শেষ হয়েছে কোপা আমেরিকার কোয়ার্টার ফাইনাল পর্বের খেলা। চলতি কোপায় এখনও পর্যন্ত খেলা পাঁচ ম্যাচের মধ্যে চারটিতেই ম্যাচসেরা নির্বাচিত হয়েছেন মেসি।
ক্যারিয়ারে বহুবার বলেছেন, আমার সবকটা ব্যালন ডি’অরের বিনিময়ে হলেও একটা বিশ্বকাপ চাই। দলগত শিরোপাতে সবসময়ই মনোযোগ ছিল লিওনেল মেসির, সে কথা উচ্চকণ্ঠে আবারও জানালেন আর্জেন্টিনা অধিনায়ক।
সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বললেন, ‘আমি সবসময়ই বলি, ব্যক্তিগত সব অর্জন গৌণ বিষয়, আমরা এখানে ভিন্নকিছুর জন্যে এসেছি।’
গ্রুপপর্বের প্রথম দিকে নিজেদের সেভাবে মেলে ধরতে না পারলেও এ মুহূর্তে কোপা আমেরিকায় রীতিমতো উড়ছে আর্জেন্টিনা। প্রতিপক্ষের জালে গোলের বন্যা বইয়ে দিয়ে পার করছে একের পর এক বাধা।
আর এমন সব জয়ের নেপথ্য নায়ক দলটির অধিনায়ক লিওনেল মেসি। তিনি নিজেও উড়ছে, সঙ্গে নিয়ে চলেছেন নিজ দলকে।
এখন পর্যন্ত তার গোল সংখ্যা ৪টি। এসিস্ট করেছেন চারটি। এবারের কোপায় এখনও পর্যন্ত ফ্রি কিক হয়েছে ৩০টির মতো। এর থেকে গোল হয়েছে মাত্র দুটি। আর দুটিই এসেছে মেসির পা ছুঁয়ে।
রোববার সেমিফাইনালে ইকুয়েডরকে ৩-০তে উড়িয়ে দিল আর্জেন্টিনা। বীরদর্পেই শেষ চারের লড়াইয়ের টিকিট নিশ্চিত করলেন লিওনেল স্কলানির শিষ্যরা।
ম্যাচে জোড়া এসিস্টের পর ফ্রি কিক থেকে দর্শনীয় এক গোল করেছেন মেসি। ফলে অবধারিতভাবেই এ ম্যাচেও জিতেছেন ম্যাচসেরার পুরস্কার।
সব মিলিয়ে কোপায় ব্যক্তিগত নৈপুণ্যে সবাইকে ছাড়িয়ে গেছেন লিওনেল মেসি। তবে নিজের অর্জন নিয়ে তেমন একটা ভাবছেন না আর্জেন্টাইন জাদুকর।
ইকুয়েডের বিপক্ষে ম্যাচে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের পর আরও একবার সে কথাই জানিয়ে দিলেন আলবিসেলেস্তেদের নায়ক।
তিনি জানালেন, ব্যক্তিগত কি কি অর্জন করেছেন তা নিয়ে পরে ভাবা যাবে। এখন তার লক্ষ্য নিয়েই যত ভাবনা। লক্ষ্য একটাই কোপার শিরোপা উপহার দিতে চান আর্জেন্টিনাকে।
ম্যাচ জয়ের পর আর্জেন্টিনা অধিনায়ক বলেছেন, ‘আমি সবসময়ই বলি— ব্যক্তিগত অর্জন পরে। আমরা এখানে অন্য কিছুর জন্য এসেছি। আমি পুরো দলকে অভিনন্দন জানাতে চাই, তারা যে পরিমাণ পরিশ্রম করে চলেছে। অনেকদিন ধরে আমরা আমাদের পরিবার থেকে দূরে। আমাদের একটা লক্ষ্য আছে এবং সেটার ব্যাপারেই চিন্তা করি।’
৩-০ গোলে ইকুয়েডরকে উড়িয়ে দিলেও মেসির মুখে গোমেজের দলটির প্রশংসাই ঝরেছে। তার মতে, দুর্দান্ত প্রতিরোধ গড়েছে ইকুয়েডর। ম্যাচটি জেতা মোটেও সহজ ছিল না।
মেসি বললেন , ‘এটা খুবই কঠিন ম্যাচ ছিল। আর এর জন্য আমরা প্রস্তুত ছিলাম। জানতাম প্রতিপক্ষ কঠিন লড়াই করবে আমাদের সঙ্গে। তারা সেটা করেছেও। বলতে গেলে প্রথম গোল পাওয়ার আগপর্যন্ত বেশ লড়তে হয়েছে আমাদের। ঘাম ঝরিয়েছে আমাদের। গোল পাওয়ার পর ম্যাচটা আরও জটিল হয়ে যায়। অবশেষে আমরা সফল। দিনশেষে আশার বাণী হলো, আমরা শিরোপার পথে আরও এক ধাপ এগোলাম। এটিই এখন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।’
ব্রাজিল বনাম পেরু ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে ৬ জুলাই ভোর ৬টায়। অন্যদিকে ৭ জুলাই সকাল ৭টায় আর্জেন্টিনা খেলবে কলম্বিয়ার বিপক্ষে। নিজ নিজ সেমিফাইনালে জিতলেই ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা ফাইনাল দেখবে ফুটবল বিশ্ব।