নদী রক্ষায় অবদানের জন্য “বঙ্গবন্ধু নদী পদক’’ প্রদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। নদীকে পরিচ্ছন্ন রাখা, নদী দখলরোধ, শিল্প কারখানা কর্তৃক সৃষ্ট দূষণরোধ, নদীর তীরে ও অভ্যন্তরে অবৈধ কাঠামো নির্মাণসহ নদী ভরাটরোধ, নদীর স্বাভাবিক গতি প্রবাহ রক্ষা কাজে সহায়তাদান, নদীকে নৌচলাচলে উপযোগী করে নদীর বহুমাত্রিক ব্যবহার নিশ্চিত করা এবং নদীকে দূষণ-দখল-ভরাটমুক্ত করে স্বাভাবিক রূপে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের জন্য আগ্রহী এবং এসব কাজে নিয়োজিত প্রতিষ্ঠান/ব্যক্তিকে পদক প্রদানের মাধ্যমে উৎসাহিত করার জন্য প্রদান করা হবে।
নৌপরিবহন মন্ত্রনালয় “বঙ্গবন্ধু নদী পদক নীতিমালা ২০১৯’’ সংক্রান্ত একটি খসড়া নীতিমালা প্রণয়ন করেছে।
নদী রক্ষা বিষয়ক যে কোন ক্ষেত্রে দৃশ্যমান অবদানের জন্য যে কোন ব্যক্তি/সংস্থা/ প্রতিষ্ঠানকে “বঙ্গবন্ধু নদী পদক” প্রদান করা হবে। উক্ত কাজে বিশেষ অবদানের জন্য কোন সরকারি কর্মচারী বা প্রতিষ্ঠানকে এ পদক প্রদানে বাধা থাকবেনা।
“বঙ্গবন্ধু নদী পদক” জেলা পর্যায়ে একটি এবং জাতীয় পর্যায়ে তিনটি প্রদান করা হবে। জেলা পর্যায়ে ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠান, সরকারি, বেসরকারি ও স্বায়ত্বশাসিত সংস্থাকে বিশেষ অবদানের জন্য ১৮ (আঠারো) ক্যারেট মানের ১৫ গ্রাম ওজনের একটি স্বর্ণপদক, নগদ ৩০,০০০/-(ত্রিশ হাজার) টাকা ও সার্টিফিকেট প্রদান করা হবে। জাতীয় পর্যায়ে ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠান, সরকারি, বেসরকারি ও স্বায়ত্বশাসিত সংস্থাকে বিশেষ অবদানের জন্য ১৮ (আঠারো) ক্যারেট মানের ২৫ গ্রাম ওজনের স্বর্ণপদক, নগদ ৫০,০০০/-(পঞ্চাশ হাজার) টাকা ও সার্টিফিকেট প্রদান করা হবে।
পদক প্রদান সংক্রান্ত নীতিমালা অনুসারে উপজেলা, জেলা, বিভাগীয় এবং জাতীয়/কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন করা হয়েছে। প্রতি বছর সেপ্টেম্বর মাসে ‘বিশ্ব নৌদিবস’-এ অথবা প্রধানমন্ত্রীর সুবিধাজনক সময়ে এ পদক প্রদান করা যেতে পারে। নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় পুরস্কারের সংখ্যা ও মূল্যমান বাস্তবতার নিরিখে পরিবর্তন করতে পারবে।
প্রতিবছর আন্তর্জাতিক নৌ-সংস্থা (আইএমও) সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহে বিশ্বব্যাপী সামুদ্রিক পরিবেশ, নৌযানের নিরাপত্তা এবং চলাচলের পথ সুগম করার লক্ষ্যে ‘বিশ্ব নৌ দিবস’ উদযাপন করে থাকে। এ বছর ২৬ সেপ্টেম্বর আইএমও কর্তৃক ‘বিশ্ব নৌ দিবস’ পালনের জন্য নির্ধারিত হয়েছে।
নদীমাতৃক এ বাংলাদেশের নদী ও সমুদ্র সুরক্ষা, দূষণ রোধ এবং নৌ চলাচলের পথ সুগম করার লক্ষ্যে জনগণকে উদ্বুদ্ধ ও উৎসাহিত করার প্রয়াসে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় ‘বিশ্ব নৌ দিবস’ উদযাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। নৌদিবসে নদীর নাব্যতা রক্ষা, নদীর দখল ও দূষণরোধে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে মনোনীত ব্যক্তি ও সংস্থাকে প্রদানের জন্য ‘বঙ্গবন্ধু নদী পদক’ প্রবর্তনের বিষয়ে কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে।
নদীরক্ষা কার্যক্রমে সরকারের পাশাপাশি সর্বস্তরের জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সারাদেশে বিশ্ব নৌ দিবস উদ্যাপন এবং ‘বঙ্গবন্ধু নদী পদক’ প্রদানের মাধ্যমে নদী রক্ষায় সকলের ব্যাপক অংশগ্রহণ ও অংশিদারিত্ব সৃষ্টি করা অপরিহার্য। এ লক্ষ্যে এ বছরই ‘বিশ্ব নৌ দিবসে’ ‘বঙ্গবন্ধু নদী পদক’ প্রদানের জন্য কার্যক্রম গ্রহণ করা হচ্ছে।
আগামী সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহ অথবা অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে যেকোন দিন বাংলাদেশে ‘বিশ্ব নৌ দিবস” পালনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।
উল্লেখ্য, নৌপরিবহণ মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ সংস্থাসমূহ নদীর নাব্যতা রক্ষা, দখল ও দূষণরোধে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে উপজেলা, জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে নদী রক্ষা কমিটি গঠন করা হয়েছে। নদী রক্ষাকল্পে আইন প্রয়োগের পাশাপাশি জনগণের অংশগ্রহণ ও সচেতনতা বৃদ্ধি এবং সরকারের সহায়ক শক্তি হিসাবে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ জাতীয় পর্যায়ে পদক প্রদান করা হলে নদী রক্ষা কার্যক্রম আরো গতিশীল হবে।