ঠাকুরগাঁওয়ে তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী সুমনা হক হত্যাকাণ্ডের বিচার চেয়ে প্ল্যাকার্ড হাতে রাস্তায় নেমেছে বিভিন্ন স্কুলের হাজারো শিক্ষার্থী।
কি দোষ ছিল সুমনার, আর কত নারী এভাবে নির্যাতিত হয়ে মৃত্যুকে আলিঙ্গন করবে? তনু, নুসরাতের পর এবার সুমনা। এরপর আমি নইতো? কোথায় আজ আইন, কোথায় আজ প্রশাসন? হত্যাকারীর বিচার চাই। আমার মায়ের কান্না বৃথা যেতে দেব না।’
এমন লেখা সম্বলিত প্ল্যাকার্ড হাতে রাস্তায় নেমেছে ঠাকুরগাঁওয়ের বিভিন্ন স্কুলের হাজারো শিক্ষার্থী। সুমনা হত্যার বিচার চাই, বিচার চাই স্লোগানে উত্তাল ঠাকুরগাঁও।
শনিবার (২১ ডিসেম্বর) সকালে ঠাকুরগাঁও বড় মাঠ প্রাঙ্গণ থেকে শিক্ষার্থীরা একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিলটি শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে শহরের চৌরাস্তা মোড়ে গিয়ে অবস্থান নেয়। পরে সেখানে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয় এবং রাস্তার মাঝে দাঁড়িয়ে শিক্ষার্থীরা স্লোগান দিতে থাকে। মানববন্ধনে বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও সমাজসেবা কর্মীরা বক্তব্য রাখেন।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, আমরা সুমনা হকের হত্যাকারী রিয়াজ আহম্মেদ কাননের (১৩) দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি। পাশাপাশি এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তেরও দাবি জানাচ্ছি। যাতে এ নির্মম হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত কেউ ছাড় না পায়।
ঠাকুরগাঁও সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী সুমনা হক শহরের গোয়ালপাড়া এলাকার জুয়েলের মেয়ে। নিখোঁজের চার দিন পর বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) রাত ১১টায় শহরের গোয়ালপাড়া এলাকায় ইয়াসিনের বাসার নির্মাণাধীন একটি ঘরের মেঝে খুঁড়ে সুমনার গলিত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
এ ঘটনায় বাসার মালিক ইয়াসিন আলীর ছেলে ঠাকুরগাঁও সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণির ছাত্র রিয়াজ আহমেদ কাননকে আটক করা হয়।
ঠাকুরগাঁও সদর থানা পুলিশের ওসি আশিকুর রহমান জানান, সুমনা হক গত ১৬ ডিসেম্বর নিজ এলাকা থেকে নিখোঁজ হয়। এ ঘটনায় তার বাবা থানায় একটি জিডি করেন। মেয়ের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পাশের বাসায় খেলতে গিয়ে নিখোঁজ হয় সুমনা। এরপর থেকে প্রতিবেশী ইয়াসিন হাবীব কানন ও তার ছেলে রিয়াজের ওপর নজরদারি শুরু হয়।
এরপর বৃহস্পতিবার রাতে রিয়াজকে আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার বিষয়টি সে স্বীকার করে। তার দেয়া তথ্যমতে তার বসতঘরের মাটি খুঁড়ে সুমনার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।