Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২০ শনিবার, এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

অবশেষে কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ষাঁড় ‘সিনবাদ’

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৯ জানুয়ারী ২০২০, ১১:২০ AM আপডেট: ২৯ জানুয়ারী ২০২০, ১১:২০ AM

bdmorning Image Preview


অবশেষে ৫৪ মণ (২ টন) ওজনের ষাঁড় ‘সিনবাদ’ কেজির দরে বিক্রি হতে যাচ্ছে। গত দুই বছরে ঈদুল আজহার কোরবানির হাটে উপযুক্ত দাম না পাওয়ায় ‘সিনবাদকে’ বিক্রি করতে পারেননি মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার দড়গ্রামের বিল্লাল হোসেন। এরই মধ্যে সিনবাদের ভরণপোষণের পেছনে ক্রমাগত ব্যয়ে লোকসানের দিকে যাচ্ছেন বিল্লাল হোসেন।

ঝুঁকি এড়াতে আগামী শুক্রবার কেজি দরে আদরের ‘সিনবাদকে’ বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।

বিল্লাল হোসেন জানালেন, শুক্রবার সকাল ৭টার দিকে সিনবাদকে জবাই করা হবে। পুরো গরুর মাংস ১০৫টি ভাগে ভাগ করে বিক্রয় করা হবে।

ভাগগুলো দুরকমভাবে বিক্রি হবে। একটির দাম থাকবে ৫ হাজার, আরেকটির ১০ হাজার টাকা। আর যারা মাংস কিনতে আসবেন তাদের খাসির কাচ্চি বিরিয়ানি দিয়ে আপ্যায়ন করা হবে।

তিনি আরও জানালেন, মঙ্গলবার পর্যন্ত ৬০টির ভাগ বিক্রির অর্ডার পেয়েছেন। আশা করছি বাকিগুলো শুক্রবারের আগেই শেষ হয়ে যাবে।

সিনবাদের রাজকীয় জীবনযাপন: শুরু থেকেই দেশীয় পদ্ধতিতে সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক খাবার খাওয়ান ‘সিনবাদ’ নামে ষাঁড়টিকে। বেশ রাজকীয়ভাবেই রাখা হচ্ছে ষাঁড়টিকে। যে ঘরটিতে সিনবাদ থাকে, সেই ঘরটির মেঝে পাকা। সিনবাদের পায়ের গোড়ালিতে যাতে কোনো ব্যথা না লাগে সে জন্য ফ্লোরে পাতা আছে দামি ম্যাট।

এছাড়া গত বছরের কোরবানির হাটে দেড় লাখ টাকার মাইনের একজন রাখাল (কর্মচারী) সিনবাদকে পরিচর্চা করে। গরম থেকে সুরক্ষায় তার জন্য রয়েছে দুটি সিলিংফ্যানসহ পাঁচটি ফ্যান।

ঘরটিতে কোনো ধরনের ময়লা-আর্বজনা চোখে পড়েনি। ঘরটি পরিপাটি করে রাখা হয়েছে। ‘সিনবাদের’ খাবারের মেন্যুতে রয়েছে স্বাভাবিক খাবারের পাশাপাশি আঙুর, মালটা, কলা, পেয়ারা, মিষ্টি লাউ।

ঘরের মধ্যে এসব খাবার থরে থরে সাজানো রয়েছে। প্রতিদিন সিনবাদকে প্রায় ১৮০০ থেকে ২০০০ টাকার পরিমাণ বিভিন্ন খাবার খাওয়ানো হয়ে থাকে। গত ছয় মাস ধরে এই পরিমাণ টাকার খাবার খাওয়ানো হচ্ছে।

সিনবাদের মালিক বিল্লাল হোসেন বলেন, গত দুই বছরে ঈদুল আজহায় কোরবানির হাটে বিক্রির উপযোগী করলেও উপযুক্ত দাম না পাওয়ায় অবিক্রীত রয়ে যায় তার সিনবাদ নামের ষাঁড়টি। ২০১৯ সালের কোরবানি হাটের সময় ষাঁড়টির ওজন ছিল ৫৪ মণ।

যদি কোনো ব্যক্তি এই ষাঁড়ের মাংস কিনতে আগ্রহী হোন তাদের তার (বিল্লাল হোসেন মোবাইল নম্বরে ০১৭২৬ ৬২২৫৭৩) যোগাযোগ করতে অনুরোধ জনিয়েছেন।

তিনি আরও জানান, সম্পূর্ণ দেশীয় পদ্ধতিতে পরম যত্নে লালন-পালন করেছিলাম এ ষাঁড়টিকে। কাঁচা ঘাস, গমের ভুসি, শুকনো খড়, ভুট্টা, ধান ও গম ভাঙা, ছোলা, চিড়া, আখের গুড়, মালটা, কলা, পেয়ারা, মিষ্টি লাউ, নালি খাওয়ানো হতো। কিন্তু গেল বছর ঈদে বিক্রি করতে না পেরে লোকসানে পড়ে খাবার কমিয়ে দেয়া হয়।

খামারি বিল্লাল বলেন, ২০১৮ সালের ঈদুল আজহার আগে ‘সিনবাদের’ ওজন ছিল ৪০ মণ। বাড়িতে প্রচুর ক্রেতা এলেও উপযুক্ত দাম না পাওয়ায় বিক্রি করিনি।

গেল ২০১৯ সালের ঈদের হাটে ওজন ছিল ৫৪ মণ। কিন্তু হাজার হাজার ক্রেতার ফোন পেলেও বিক্রি করতে পারিনি সিনবাদকে।

সাটুরিয়া উপজেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগের ভেটেরিনারি সার্জন ডা. মো. সেলিম জাহান জানান, ‘সিনবাদ’ ষাঁড়টি হলিস্টিন ফ্রিজিয়ান জাতের। ঈদুল আজহার সময় উচ্চতা ছিল ৬ ফিট ৭ ইঞ্চি, দাঁত রয়েছে চারটি, বয়স চার বছর ৭ মাস। সম্পূর্ণ দেশীয় পদ্ধতিতে লালন-পালন করা হয়েছে ষাঁড়টি। আমরা ধারণা করছি ৫৪ মণ ওজনের ষাঁড়টি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ওজনের ষাঁড়।

Bootstrap Image Preview