Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০২ বুধবার, জুলাই ২০২৫ | ১৭ আষাঢ় ১৪৩২ | ঢাকা, ২৫ °সে

পানি চাওয়ায় ৫ বছরের মেয়েকে ভয়ংকর কায়দায় মেরেছে তারা!

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৯ ডিসেম্বর ২০১৮, ০৬:৪৮ PM
আপডেট: ২৯ ডিসেম্বর ২০১৮, ০৬:৪৮ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত ছবি


প্রচণ্ড জ্বরে অবসন্ন হয়ে পড়েছিল ৫ বছরের মেয়েটি। তৃষ্ণায় গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গিয়েছিল। কাঁদতে কাঁদতে পানি খেতে চেয়েছিল। কিন্তু পানি দেওয়া তো দূরের কথা, অসুস্থ হয়ে পড়ার অপরাধে মেয়েটিকে শিকল দিয়ে বেঁধে ঠা ঠা রোদে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছিল দীর্ঘক্ষণ। শেষ পর্যন্ত তীব্র যন্ত্রণায় মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছিল মেয়েটি! 

ইরাকের মসুলে ইসলামিক স্টেট (আইএস) এর শিবিরে এই ঘটনা ঘটেছিল ২০১৪ সালে। শিশুটির উপর নির্যাতন চালিয়েছিলেন ২৭ বছর বয়সী এক জার্মান নারী। জেনিফার ডব্লিউ। মসুলে আইএসের নারী শাখার সক্রিয় সদস্য। যে শিশুটির উপর ওই নির্যাতন চালানো হয়েছিল, তাকে যৌন দাসী হিসেবে কিনেছিলেন জেনিফারের স্বামী। মসুল ও অন্যত্র আইএসের শিবিরগুলিতে শিশু ও নারীদের উপর কী অমানুষিক নির্যাতন চালানো হয়, এই ঘটনা তার আরও একটি দৃষ্টান্ত।

জার্মানির শহর মিউনিখের সন্ত্রাসবাদ দমন আদালতে যুদ্ধাপরাধ ও খুনের অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে জেনিফারের বিরুদ্ধে। গত ১৪ ডিসেম্বর। সেই অভিযোগে জানানো হয়েছে, ৫ বছর বয়সী মেয়েটি এতটাই অসুস্থ হয়ে পড়েছিল যে, বিছানায় প্রস্রাব করে ফেলেছিল। কিন্তু তার পরেও তাকে রেহাই দেওয়া হয়নি। জেনিফার তার স্বামীকে দিয়ে মেয়েটির হাতে, পায়ে শিকল পরিয়েছিলেন। তার পর তাকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল মাঠে। সেখানে ঠা ঠা রোদে মেয়েটিকে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়। জেনিফার মেয়েটিকে বাঁচাতে এগিয়ে আসেননি।

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম জানিয়েছে, মামলার নিষ্পত্তি হলে জেনিফারের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হতে পারে বলে। মিউনিখের পুলিশ জানিয়েছে, ২০১৪ সালে জার্মানি ছেড়েছিলেন জেনিফার। তার পর তুরস্ক ও সিরিয়ার মধ্যে দিয়ে ঢুকেছিলেন ইরাকে। পরের মাসেই আইএসের সক্রিয় সদস্য হয়েছিলেন। জেনিফারকে আইএসের স্বঘোষিত 'নীতি পুলিশে' নিয়োগ করা হয়েছিল। আইএসের দখলে থাকা ফাল্লুজা ও মসুল শহরের পার্কগুলির উপর নজরদারির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল জেনিফারকে।

আদালতে দায়ের করা অভিযোগে বলা হয়েছে, 'নারীদের ব্যবহার আর পোশাক কেমন হবে, আইএসের সেই বেঁধে দেওয়া কোড মেনে চলা হচ্ছে কি না, তার উপর নজর রাখার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল জেনিফারকে। পার্কগুলিতে টহল দেওয়ার সময় সঙ্গে কালাশনিকভ রাইফেল, পিস্তল রাখতেন জেনিফার। পরে থাকতেন বিস্ফোরক লাগানো জ্যাকেট।'

শিশু নির্যাতনের ঘটনার কয়েক মাসের মধ্যেই, ২০১৬ সালে আঙ্কারায় গিয়েছিলেন জেনিফার। সেখানকার জার্মান দূতাবাসে গিয়ে তার পরিচয় সংক্রান্ত নথিপত্রে কিছু রদবদলের আর্জি নিয়ে। জার্মান দূতাবাস থেকে বেরিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গেই জেনিফারকে গ্রেপ্তার করে তুরস্কের পুলিশ। পরে অবশ্য তাকে তুলে দেওয়া হয় জার্মানির হাতে। পর্যাপ্ত তথ্যপ্রমাণের অভাবে জেনিফারের বিরুদ্ধে কোনো আইনি ব্যবস্থা সেই সময় নিতে পারেনি জার্মানির পুলিশ।

ফলে মুক্তি পেয়ে যায় জেনিয়ার। লোয়ার স্যাক্সনিতে তার নিজের বাড়িতে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছিল তাকে। এরপর জেনিফার ওই সময় খুব ব্যস্ত হয়ে উঠেছিলেন আইএসের দখলে থাকা কোনো এলাকায় ফিরে যেতে। সেই চেষ্টায় এ বছরের জুনে সিরিয়ায় ঢোকার সময় জার্মানির পুলিশ গ্রেপ্তার করে জেনিফারকে।

Bootstrap Image Preview