দিনাজপুরে দিন দিন বাড়ছে নারী বাইকারের সংখ্যা। যেখানে হাতে গোনা কয়েকজন নারী বাইকার ছিল, সেখানে এখন অসংখ্য নারী স্কুটি নিয়ে ছুটে বেড়াচ্ছেন দিনাজপুর শহর থেকে গ্রামান্তরে। কেউ এনজিওকর্মী, কেউ সরকারি চাকুরে, কেউ স্কুল শিক্ষিকা। স্কুটি নিয়ে ছুটে চলেছেন নিজ নিজ কর্মস্থলে। আবার কেউ বা সন্তানকে স্কুলে আনা-নেওয়ার কাজ করেন। শহর-গ্রামে একই দৃশ্য সকলের চোখে পড়ার মতো। এতে করে অনেকাংশে কমছে নারী-পরুষের বৈষম্য। এছাড়া পুরুষের চেয়ে নারীরা একটু বেশি সচেতন বলে তারা দুর্ঘটনার শিকারও হন কম।
সোমবার বিশ্ব নারী দিবস উপলক্ষে দিনাজপুরে অর্ধশতাধিক নারী স্কুটি চালিয়ে দিনাজপুর শহর প্রদক্ষিণ করেছে। দিনাজপুর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বর থেকে ওমেন্স বাইকার ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশনের উদ্যোগে এই মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা বের হয়। শোভাযাত্রাটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এ বছর আন্তর্জাতিক নারী দিবসের প্রতিপাদ্য বিষয় ছিল, ‘করোনাকালে নারী নেতৃত্ব, গড়বে নতুন সমতার বিশ্ব’।
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি লায়লা আরজুমান্দ বানু এই শোভাযাত্রার নেতৃত্ব দেন। তিনি জানান, একজন এনজিওকর্মী হওয়ায় দীর্ঘ ৩৫ বছর ধরে মোমটরসাইকেল চালান তিনি। নারী দিবসকে ঘিরে আর নারীদের প্রতিবাদ নয়, এখন প্রতিরোধের দিন এসেছে। দিনাজপুরের নারীরা পুরুষদের ন্যায় বাইক চালানোতে দক্ষ হয়ে উঠছে। সড়ক-মহাসড়কে চোখে পড়তো না নারীদের বাইক চালানো। নারীরা আগ্রহী হওয়ায় দিন দিন এর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। সংগঠনের এ ধরনের উদ্যোগ দিনাজপুরের নারীদের সাহসী ও স্বাবলম্বী করে গড়ে তুলবে।
র্যালিতে অংশগ্রহণ করে দিনাজপুর ওমেন্স বাইকার’র ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশনের সভাপতি লায়লা আরজুমান্দ বানু ছাড়াও সহ-সভাপতি সেতারা বেগম, সাধারণ সম্পাদক রাবেয়া খাতুন রানু, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক বাবলী আক্তার পিংকি, কোষাধ্যক্ষ বিলকিস, প্রচার সম্পাদক সুমনা শারমিন, সাংগঠনিক সম্পাদক নাসরিন আক্তার, বোর্ড সদস্য বনানী, রেবেকা মাসুদসহ অন্যান্যরা স্কুটি চালনায় অংশগ্রহণ করেন।
শোভাযাত্রা শেষে এক সংক্ষিপ্ত আলোচনায় নারী বাইকাররা বলেন, নারী ও পুরুষের মধ্যে বৈষম্য দূর না হলে দেশের উন্নয়ন ত্বরান্বিত হওয়া সম্ভব নয়। পুরুষ ও নারীরা সমানভাবে সমান অধিকার ভোগ করবে, এটা হলো উন্নয়নের পূর্বশর্ত। নারী অধিকার এখন সময়ের দাবি। নির্যাতন, নিপীড়ন ও নারীদের প্রতি অবহেলা কোনও অবস্থাতেই আর সহ্য করা হবে না। অন্যায়, অত্যাচার ও নির্যাতনের বিরুদ্ধে নারী-পুরুষ সম্মিলিতভাবে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। আর এটাই হোক আজকে নারী দিবসের শপথ।