Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৮ বৃহস্পতিবার, মার্চ ২০২৪ | ১৪ চৈত্র ১৪৩০ | ঢাকা, ২৫ °সে

সচিবালয়ে পাঁচ ঘণ্টা আটকে রেখে থানায় নেওয়া হলো সাংবাদিক রোজিনাকে

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৭ মে ২০২১, ১১:১৮ PM আপডেট: ১৭ মে ২০২১, ১১:১৮ PM

bdmorning Image Preview


পাঁচ ঘণ্টার বেশি সময় সচিবালয়ে আটকে রেখে শাহবাগ থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রোজিনা ইসলামকে। রোজিনা ইসলাম পেশাগত দায়িত্ব পালনের জন্য সোমবার বেলা সাড়ে তিনটার দিকে সচিবালয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে যান। তাকে সেখানে একটি কক্ষে আটকে রাখা হয় এবং তার মোবাইল ফোন কেড়ে নেওয়া হয়। একপর্যায়ে সেখানে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। কেড়ে নেয়া হয় তার মোবাইল ফোনও। সচিবালয়ের ৩ নম্বর ভবনের চতুর্থ তলার ৩৩৯ নম্বর কক্ষে সচিবের দফতরের কর্মকর্তারা প্রথমে আটকে রাখেন। পরে সচিবালয়ের দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্যরা সেখানে আসেন।

সেসময় রোজিনা ইসলাম দাবি করেন, সচিবের সঙ্গে দেখা করতে পিএসের রুমে গিয়েছিলেন তিনি, ফাইল থেকে কোনো কাগজ সরাননি। সচিবের দফতরের মিজান নামের এক কনস্টেবল তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন বলেও কান্নাজড়িত কণ্ঠে সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন রোজিনা।

রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত তাকে পুলিশ প্রহরায় বসিয়ে রাখা হয়। এর মধ্যে দু-দফায় অসুস্থ হয়ে পড়েন রোজিনা।খবর পেয়ে সহকর্মীসহ সাংবাদিক নেতারা ছুটে যান সচিবালয়ে। তারা দফায় দফায় স্বাস্থ্য সচিব লোকমান হোসেন মিয়ার সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। সচিব কোনো কথা বলেননি।রাত সাড়ে ৮টার দিকে অসুস্থ হয়ে পড়লে শাহবাগ থানার পুলিশ রোজিনা ইসলামকে ৩৩৯ নম্বর কক্ষ থেকে বের করে আনে। এসময় সেখানে হট্টগোল শুরু হয়। তাকে কোথায় নেয়া হচ্ছে জানতে চান সাংবাদিকরা। এরপর সাংবাদিকদের বাধার মধ্যে তাকে ৩ নম্বর ভবনের নিচে রাখা পুলিশের একটি মাইক্রোবাসে করে শাহবাগ থানার উদ্দেশ্যে নিয়ে যাওয়া যায়।

এরপর সাংবাদিকরা স্বাস্থ্য সেবা সচিবের কাছে বক্তব্য জানতে ছুটে যান। কিন্তু সচিব কোনো কথা বলবেন না বলে জানিয়ে দেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মাইদুল ইসলাম প্রধান।

মাইদুল ইসলাম প্রধান সাংবাদিকদের বলেন, ‘স্বাস্থ্য সচিব স্যারের পিএসের রুমে কেউ ছিল না—এমন সময় সাংবাদিক রোজিনা ইসলাম আসেন। এসে তিনি গুরুত্বপূ্র্ণ কিছু ফাইলের ছবি তোলেন, সেই ছবিগুলো এখনো মোবাইলে আছে। কিছু কাগজপত্র সঙ্গে নিয়ে যাচ্ছিলেন। এটা একজন অতিরিক্ত সচিব এবং একজন পুলিশ সদস্য দেখে ফেলেন। তারা তাকে চ্যালেঞ্জ করেন যে, এটা আপনি নিয়ে যেতে পারেন না। পরে নারী পুলিশ এসে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে।’

 আরও বলেন, ‘এখন অভিযোগ দায়ের করা হলো, অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। অভিযোগ দায়ের করেছেন উপ-সচিব মো. শিব্বির আহমেদ ওসমানী।’

অবশ্য, রোজিনার কর্মস্থল দৈনিক প্রথম আলোর অনলাইনে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘রোজিনা ইসলাম পেশাগত দায়িত্ব পালনের জন্য আজ সোমবার বেলা সাড়ে তিনটার দিকে সচিবালয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে যান। তাকে সেখানে একটি কক্ষে আটকে রাখা হয় এবং তার মোবাইল ফোন কেড়ে নেওয়া হয়।’

এ বিষয়ে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন ফেসবুকে এক পোস্টে বলেন, ‘প্রথম আলোর রিপোর্টার রোজিনা ইসলামকে সচিবালয়ে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগে আটকে রেখে হেনস্থা করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আমি স্বাস্থ্যমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও তথ্যমন্ত্রীর এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিবের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা বিষয়টি সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন। যতটুকু জেনেছি রোজিনা অসুস্থ হয়ে পড়েছে কিন্তু এখনও আটকে রাখা হয়েছে, হাসপাতালে নিতে দিচ্ছে না। আমি তাকে দ্রুত হাসপাতালে চিকিৎসার ব্যবস্থা করার দাবি জানাচ্ছি। নতুবা উদ্ভূত পরিস্থিতির জন্য দায়-দায়িত্ব সংশ্লিষ্টদের নিতে হবে।

 

Bootstrap Image Preview