১৯৯৯ সালে শহীদুল ইসলাম খোকন পরিচালিত ‘ম্যাডাম ফুলি’ নামের চলচ্চিত্রে অভিনয় করে জাতীয় পুরস্কার জিতে নেন সিমলা। সেই থেকে ম্যাডাম ফুলি নামেই চলচ্চিত্রে পরিচিতি তার। এক সময়ের আলোচিত এ নায়িকা আলোচনায় নেই বহু দিন ধরেই। ক্যারিয়ারে ভাটা চলছে প্রায় দশ বছর হলো। এর মধ্যে গতকাল ঢাকা থেকে দুবাইগামী বাংলাদেশ বিমানের ‘ময়ূরপঙ্খী’ উড়োজাহাজ ছিনতাইয়চেষ্টার ঘটনায় তিনি আবার আলোচনায় আসেন।
ঐ বিমানটি ছিনতাই চেষ্টাকারীর নাম মো. পলাশ আহমেদ (২৪)। শোনা যাচ্ছে, পলাশ চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় নায়িকা সিমলার স্বামী।
পলাশের পরিবারের পক্ষ থেকে জানা যায়, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত নায়িকা সিমলা তার দ্বিতীয় স্ত্রী।
এ বিষয়ে সিমলার সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে গতকাল থেকেই তার ফোন বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গতকাল বিমান ছিনতাইচেষ্টার ঘটনার পর থেকে সিমলার সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না। এমনকি সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকেও দেখা মিলছে না তার। পরিচিতজনরাও তাকে খুঁজছেন বলে জানা গেছে।
পলাশের বাবা পিয়ার জাহান বলেন, ১৯৯০ সালে কাজের উদ্দেশ্যে তিনি ইরাক চলে যান। সেখানে চার বছর থাকার পর দেশে ফিরে আসেন। পরে তিনি আবার সৌদি আরব চলে যান। ২০১২ সালে তিনি দেশে ফেরেন।
তিনি বলেন, এর মধ্যে ছেলে পলাশ মাহমুদ তাহেরপুর ইসলামিয়া আলিম মাদরাসা থেকে ২০১২ সালে দাখিল পরীক্ষা দিয়ে পাস করে। দাখিল পাস করে সে সোনারগাঁ ডিগ্রি কলেজে ভর্তি হয়। সেখানে পড়া অবস্থায় সে ঢাকায় চলে যায়। তারপর থেকে তার আচরণে পরিবর্তন দেখা দেয়। শুনেছি পলাশ নাকি ঢাকায় চলচ্চিত্রে কাজ করার চেষ্টা করছিল। তখন বাড়ির সঙ্গে তার যোগাযোগ ছিল না। মাঝে মাঝে বাড়িতে এলেও এলাকার মানুষের সঙ্গে মিশত না, কথা বলত না।
পিয়ার জাহান বলেন, ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারির দিকে চিত্রনায়িকা সিমলাকে নিয়ে রাতের বেলা বাড়িতে আসে পলাশ। মেয়েটিকে চিত্রনায়িকা ও তার প্রেমিকা বলে আমাদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয়। দুই মাস পর আবার সিমলাকে বাড়িতে নিয়ে এসে স্ত্রী হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেয়। বিয়ের কথা সিমলাও আমাদের কাছে স্বীকার করে। ওই রাতেই তারা আবার ঢাকায় চলে যায়।
তিনি বলেন, আমরা সিমলাকে বোঝানোর চেষ্টা করেছি, তাকে বলেছি আমার ছেলেকে যেন ভালো পথে ফিরিয়ে আনে। ছোটবেলা থেকেই ছেলেটি অবাধ্য ছিল।
সর্বশেষ ২০-২৫ দিন আগে পলাশ বাড়িতে আসে। বাড়িতে আসার পর তার আচরণে বিরাট পরিবর্তন দেখা দেয়। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়া শুরু করে, মসজিদে গিয়ে আজানও দিয়েছে। সর্বশেষ শুক্রবার বাড়ি থেকে যাওয়ার আগে বলেছে সে কাজের সন্ধানে দুবাই যাবে।
প্রসঙ্গত, রবিবার বিকেলে ঢাকা থেকে ছেড়ে যাওয়া দুবাইগামী বিজি-১৪৭ ফ্লাইটটি এক ‘অস্ত্রধারী’ যুবক ছিনতাইয়ের চেষ্টা করে। পরে বিকেল ৫টা ৪০ মিনিটে উড়োজাহাজটি চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে জরুরি অবতরণ করে। বিমান ছিনতাই চেষ্টাকারী ওই অস্ত্রধারীকে ধরতে কমান্ডো অভিযান পরিচালিত হয়। এরপর ছিনতাইকারীর নিহত হওয়ার মধ্য দিয়ে রুদ্ধশ্বাস এই অভিযান শেষ হয়।