Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০৫ মঙ্গলবার, আগষ্ট ২০২৫ | ২০ শ্রাবণ ১৪৩২ | ঢাকা, ২৫ °সে

বড়াইগ্রামে জাহাঙ্গীর জেনারেল হাসপাতাল সিলগালা, মালিক পলাতক

অমর ডি কস্তা, নাটোর প্রতিনিধিঃ
প্রকাশিত: ২৭ নভেম্বর ২০১৮, ০৬:৪৪ PM
আপডেট: ২৭ নভেম্বর ২০১৮, ০৬:৪৪ PM

bdmorning Image Preview


নাটোর বড়াইগ্রামের জোনাইল বাজারে অবস্থিত জাহাঙ্গীর জেনারেল হাসপাতাল সিলগালা করে দিয়েছে ভ্রাম্যমান আদালত।

মঙ্গলবার (২৭ নভেম্বর) দুপুর ২টার দিকে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আনোয়ার পারভেজ সরেজমিনে গিয়ে দেখতে পান হাসপাতালের কোন বৈধ সার্টিফিকেট নাই, হাসপাতালের মালিক জাহাঙ্গীর হোসেন পল্লী চিকিৎসক হয়ে আল্ট্রাসনোগ্রাফি, এনেসথেসিয়া ও ছোট-বড় সকল অপারেশন করেন।

নার্সিং পাশ না করেই ওটি ইনচার্জ ও সহকারী নার্স হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন সতের ও আঠারো বছরের দুই মেয়ে । কোন মেডিকেল অফিসার বা আবাসিক মেডিকেল অফিসার নাই। সব মিলিয়ে রোগীদের সাথে দীর্ঘদিন প্রতারণা করে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছিলো জাহাঙ্গীর আলম।

সর্বশেষ সোমবার (২৬ নভেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে জাহাঙ্গীর নিজেই ডেলিভারী অপারেশন করেন, উপজেলার জোনাইলের কুমারখালী গ্রামের রাশিদুল ইসলামের স্ত্রী গৃহবধূ পারভীন আক্তার (২৪) এর। কিন্তু ভুল চিকিৎসায় মৃত হয় সে গর্ভবতী মায়ের। পেটের শিশুটিকে জীবন্ত বের করতে পারলেও শিশুটির মাথার ডান পাশে ছুরির আঘাতে কেটে যায়। পরবর্তীতে দুই লক্ষ টাকার বিনিময়ে ধামাচাপা দেওয়া হয় ঘটনাটি।

কিন্তু স্থানীয় সচেতন মহল এ বিষয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিষয়টি ইউএনও'কে জানালে ভ্রাম্যমান আদালত এটি  পরিচালনা করেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাসপাতালের এক কর্মচারী জানান, এই হাসপাতালে আখের আলী মন্ডল, ডলি রানী  ও তানিকুর রহমান নামে তিনজন এমবিবিএস ডাক্তার মাঝে মধ্যে অপারেশন করতে আসেন। যে সকল রোগী ও তার পরিবার শিক্ষিত ও সচেতন তাদেরকে পাশ করা ডাক্তার দিয়ে অপারেশন করান তিনি। আর যারা গ্রামের মূর্খ বা অল্প শিক্ষিত তাদের ওই সকল ডাক্তারের কথা বললেও রোগীকে ওটিতে অজ্ঞান করে নিজেই অপারেশন করেন জাহাঙ্গীর। আর এভাবে অনেক রোগীই তার ভুল চিকিৎসায় মারা গেছেন।

তবে এই মৃতের ব্যাপারে জানা যায় চাঞ্চল্যকর তথ্য। ভুল চিকিৎসায় মারা গেলে সমস্যা এড়াতে জাহাঙ্গীর মৃত রোগীকেই রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন। সোমবারেও মৃত পারভীনকে সে মৃত অবস্থায় রাজশাহীতে রেফার করেন। তার ভুল চিকিৎসায় শত শত রোগী এখনও যন্ত্রণা পোহাচ্ছে। ওই সব রোগীরা উন্নত চিকিৎসা নিতে গুনতে হয়েছে মোটা অংকের টাকা। 

জাহাঙ্গীর হোসেনের সাথে মুঠো ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, অপারেশন করেছেন ডা. তানিকুর রহমান। কিন্তু তানিকুর রহমান জানান, ওই অপারেশন তিনি করেননি। ভ্রাম্যমান আদালতের বিচারক ইউএনও আনোয়ার পারভেজও ওই রোগীর নথি-পত্র অনুসন্ধান চালিয়ে তানিকুর রহমানের অপারেশন করার সত্যতা খুঁজে পাননি। ভ্রাম্যমান আদালত হাসপাতাল সিলগালা করার পূর্বে সিসি ক্যামেরার হার্ড ডিস্ক, হাসপাতালের ভুয়া কাগজ পত্রাদি জব্দ করে। 
 

Bootstrap Image Preview