Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৯ শুক্রবার, মার্চ ২০২৪ | ১৫ চৈত্র ১৪৩০ | ঢাকা, ২৫ °সে

‘নুরের উসকানিতে ভিয়েতনামে বাংলাদেশ মিশন দখলের চেষ্টা’

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৬ জুলাই ২০২০, ০৯:৫৯ PM আপডেট: ০৬ জুলাই ২০২০, ০৯:৫৯ PM

bdmorning Image Preview


অবৈধভাবে ভিয়েতনামে যাওয়া ২৭ বাংলাদেশি ওই দেশে অবস্থিত বাংলাদেশি মিশন দখল করার চেষ্টা করে। একটি অনলাইন প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে তাদের উসকানি দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের সদ্য সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর।

সোমবার (৬ জুলাই) পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেন সাংবাদিকদের এই কথা বলেন। গত ২ জুলাই তাদের মধ্যে ১১ বাংলাদেশিকে নিয়ে একটি বিশেষ ফ্লাইট ভিয়েতনাম থেকে ঢাকায় আসে বলেও জানান মন্ত্রী।

তবে নুরুল হক নুর এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, তিনি প্রবাসীদের উসকানি দেননি, প্রতিবাদ করেছেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের রাষ্ট্রদূত ভিয়েতনাম থেকে বাংলাদেশিদের ফেরত পাঠানোর কাজে ব্যস্ত ছিলেন। ওই ফাঁকে সেখানে আরও ২৭ জন বাংলাদেশি মিশনটি দখল করে ফেলে। তারা বলে তাদের বাংলাদেশে পাঠাতে হবে। তাদের বলা হলো, ফ্লাইট যাচ্ছে তোমরা ফেরত যাও। কিন্তু তারা বললো তারা ওই ফ্লাইটে ফেরত যাবে না। তারা টাকা পয়সা খরচ করবে না। তারপরে দেন দরবার করে। এখন তারা হোটেলে আছে।’

তারা সবাই অবৈধভাবে ওই দেশে যায় এবং তাদের কোনও পাসপোর্ট নেই জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘তারা পাসপোর্টের কথা বলতেও রাজি না। তারা বলে এগুলো তাদের এজেন্টরা নিয়ে গেছে। তারা কোনও জাতীয় পরিচয়পত্র দেখাতে চায় না। কোনও ধরনের সহযোগিতা তারা করছে না।’

‘তারা বড় প্রচারণা চালাচ্ছে যে সরকার তাদের কোনও সহায়তা করছে না‘ জানিয়ে মোমেন বলেন, ‘তাদের দাবি হচ্ছে বাংলাদেশে নিয়ে যেতে হবে এবং তাদের বিশেষ ফ্লাইটে নিয়ে যেতে হবে। তারা ভিডিও মারফত একটি আন্দোলন শুরু করেছে। তারা বলছে, তারা পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় মিশনগুলোতে আক্রমণ করবে। তাদের নেতৃত্ব দিচ্ছে একটি নতুন প্রতিষ্ঠান এবং এটির নাম হচ্ছে প্রবাসী অধিকার পরিষদ। এর প্রধান বোধহয় হচ্ছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিপি নুর সাহেব।’

মন্ত্রী বলেন, ‘আমার মনে হয় যারা অবৈধভাবে যায় তাদের শাস্তি দেওয়া উচিত। এটি তো আমরা করবো না এবং এটি আলোচনার মাধ্যমে ঠিক হবে। এটি মনে হয় করা দরকার। এর ফলে আমাদের বদনাম হয়। বিদেশে গেলে যখন অসুবিধায় পড়ে তখন আমাদের কাছে আসে।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নুরুল হক নূর বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, “আমি খুব অবাক হচ্ছি যে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মতো একজন উচ্চশিক্ষিত লোক, আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে কাজ করা একজন লোক, তিনি বিভিন্ন সময় যে ধরনের অসংলগ্ন কথাবার্তা বলেন, তাতে আসলে এদেশের মানুষ বিভ্রান্ত হয়, প্রবাসীরা অপমানিত হন। এর আগে তিনি বাংলাদেশ ভারত সম্পর্ককে ‘স্বামী – স্ত্রীর’ সম্পর্ক বলেছেন। করোনাভাইরাসের প্রকোপের শুরুতে ‘প্রবাসীরা দেশে আসলে নবাবজাদা হয়’ এ ধরনের মন্তব্য করেছেন। কিছুদিন আগে তিনি কথা বলেছেন –‘ প্রবাসীরা দেশে আসলে চুরি ডাকাতি বেড়ে যায়’। এসব অসংলগ্ন , বিভ্রান্তিকর, আপত্তিজনক কথাবার্তা তার মুখ থেকে প্রায়েই আসে। সেটার নিয়মিত চর্চা হিসেবে বোধহয় একথা বলেছেন।”

তিনি আরও বলেন, “আমি বাংলাদেশি একজন নাগরিক, বাংলাদেশের একজন ছাত্র নেতা। আমি কোনও জাতীয় নেতা নই, আমি কোনও রাজনৈতিক দলের প্রধান নই। আমি ভিয়েতনামে বাংলাদেশ দূতাবাস দখল করাবো –এটা কতটুকু হাস্যকর কথা! এই কথা বাংলাদেশের একজন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মুখ থেকে আসা বাতুলতা ছাড়া আর কিছু না। আমি  ‘প্রবাসী অধিকার পরিষদ’ নামে একটি সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত আছি, যেটা প্রায় মাস খানেকের মতো ধরে তৈরি হয়েছে। সেখানে এক মাসের মধ্যে আমাদের এতো শক্তি হয়ে গেল যে আমরা একটা গুরুত্বপূর্ণ জায়গা দখল করবো! এটা খুবই ফালতু কথা।”

নুর বলেন, ‘সেখানে ২৫ জনের মতো বাংলাদেশি নাগরিক মানবপাচারকারী চক্রের হাতে পড়েছিল। তারা টাকা খরচ করে গেছে, তাদের কোনও কাজকর্ম দেওয়া হয়নি। তাদের সেখানে নিয়ে আটক রাখা হয়েছিল। আমি শুনেছি তারা সেখান থেকে পালিয়ে দূতাবাসের সহযোগিতা চেয়েছে। দূতাবাস কোনও সাহায্য করেনি, দূতাবাসের কিছু লোক নাকি অসাধু সিন্ডিকেটের সঙ্গে যুক্ত হয়ে তাদের আটক রেখেছে। তখন আমরা এটার প্রতিবাদ জানিয়েছি। তাদের যে কোনও কারণ ছাড়াই আটক রাখা হয়েছে এটা নিয়ে আমরা কথা বলবো না? এই কথা বলা যদি উসকানি হয় এরকম উসকানি আমরা শত সহস্রবার দেবো। এটা অন্যায় হলে আমরা এই অন্যায় হাজার বার করবো। এরকম একজন লোক যদি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্বে থাকেন সেটা দেশের জন্য খুবই অসম্মানের বিষয়। আমি আহ্বান জানাই এই লোক পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে থাকার যোগ্য কিনা সেটা সরকার যেন বিবেচনা করে।’

Bootstrap Image Preview