ইয়াবা ঝড়ে লণ্ডভণ্ড এই দেশের সামাজিক অবস্থান। মহাপ্রলয় বয়ে যাচ্ছে দেশের যুব সমাজ, তরুণ তরুণী ও উদয়মান প্রজন্মের উপর দিয়ে সর্বনাশী ইয়াবা আগ্রাসনে! রাষ্ট্র সর্বোচ্চ শক্তি নিয়োগ করেও ইয়াবা প্রলয় থেকে দেশকে রক্ষা করতে হিমশিম খাচ্ছে। আন্তরিক প্রচেষ্টায় ইয়াবা দুর্যোগ থেকে উত্তরণের সোনালি সম্ভবনা হয়তো আসন্ন। এটা আশার কথা, বাস্তবতা সময়ের বক্ষে নিহিত ।
ইয়াবা ঝড় শেষ হতে না হতেই ভায়াগ্রা নামক মহাপ্লাবণে দেশকে ডুবিয়ে দিতে দেশি বিদেশি সংঘবদ্ধ চক্র মরিয়া! রুখে দিতে হবে এই জঘন্য ষড়যন্ত্রকারীদের। ডুবতে দেওয়া যাবে না লক্ষ লক্ষ প্রাণের দামে কেনা লাল সবুজের দেশটাকে। মুখোশ উন্মোচন করতে হবে তাদের যারা ভায়াগ্রাকে ইয়াবা বানাতে চায়।
#পক্ষপাতদুষ্ট সায়েন্স ল্যাব
আস্থাহীনতার প্রতিষ্ঠান হিসেবে ইতিমধ্যেই সায়েন্স ল্যাব ব্যপক পরিচিতি লাভ করেছে!ভেজাল কে ভেজাল প্রমাণ না করে এরা অর্থের নেশায় বুঁদ হয়ে থাকে!কালো অর্থের হাতছানিতে ভেজাল হয়ে যায় বিশুদ্ধ! দেশের বিশ্বস্ত সব প্রতিষ্ঠান ভেজাল খুঁজে পেলেও এরা ভেজাল খুঁজে পায় না অভিযুক্ত অনেক খাদ্য পণ্যে! মিডিয়ার কল্যানে সাম্প্রতিক সময়ে নিয়মিত শুনতে পাই! তাই সায়েন্স ল্যাবকে সবার আগে ভেজালমুক্ত করা অতি জরুরী ।হয়তো ভেজাল কারবারী দু চারজন কর্মকর্তা কর্মচারী!এদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় এনে সায়েন্স ল্যাবকে ভেজালমুক্ত করতে হবে ।প্রসঙ্গ বেনাপোল কাস্টমস হাউজে আটককৃত ভায়াগ্রাকে এরা আমদানিকারকের শিখিয়ে দেওয়া নামে রিপোর্ট প্রদান করে! অথচ দেশের বিশ্বস্ত সব প্রতিষ্ঠান যে পণ্যকে ভায়াগ্রা পাউডার বলে নিশ্চিত করেছেন। সায়েন্স ল্যাবের রিপোর্ট কোন মহাকাশে করা ? নাকি আর্থিক মেশিনে কল্পনা প্রসূত বিক্রি হয়ে যাওয়া বিকৃতি রিপোর্ট!
#মানুষেরখাদ্য ও স্বাস্থ্য নিরাপত্তা কোথায়..?
আজকের লেখাটাতে অবশ্য সায়েন্স ল্যাব প্রসঙ্গ টানার আমার ইচ্ছে ছিলো না। কিন্তু দুর্ভাগ্য টানতে হয়েছে! ওরা কেন হবে কালোবাজারী দেশবিরোধী চোরাকারবারীদের দোসর? তাহলে আমরা কোথায় যাবো? এদেশের মানুষের খাদ্য ও স্বাস্থ্য নিরাপত্তা কোথায়?
#সংখ্যা_তত্ত্বে_ভয়াবহতা
সবচেয়ে বেশি প্রচলিত ভায়াগ্রা ৫০ মিলিগ্রাম ট্যাবলেট ।সঙ্গত কারণেই ৫০ মিলিগ্রামের ভায়াগ্রা ট্যাবলেট দিয়ে হিসাব দাড় করাবো। ২.৭ টন ভায়াগ্রা পাউডার! =২৭০০কেজি ২৭০০×১০০০=২৭০০০০০ গ্রাম! ১গ্রাম ভায়াগ্রা (সিলডিনাপিল) পাউডারে ৫০ মিলিগ্রামের যথাযথ মানের ট্যাবলেট হয় ২০পিস।অবশ্য এই পরিমাণ টা আরো বেশিও হতে পারে ! সুতারাং ২৭০০০০০ গ্রাম ভায়াগ্রা(সিলডিনাপিল) পাউডারে ট্যাবলেট সংখ্যা হবে ,২৭০০০০০×২০=৫৪০০০০০০ পিস !আন্তর্জাতিক মানের ভায়াগ্রা ট্যাবলেট! অথবা সমপরিমাণ ভায়াগ্রা পাউডার সাথে নিষিদ্ধ কিছু রাসায়নিক যোগ করে বিভিন্ন প্রকার অনুমোদনহীন এনার্জি ড্রিঙ্ক কিংবা তথাকথিত হারবাল মেডিসিন তৈরি করলে সংখ্যা টা ডাবল হতে বাধ্য! যাতে সৃষ্টি হবে ইয়াবার চেয়েও বিধ্বংসী মাদক!
#আর্থিক_ক্ষতি!
আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি পিস ভায়াগ্রার মূল্য কমপক্ষে ৫ মার্কিন ডলার যা বাংলাদেশী মুদ্রায় প্রায় ৪২০ টাকা ৫.৪কোটি পিস ভায়াগ্রার বাজার মূল্য ২২.৫ হাজার কোটি টাকা! তবে আরো বেশিওহতে পারে । বেনাপোল কাস্টমসে আটকে যাওয়া ২.৭টন ভায়াগ্রা পাউডার দিয়ে দেশি বিদেশি সংঘবদ্ধ ড্রাগ সন্ত্রাসীদের চক্র বাংলাদেশের জনগন থেকে উপরোক্ত অর্থ হাতিয়ে নিতে পারতো! আর্থিক ক্ষতির পর হিসেব করলাম স্বাস্থ্য ঝুঁকি ও স্বাস্থের আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ! স্তম্ভিত হয়ে গেলাম! স্বাস্থ্যের ক্ষতির পরিমাণ ক্যালকুলেটরে নিরুপণ করা সম্ভব হয়নি! অথাৎ ডিজিট লিমিট শেষ!
#কৃতজ্ঞতা_বেনাপোল_কাস্টমস_হাউজের_প্রতি
এই বিশাল ভায়াগ্রা চালান আটক না করলে সংশ্লিষ্ট আমদানি চোরাকারবারী চক্র আরো ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতো!এদেশ ভায়াগ্রার প্রলয়ঙ্করী প্লাবনে প্লাবিত হয়ে ধ্বংসের শেষ ঠিকানায় পৌঁছতো।অপূরনীয় ক্ষতির হাত থেকে এদেশ ও দেশের মানুষদের রক্ষা করেছেন বেনাপোল কাস্টমস।
অশেষ কৃতজ্ঞতা বেনাপোল কাস্টমস কমিশনার বেলাল হোসেন চৌধুরীর ও তাঁর নেতৃত্বে গড়ে উঠা সৎ আদর্শবান দেশ প্রেমিক টিম বেনাপোলের প্রতি ।ভালো থাকুক এদেশের রক্ষা কবচখ্যাত বেলাল হোসেন চৌধুরীদের মতো মেধাবী সৎ সাহসী আদর্শবান কর্মকর্তাগণ।এদেশের ভালোর স্বার্থে সমস্ত বাংলাদেশ থাকুক তাঁদের পাশে।
লেখক: মোঃ রহিম উল্যাহ, বাংলা ব্লগার