আন্তর্জাতিক ক্রিকেট নিয়ন্ত্রক সংস্থা (আইসিসি) তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্তে শ্রীলঙ্কান ক্রিকেটের মেম্বারশিপ বাতিল করেছে। আজ (শুক্রবার) আইসিসির এক সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আইসিসির নিয়ম অনুযায়ী, কোনো দেশের ক্রিকেট বোর্ডে সরকারি হস্তক্ষেপ চলবে না। আগেও একবার এই নিয়ম ভঙ্গ করায় দেশটির ক্রিকেট বোর্ডকে দেওয়া সুযোগ-সুবিধা বাতিল করে আইসিসি।
দীর্ঘদিন ধরেই শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটে সরকারি হস্তক্ষেপ চলছে। বিশ্বকাপে ব্যর্থতার ফলে বোর্ডের নানা ব্যাপারে নাক গলাচ্ছে দেশটির সরকার। গত সপ্তাহে বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে লজ্জাজনক পারফর্ম্যান্সের পর পুরো বোর্ডকেই ভেঙে দেয় ক্রীড়া মন্ত্রণালয়। একইসঙ্গে নিয়োগ দেওয়া হয় অন্তর্বর্তীকালীন একটি কমিটি। ওই কমিটিতে শ্রীলঙ্কাকে বিশ্বকাপ জেতানো অধিনায়ক অর্জুনা রানাতুঙ্গাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। এর একদিন পরই সেই কমিটি ভেঙে দিয়ে পুরনো বোর্ডকে পুনর্বহালের আদেশ দিয়েছেন দেশটির আদালত।
এক বিবৃতিতে আইসিসি বলছে, ‘আইসিসি বোর্ড সভায় আজ সিদ্ধান্ত নিয়েছে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট সদস্য হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ বিধি-নিষেধ লঙ্ঘন করেছে। বিশেষ করে, স্বাধীনভাবে কাজ করতে ক্রিকেট প্রশাসনকে সরকারি হস্তক্ষেপের বাইরে থাকার প্রয়োজন ছিল। সময়মতো এই স্থগিতাদেশের শর্তগুলো জানিয়ে দেবে আইসিসি বোর্ড।’
১৯৮১ সালে আইসিসির পূর্ণ সদস্যপদ পেয়েছিল দেশটি। ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গে অনেকদিন ধরেই শ্রীলঙ্কার ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সম্পর্ক শীতল। শ্রীলঙ্কার ক্রীড়া আইন অনুযায়ী অন্য খেলার মতো ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের অধীনেই থাকবে এসএলসি। কিন্তু আইসিসির নিয়ম অনুযায়ী বোর্ডে সরকারি কোনো হস্তক্ষেপ থাকতে পারবে না। যে কারণে চাইলেও খুব একটা প্রভাব দেখাতে পারে না মন্ত্রণালয়। ২০১৪ সালে নির্বাচিত বোর্ড ভেঙে অন্তর্বর্তীকালীন এক কমিটি গড়েছিল শ্রীলঙ্কা সরকার। তখন আইসিসি শ্রীলঙ্কার প্রাপ্য অর্থ প্রদান স্থগিত করেছিল।
মূলত বছরখানেক ধরেই বোর্ডের সঙ্গে ক্রীড়ামন্ত্রীর দ্বন্দ্ব চরমে। এর কারণ গত বছরের অস্ট্রেলিয়ায় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ, লঙ্কা প্রিমিয়ার লিগ ও অন্যান্য ঘরোয়া টুর্নামেন্টের আর্থিক বিষয়াদি। ক্রীড়ামন্ত্রীর সমালোচনার জবাবে পাল্টা জবাব দিচ্ছিলেন শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট বোর্ড অফিশিয়ালরাও। তবে এবার বিশ্বকাপ দলের বাজে পারফরম্যান্সের কারণে পরিস্থিতি বদলে যায়।
গতকাল নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বড় হারের মধ্য দিয়ে বিশ্বকাপ যাত্রা শেষ করেছে শ্রীলঙ্কা। পুরো আসরে ৯ ম্যাচের মধ্যে তারা মাত্র দুটিতে জয় পায়। যার কারণে ২০২৫ সালের আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে তাদের অংশগ্রহণও অনেকটা অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। ইতোমধ্যে লঙ্কান ক্রিকেটাররা দেশেও ফিরে গেছেন।