Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৩ মঙ্গলবার, মে ২০২৫ | ৩০ বৈশাখ ১৪৩২ | ঢাকা, ২৫ °সে

মন্দিরে নারীদের প্রবেশ বিতর্কে রাজনৈতিক ফায়দা নিতে চায় বিজেপি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৯ অক্টোবর ২০১৮, ০৭:২৯ PM
আপডেট: ১৯ অক্টোবর ২০১৮, ০৭:২৯ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত ছবি


কেরালায় সবরিমালা মন্দিরে নারীদের প্রবেশ ঘিরে তৈরি হয়েছে জোর বিতর্ক। আদালতের রায়ের পরও মন্দিরে প্রবেশ করতে গিয়ে বিক্ষোভকারীদের বাধার মুখে পড়ছেন নারীরা। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই বিতর্ককে কাজে লাগাতে পারলে মাঠের রাজনীতিতে সুবিধা পাবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন বিজেপি।

কেরালার পাহাড়ের ওপর অবস্থিত শতাব্দী প্রাচীন মন্দিরটিতে ১০ থেকে ৫০ বছর বয়স পর্যন্ত নারীদের প্রবেশ নিষিদ্ধ ছিল শত বছর ধরে। মূলত ঋতু চলাকালীন নারীদের মন্দিরে প্রবেশের অনুমতি ছিল না। হিন্দু ধর্মানুযায়ী এই সময়ে নারীদেরকে অপরিচ্ছন্ন বিবেচনা করা হয়। ২৮ সেপ্টেম্বর সুপ্রিম কোর্ট নারীদের প্রবেশাধিকারের এই বয়সসীমা ‍তুলে নেয়। তবে শুক্রবারও (১৯ অক্টোবরও) সেখানে প্রবেশ করতে পারেননি নারীরা। বুধবার মন্দির দর্শনের মৌসুম শুরু হলে তৃতীয় দিনে মতো কট্টোরপন্থীদের বাধার মুখে পড়েন নারীরা।

বিজেপির এক সিনিয়র নেতা শুক্রবার হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, আইনশৃঙ্খলাবাহিনী জোর করে নারীদের মন্দিরে প্রবেশ করাতে চাইলে বিক্ষোভকারীরা আইন হাতে তুলে নিতে পারে। এর আগে বিজেপি মতাদর্শিক সংগঠন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (আরএসএস) প্রধান মোহন ভগন্ত বলেছেন, নারীদের প্রবেশাধিকার দিয়ে রায় দেওয়ার ক্ষেত্রে আদালত পূণ্যার্থীদের অনুভূতি বিবেচনায় নেয়নি।

শুক্রবার শত শত কট্টরপন্থী হিন্দু নারীদের মন্দিরে প্রবেশে বাধা দেয়। সুপ্রিম কোর্টের রায়কে অমর্যাদাকর আখ্যা দিয়ে বিক্ষোভ দেখায় তারা। ভারতের সম্প্রচারমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, ৩০০ পুলিশের সহায়তা নিয়ে এদিন দুই নারী মন্দিরটিতে প্রবেশ করতে চেয়েও ব্যর্থ হয়েছেন। মোদির বিজেপির রাজ্য শাখার সদস্যরাও নারীদের প্রবেশ করতে বাধা দেওয়া বিক্ষোভকারীদের জোরালো সমর্থন দিচ্ছে। বিজেপির যুব শাখার সদস্যসহ হিন্দু কট্টরপন্থীরা প্রবেশ করতে চাওয়া নারী, সাংবাদিক ও পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায়।

বিজেপির রাজ্য শাখার সাধারণ সম্পাদক কে সুরেন্দ্রান বলেন, ‘সরকার যদি এই এজেন্ডা সবরিমালা মন্দিরে প্রয়োগ করতে চায় তাহলে আমরা তা প্রতিরোধ করবো। প্রযোজন হলে আইন হাতে তুলে নেব।’ তিনি আরও বলেন, ‘সবরিমালা কারও প্রভাব বিস্তারের ক্ষেত্র নয়’।

সুরেন্দ্রান রাজ্যের ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টিকে অভিযুক্ত করে বলেন, তারা সুপ্রিম কোর্টের আদেশ বাস্তবায়ন করতে চায়। মন্দিরে প্রবেশ করতে চাওয়া নারীদের পুলিশি নিরাপত্তা দিয়ে দলটি ভক্তদের উস্কানি দিচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। দলটি কী করতে চায় তা অবশ্য খোলাসা করেননি তিনি।

সুপ্রিম কোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে অনশনে বসেছেন মন্দিরের ৩৬ জন পুরোহিত। টেলিভিশনে প্রচারিত ফুটেজে দেখা গেছে, ভগবান আয়াপ্পানের মন্দিরের সামনে শত শত বিক্ষোভকারীকে শান্ত করার চেষ্টা করছে পুলিশ। এসব বিক্ষোভকারী মনে করেন সুপ্রিম কোর্টের রায় ধর্মীয় ঐতিহ্যকে চ্যালেঞ্জ করেছে আর ধর্মীয় বিষয়ে আদালতের হস্তক্ষেপ। সুপ্রিম কোর্ট তার রায়ে এই ঐতিহ্যকে পুরুষতান্ত্রিক বলে আখ্যা দিয়েছে।

সাড়ে তিন কোটিরও বেশি মানুষের বাস কেরালায়। সেখানে বিপুল সংখ্যক মুসলিম ও খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীও থাকলে সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষই হিন্দু ধর্মাবলম্বী। সবরিমালা বিতর্ক হিন্দুদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হেনেছে বলে মনে করেন বিজেপির অনেক নেতা। রাজ্যটির কোনও কোনও বাসিন্দা মনে করেন মন্দিরের ভক্তদের অনুভূতিকে শ্রদ্ধা দেখানো উচিত।

Bootstrap Image Preview