Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২০ শনিবার, এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

চলছে ক্রিকেটার তৈরির কারখানা

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১১ ফেব্রুয়ারী ২০২০, ১২:২৯ PM আপডেট: ১১ ফেব্রুয়ারী ২০২০, ১২:২৯ PM

bdmorning Image Preview


প্রথমবারের মতো আইসিসি যুব বিশ্বকাপ জিতে দেশের ক্রিকেটে নতুন দিগন্তের সূচনা করেছে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ জাতীয় ক্রিকেট দল। গত ৯ ফেব্রুয়ারি দক্ষিণ আফ্রিকার পচেফস্ট্রুমে ভারতকে হারিয়ে বিশ্বজয় করে বাংলাদেশ যুব দল। দেশের ক্রিকেট ইতিহাসে এটি সবচেয়ে বড় অর্জন এটি। আকবর আলীর নেতৃত্বে যুব ক্রিকেটে বিশ্ব সেরার মুকুট জিতে লাল-সবুজের দল।

বয়সভিত্তিক পর্যায়ে প্রতিভা অন্বেষন এবং পরে তাদেরকে গড়ে তোলায় গেম ডেভলপমেন্ট বিভাগের সামগ্রিক পদ্ধতির সাফল্য এখন পরীক্ষিত। মূলত জাতীয় স্কুল ক্রিকেট, বিসিবির বয়সভিত্তিক প্রতিযোগিতার মাধ্যমেই প্রতিভা বাছাইয়ের মহাযজ্ঞ সম্পন্ন করে গেম ডেভলপমেন্ট বিভাগ। এই বিভাগের কার্যক্রম সম্পর্কে এখন আগ্রহ আছে অনেকেরই। আসুন চোখ বুলাই, কিভাবে অনূর্ধ্ব-১৯ থেকে অন্য বয়সভিত্তিক দলগুলো গঠন করে বিসিবি,  কিভাবে প্রতিভা বাছাই ও তাদের পরিচর্যা করে বিসিবির গেম ডেভলপমেন্ট বিভাগ?

জাতীয় স্কুল ক্রিকেট: দেশ জুড়েই হয় স্কুল ক্রিকেট। প্রায় সাড়ে ৫’শ স্কুল এই প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। প্রতিটি জেলাতেই এটি অনুষ্ঠিত হয়। অন্তত ৮টি স্কুল থেকে বের হয় জেলা চ্যাম্পিয়ন। যারা বিভাগীয় পর্যায়ে লড়াই করে নকআউট টুর্নামেন্টে। তারপর চার দলের সেমিফাইনাল এবং ফাইনালের মাধ্যমে বের হয় বিভাগীয় চ্যাম্পিয়ন স্কুল দল। বিভাগীয় চ্যাম্পিয়নদের সঙ্গে ঢাকার দুটি দল নিয়ে হয় স্কুল ক্রিকেটের জাতীয় পর্যায়ের পর্ব। তারপরই আসে জাতীয় চ্যাম্পিয়ন।

এই প্রতিযোগিতায় চোখ থাকে বিসিবির জেলা ভিত্তিক কোচদের। তাদের মাধ্যমে প্রতিভাবানরা সুযোগ পান নির্দিষ্ট জেলার বয়সভিত্তিক দলে। বয়সভিত্তিক প্রতিযোগিতা: স্কুল ক্রিকেটের মতোই প্রতিটি জেলায় অনূর্ধ্ব-১৪, ১৬, ১৮ দল থাকে। যারা বিভাগীয় প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। তৈরি হয় বিভাগীয় চ্যাম্পিয়ন।

 

ধরা যাক, অনূর্ধ্ব-১৪ পর্যায়ে জেলা দলগুলো একে অপরের বিরুদ্ধে ম্যাচ খেলে। সেখানে দলের রেজাল্টের চেয়ে প্রতিভাবান ক্রিকেটারের সন্ধানে থাকেন কোচরা। পরে  বিভাগীয় কোচরা একটি প্রাথমিক তালিকা করেন। প্রায় ৪০-৫০ জনকে নিয়ে বিভাগীয় পর্যায়ে চারদিনের ক্যাম্প করা হয়। সেখান থেকে দলটা ১৭-১৮ জনে নামিয়ে আনা হয়। তাদেরকে নিয়ে করা হয় ১০ দিনের স্কিল ক্যাম্প। প্রতিটি বিভাগেই এমন ক্যাম্প হয়। তারপরই প্রত্যেক বিভাগ তাদের দল গঠন করে এবং বিভাগীয় প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে।

বিভাগীয় প্রতিযোগিতা থেকে বাছাই করে গঠন করা হয় ন্যাশনাল পুল। যার মাধ্যমেই জাতীয় বয়সভিত্তিক দলগুলোতে সুযোগ পান আগামীর ক্রিকেটাররা। বিভাগীয় পর্যায়ে ১০টি দল থাকে। যেখানে ঢাকার তিনটি দল থাকে; ঢাকা মেট্রো, ঢাকার উত্তর, ঢাকা দক্ষিণ। দুই গ্রুপে ভাগ করা হয় দলগুলোকে। তিনটি পর্যায়েই (১৪, ১৬, ১৮) এই প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।

দুই গ্রুপের সেরা চার দল খেলে সেমিফাইনালে। ফাইনালের মাধ্যমে তিন স্তর থেকে বের হয়ে আসে জাতীয় চ্যাম্পিয়ন। তারপর বিভাগীয় প্রতিযোগিতা থেকে তিন স্তরেই নির্বাচক-কোচরা মিলে ৪২ জন ক্রিকেটারকে বাছাই করেন। যুবাদেরকে তিন দলে ভাগ করে চ্যালেঞ্জ সিরিজ আয়োজন করা হয়। ওই সিরিজের পর স্কোয়াডগুলো ২৪ জনে নামিয়ে আনা হয়। তাদেরকে পাঠানো হয় তিন সপ্তাহের ক্যাম্পে।

৪-৫ জন খেলোয়াড় বাদ পড়েন ক্যাম্প থেকে। তারপই অনূর্ধ্ব-১৪ ক্যাম্প থেকে জাতীয় অনূর্ধ্ব-১৫ দল, অনূর্ধ্ব-১৬ ক্যাম্প থেকে জাতীয় অনূর্ধ্ব-১৭ দল, অনূর্ধ্ব-১৮ ক্যাম্প থেকে জাতীয় অনূর্ধ্ব-১৯ দল গঠন করা হয়। তিন স্তরে তিনটা জাতীয় দল গঠন হয়।

এছাড়া ঢাকায় বিসিবির তালিকাভুক্ত ক্রিকেট একাডেমি গুলো থেকেও প্রতিভা অন্বেষন করে থাকে গেম ডেভলপমেন্ট বিভাগ। ঢাকার একাডেমিগুলোকে ভাগ করা হয় কয়েকটি জোনে। একাডেমিগুলো তাদের ছাত্রদের নিয়ে আসে। সেখানে নেটে বোলিং, ব্যাটিং দেখে একটি বাছাই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেন বিসিবির কোচরা। যা থেকে একটি স্কোয়াড গঠন করে প্রথমে চারদিনের ক্যাম্প এবং পরে ১০ দিনের স্কিল ক্যাম্প করা হয়। এই দলের খেলোয়াড়রাই বিভাগীয় পর্যায়ে ঢাকার প্রতিনিধিত্ব করে থাকে।

Bootstrap Image Preview