্ঘ ২৫ বছর ধরে বন্ধ রয়েছে চাকসু নির্বাচন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নানা অজুহাত দেখিয়ে এ নির্বাচন বন্ধ রেখেছে বলে অভিযোগ ছাত্র নেতাদের।

এ বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘গত সাড়ে তিন বছরে এক মুহূর্তের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক কাজ বন্ধ হয়নি। সেশনজটও প্রায় শূন্যের কোটায় নিয়ে এসেছি। প্রথম দায়িত্ব হচ্ছে শিক্ষার্থীদের উপযুক্ত ও বাস্তবধর্মী শিক্ষা দেওয়ার মাধ্যমে মানব সম্পদে পরিণত করা।’

তিনি বলেন, ‘যদি শিক্ষার্থীরা সত্যিকার অর্থে মানব সম্পদে পরিণত হয়, নেতৃত্বে আসতে তাদের আর কঠিন হয় না। চাকসুর নির্বাচনের মাধ্যমে সেই নেতৃত্ব তাদের মধ্যে উঠে আসে। আমিও চাই চাকসুর নির্বাচন হোক। তবে চাকসু নির্বাচন দিতে গিয়ে যেনো কোনো ধরনের ঝামেলা না হয়, সেই নিশ্চয়তা চাই ছাত্রসংগঠনের নেতাদের কাছে।’

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মো. আলমগীর টিপু বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের কথা বলার জায়গাটি হল ছাত্র সংসদ। অথচ এ ছাত্র সংসদের নির্বাচন বন্ধ ২৫ বছর ধরে। দুই যুগ পার হলেও শিক্ষার্থীদের পক্ষে কথা বলার মতো কেউ ছিল না। আমরা চাই অবিলম্বে চাকসু নির্বাচন দেয়া হোক।’

চাকসু নির্বাচন কেন্দ্রিক ঝামেলাহীন পরিস্থিতির নিশ্চয়তা দিয়ে তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের দায়িত্ব চাকসু নির্বাচন দেওয়া। আর ঝামেলাহীন পরিস্থিতির নিশ্চয়তার দায়িত্ব আমাদের। আমরা প্রশাসনকে নিশ্চয়তা দিতে চাই, ছাত্রসংগঠনগুলোর মধ্যে সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতির পরিবেশ বজায় থাকবে।’

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফজলে রাব্বী সুজন বলেন, ‘আমরা আজকে মানববন্ধনের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে এক মাসের আল্টিমেটাম দিয়েছি। প্রশাসন যদি আমাদের লিখিত আকারে ঝামেলাহীন পরিস্থিতির নিশ্চয়তা দিতে বলে তাও আমরা প্রস্তুত আছি।’

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি ধীষন চাকমা বলেন, ‘আমাদের সংগঠনের পক্ষে থেকেও ঝামেলাহীন পরিস্থিতির নিশ্চয়তা দিতে পারব। তবুও ছাত্র সমাজের বহুদিনের দাবি চাকুস নির্বাচন হোক।’

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর সর্বপ্রথম চাকসু নির্বাচন হয় ১৯৭০ সালে। এরপর মাত্র ছয়বার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে প্রথম ভিপি নির্বাচিত হন শহীদ আবদুর রব ও জিএস হন মোহাম্মদ ইব্রাহিম, ১৯৭২ সালের দ্বিতীয় নির্বাচনে ভিপি হন শমসুজ্জামান হীরা ও জিএস হন মাহমুদুর রহমান মান্না।

উল্লেখ্য, ১৯৭৪ সালের তৃতীয় নির্বাচনে ভিপি হন এসএম ফজলুল হক ও জিএস হন গোলাম জিলানী চৌধুরী, ১৯৭৯ সালের চতুর্থ নির্বাচনে ভিপি হন মাজহারুল হক শাহ চৌধুরী ও জিএস হন জমির চৌধুরী, ১৯৮১ সালের পঞ্চম নির্বাচনে ভিপি হন জসিম উদ্দিন সরকার ও জিএস হন আবদুল গাফফার এবং সর্বশেষ ১৯৯০ সালের ফেব্রুয়ারিতে ভিপি নির্বাচিত হন নাজিম উদ্দিন ও জিএস হন আজিম উদ্দিন।

Bootstrap Image Preview