Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৩ মঙ্গলবার, মে ২০২৫ | ৩০ বৈশাখ ১৪৩২ | ঢাকা, ২৫ °সে

মানববন্ধনে নেই কোন জনমানব, ব্যানার হাতে দাড়িয়ে মা

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ৩১ জানুয়ারী ২০১৯, ১০:৩১ PM
আপডেট: ৩১ জানুয়ারী ২০১৯, ১০:৩৩ PM

bdmorning Image Preview


ব্যানারটির একপাশ ধরে রেখেছেন ভুক্তভোগী শিশুর মা রাজিয়া সুলতানা। আরেক পাশে তার বড় বোন। দু’জনের কোলেই দুটি শিশু। তারাও আয়েশার বোন। এছাড়া নেই কোন জনপ্রাণী। মানববন্ধনে এই চারজনের দাবি- 'আয়েশা হত্যার বিচার চাই, ধর্ষক নাহিদের ফাঁসি চাই'।

সোমবার রাজধানীর প্রেসক্লাবের সামনে শিশু সন্তানের হত্যার বিচারের দাবিতে শিশু সন্তানদের নিয়ে দাঁড়ান মা রাজিয়া। আহাজারি করে বলেন, কে আছো আমার পাশে। দেখ আমার মা (ব্যানারের শিশু আয়েশার ছবি দেখিয়ে) সবার দিকে তাকিয়ে হাসছে। কোথায় আমার সরকার। আমারে সাহায্য করতে বলো। আমি আমার মায়ের ধর্ষণকারীর বিচার চাই, ফাঁসি চাই। আসামির হয়ে সবাই আমারে হুমকি দেয়, টাকা নিয়া পুলিশও আসামির পক্ষে কথা কয়। আমার কেউ নাই। আমি কী করুম, কার কাছে বিচার চামু।

ওই দিন দুপুর থেকে বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত তিনি প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান নিয়ে ধর্ষকের বিচার দাবি করেন। পুরোটা সময় তিনি চিরতরে হারিয়ে যাওয়া সন্তান আয়েশার স্মৃতিচারণ করে বিলাপ করেন। কেউ কেউ এসে তার আর্তনাদ থামানো চেষ্টা করেন। কিন্তু কোনো কাজ হয় না। অবশেষে পুলিশ এসে অনেক বুঝিয়ে তাদের রিকশায় তুলে দিয়ে গেণ্ডারিয়ায় বাড়িতে পাঠায়।

গত ৫ জানুয়ারি সন্ধ্যায় রাজধানীর গেন্ডারিয়ার দীননাথ সেন রোডে বাড়ির পাশের চারতলা একটি ভবনের সামনে আয়েশার রক্তাক্ত দেহ পড়ে থাকতে দেখেন প্রতিবেশীরা। মা-বাবা ও তিন বোনের সঙ্গে এক বস্তিতে থাকত শিশু আয়েশা। প্রতি সকালে আয়েশার বাবা-মা কাজে যান। আর গেন্ডারিয়ার সাধনা ঔষধালয়ের সামনে গলিতে খেলে বেড়াতো শিশুটি। ঘটনার দিন বিকেলে খেলতে বের হয় আয়েশা। সন্ধ্যার দিকে তার রক্তাক্ত নিথর দেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়।

আয়েশার পরিবার ও এলাকাবাসীর অভিযোগ, মো. নাহিদ (৪৫) নামের এক ব্যক্তি শিশুটিকে ধর্ষণের পর চারতলা ভবনের তিনতলা থেকে নিচে ফেলে হত্যা করে।

আয়েশার মামা মো. আলী দাবি করেন, আয়েশার ধর্ষক এবং হত্যাকারী নাহিদ ৫৩/১ দীননাথ সেন রোডের ওই চারতলা বাড়ির মালিক। তিনি ভবনের তিনতলায় থাকেন। আয়েশাকে খিচুড়ি খাওয়ানোর প্রলোভন দেখিয়ে নিজের ফ্ল্যাট নিয়ে যান নাহিদ। সেখানেই তাকে ধর্ষণ করা হয়। সন্ধ্যার দিকে ফ্ল্যাটের খোলা বারান্দা থেকে আয়েশাকে নিচে ফেলে দেন নাহিদ। এ সময় আয়েশার চিৎকার আশপাশের লোকজনও শুনতে পায় বলে দাবি করেন তিনি।

তিনি বলেন, এলাকার লোকজন এসে আয়েশার রক্তাক্ত লাশ দেখতে পেয়ে নাহিদকে আটক করেন। আয়েশার নাক-মুখ দিয়ে রক্ত ঝরছিল।

ঘটনর পরদিন (৬ জানুয়ারি) শিশুটির বাবা ইদ্রিস আলী বাদী হয়ে গেন্ডারিয়া থানায় একটি মামলা করেন। এরপর নাহিদকে আটক করে আদালতে হাজির করা হয়। নাহিদ স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিতে সম্মত হওয়ায় তা রেকর্ড করার আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গেণ্ডারিয়া থানার এসআই হারুন অর রশিদ। কিন্তু পরে নাহিদ জবানবন্দী দিতে অস্বীকৃতি জানায়। এরপর ঢাকা মহানগর হাকিম নিবারা খায়ের জেসি তাকে কারাগারে পাঠানো আদেশ দেন।

ওয়ারি জোনের ডিসি মোহাম্মদ ফরির উদ্দিন জানান, অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারের সময় পালাতে গিয়ে আহত গুরুতর হওয়ায় সে এখন হাসপাতালে। দ্রুতই মামলার চার্জশিট দেয়া হবে।

 

Bootstrap Image Preview