Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৯ শুক্রবার, মার্চ ২০২৪ | ১৫ চৈত্র ১৪৩০ | ঢাকা, ২৫ °সে

করোনার উৎস নিয়ে চীনের বিরুদ্ধে তদন্ত চায় ১১৬ দেশ; বাংলাদেশের অবস্থান জানেন?

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৯ মে ২০২০, ০৬:৫৯ AM আপডেট: ১৯ মে ২০২০, ০৬:৫৯ AM

bdmorning Image Preview


মহামারি করোনাভাইরাসের উৎপত্তি নিয়ে চীনের বিরুদ্ধে তদন্ত চায় ১১৬টি দেশ। কোথায়, কীভাবে ভাইরাসটির বিস্তার হল কিংবা এ যাবৎ চীন ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) গৃহীত পদক্ষেগুলো যথার্থ কিনা- প্রভৃতি প্রশ্ন নিয়ে স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানিয়েছে এই দেশগুলো।

সোমবার জেনেভায় শুরু হওয়া ৭৩তম ওয়ার্ল্ড হেলথ অ্যাসেম্বলির সভায় দেশগুলোর পক্ষ থেকে এ বিষয়ে একটি খসড়া প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়েছে। এতে করোনা সংকট নিয়ে ‘নিরপেক্ষ, স্বাধীন ও বিস্তারিত’ তদন্তের আহ্বান জানানো হয়। এ প্রস্তাবের কঠোর প্রতিবাদ জানিয়েছে চীন।

চীনের দাবি, উহানের একটি সামুদ্রিক খাবারে বাজার থেকে ছড়িয়েছে করোনাভাইরাস। তবে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন মনে করে, করোনা নিয়ে বিশ্বে ভুল তথ্য দিচ্ছে বেইজিং। করোনাভাইরাস নিয়ে অবহেলার অভিযোগে চীন সরকারের বিরুদ্ধে একটি মামলাও দায়ের করেছে যুক্তরাষ্ট্রের মিসৌরি রাজ্য কর্তৃপক্ষ। তবে প্রথম দেশ হিসেবে মহামারী নিয়ে চীন ও ডব্লিউএইচওর ব্যবস্থাপনা ও পদক্ষেপ নিয়ে স্বাধীন তদন্তের আহ্বান জানায় অস্ট্রেলিয়া। এর সঙ্গে যোগ দেয় ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)।

সোমবার থেকে শুরু হয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দুই দিনের ভার্চুয়াল সম্মেলন। ওয়ার্ল্ড হেলথ অ্যাসেম্বলি শীর্ষক এই বৈঠক সামনে করেই তদন্ত বিষয়ক একটি খসড়া প্রস্তাব তৈরি করা হয়। অবশ্য খসড়া প্রস্তাবের কোথাও চীন বা উহানের নাম উল্লেখ করা হয়নি। এতে একে একে সমর্থন জনিয়েছে বিশ্বের ১১৬টি দেশ। সমর্থন জানিয়েছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচ স্থায়ী সদস্যের তিনটিই (আমেরিকা, রাশিয়া ও ফ্রান্স)। সমর্থন দেয়া সর্বশেষ দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে ইন্দোনেশিয়া, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, তুরস্ক, দক্ষিণ আফ্রিকা ও ব্রিটেন। দক্ষিণ এশিয়ার সার্কভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে ভারতের পাশাপাশি বাংলাদেশ ও ভুটান এই প্রস্তাবে সম্মতি দিয়েছে। তবে সম্মতিদানে বিরত রয়েছে পাকিস্তান, নেপাল, শ্রীলঙ্কা ও আফগানিস্তান।

প্রস্তাবে বলা হয়েছে, করোনাভাইরাসের সংকট নিয়ে নিরপেক্ষ, স্বাধীন এবং সবিস্তার তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। প্রয়োজনে সদস্য দেশগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে করণীয় ঠিক করার আহ্বানও জানানো হয়েছে এ প্রস্তাবে। শুধু তাই নয়, এই ভাইরাসের সংক্রমণ বিস্তার ঠেকাতে কতটা নিরপক্ষ পদক্ষেপ নেয়া হয়েছিল তা নিয়েও তদন্ত করার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে ওই খসড়ায়। অস্ট্রেলিয়া ও ইইউ’র এ উদ্যোগের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে চীন। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে বেইজিং বলছে, অস্ট্রেলিয়ার এ ধরনের কর্মকাণ্ড দায়িত্বহীনতার পরিচয়। চীনের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক আক্রমণের উদ্দেশ্যেই এমন উদ্যোগ নিয়েছে দেশটির সরকার। হুশিয়ারি দিয়ে বলেছে, এতে মহামারী মোকাবেলায় আন্তর্জাতিক সহযোগিতার বিষয়টি ব্যাহত হবে। যার ভুক্তভোগী হবে মানুষ।

তবে চীনের এই সমালোচনা গায়ে মাখছেন না অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন। ইউরোপীয় ইউনিয়নের পাশাপাশি বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলের দেশগুলোর সঙ্গে শক্ত কূটনৈতিক দেন-দরবার শুরু করেছে তার প্রশাসন। অস্ট্রেলিয়ার গণমাধ্যম এবিসি নিউজ জানায়, ওয়ার্ল্ড হেল্থ অ্যাসেম্বলির বৈঠকে এসব বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হবে। গত বছরের ডিসেম্বরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হয় চীনের হুবেই প্রদেশের রাজধানী উহান শহরে। এরপর চার মাসের মধ্যে ভাইরাসটি দ্রুতই বিশ্বের দুই শতাধিক দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। এরই মধ্যে আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছে ৪৭ লাখের বেশি, মারা গেছে ৩ লক্ষাধিক।

Bootstrap Image Preview