Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৫ বৃহস্পতিবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

জামিনে ছাড়া পেয়েই গণপিটুনিতে নিহত গরু চোরের সরদার

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২০ আগস্ট ২০১৯, ০৮:০২ PM আপডেট: ২০ আগস্ট ২০১৯, ০৮:০২ PM

bdmorning Image Preview


কিশোরগঞ্জের ভৈরবে গণপিটুনিতে রফিকুল ইসলাম (৪০) নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার জামালপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত রফিকুল উপজেলার মধ্যেরচর গ্রামের কালা গাজীর ছেলে।

স্থানীয়দের দাবি, তিনি এলাকার চিহ্নিত গরু চোরের সরদার। গরু চুরি ছাড়াও তার বিরুদ্ধে ভৈরব থানায় খুন ও মাদকের একাধিক মামলা রয়েছে।

পুলিশ ও প্রতক্ষ্যদর্শী সূত্রে জানা গেছে, আজ দুপুরে রফিকুল এলাকার বাজার থেকে নিজ বাড়ি ফিরছিলেন। এ সময় এলাকার শত শত ক্ষুব্ধ ও উত্তেজিত জনতা তাকে লাঠিপেটাসহ দা দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে। পরে নিহতের মরদেহ রাস্তার পাশে খাদের পানিতে ফেলে দেয়া হয়। খবর পেয়ে পুলিশ দুপুর আড়াইটার দিকে ঘটনাস্থল থেকে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।

স্থানীয়রা জানায়, রফিকুল ইসলাম এলাকার চিহ্নিত গরু চোরের সরদার। ভৈরবে যত গরু চুরি হতো সবই তার ইঙ্গিতে বা নির্দেশে হতো। অনেক সময় মালিকরা তাকে টাকা দিয়ে চুরি যাওয়া গরু ফিরিয়ে আনতে বাধ্য হতেন। গত ২৭ জুলাই ডিবি পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে আদালতে চালান দেয়। ২৩ দিন জেলে থাকার পর গতকাল সোমবার তিনি জামিনে মুক্ত হয়ে বাড়িতে আসেন। তার জামিনের খবর পেয়ে আজ দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কয়েকশ ক্ষুব্ধ ও উত্তেজিত জনতা তাকে লাঠিপেটা ও দা দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে।

এলাকার কৃষক রমিজ মিয়া জানান, এই অঞ্চলের মানুষ রফিকের ভয়ে রাত জেগে গরু পাহারা দিত। তিনি ছিলেন গরু চোরদের সরদার। এলাকাসহ আশেপাশের উপজেলা ও হাওর অঞ্চলের শত শত গরু চুরি করে তিনি লাখ লাখ টাকার মালিক হয়েছেন।

মানিক মিয়া নামের এক ব্যক্তি জানান, রফিকের ভয়ে এলাকাবাসী প্রতিবাদ করার সাহস পেত না। তার যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে আজ উত্তেজিত জনতা তাকে গণপিটুনি দিয়ে হত্যা করে। সে নিহত হওয়ায় এলাকায় স্বস্তি ফিরে এসেছে। তার মৃত্যুতে এলাকাবাসী হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছে।

তবে নিহত রফিকের বড় ভাই মো. ফেরদৌস বলেন, আমার ছোট ভাই এক সময় খারাপ থাকলেও সে ইদানিং গরু চুরির সঙ্গে জড়িত ছিল না। অন্যরা গরু চুরি করে তার নামে বদনাম করত। গতকাল সে জেল থেকে বাড়ি এসে আমাকে বলেছিল- আমি আর গরু চুরিসহ কোনো ধরনের অপরাধ করব না। এর মধ্যেই এলাকার লাল মিয়া, গোলাপ মিয়া, ফারুক, হাজি লতিফ, শফিক, আলামিনসহ প্রতিপক্ষের লোকজন এলাকাবাসীকে উত্তেজিত করে আমার ভাইকে কুপিয়ে হত্যা করে। আমি আমার ভাইয়ের হত্যার অপরাধে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করব।

ভৈরব থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মোখলেছুর রহমান জানান, গত ২৪ দিন আগে পুলিশ রফিককে গ্রেফতার করে জেলে পাঠায়। তার বিরুদ্ধে ভৈরব থানায় খুন, মাদকসহ একাধিক গরু চুরির মামলা আছে। তিনি এলাকার চিহ্নিত গরু চোরের সরদার। এলাকাবাসী ক্ষুব্ধ ও উত্তেজিত হয়ে আজ তাকে গণপিটুনি দিয়ে হত্যা করেছে। এ ঘটনায় তার পরিবারের কেউ বাদী হয়ে থানায় মামলা করেনি। তবে এ বিষয়ে তদন্ত করে আইনত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Bootstrap Image Preview