ভারতের বিরুদ্ধে সিরিজের প্রথম টেস্টে ফলো-অনের আশঙ্কা চেপে বসেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ শিবিরে৷ টিম ইন্ডিয়ার পাহাড়প্রমাণ রানের বোঝা মাথায় নিয়ে পাল্টা ব্যাট করতে নেমে দ্বিতীয় দিনের শেষেই কোণঠাসা ক্যারিবিয়ান দল৷

ভারত ৯ উইকেটে ৬৪৯ রান তুলে তাদের প্রথম ইনিংসের সমাপ্তি ঘোষণা করে৷ জবাবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৬ উইকেটে ৯৪ রান তুলে দিনের খেলা শেষ করে৷ কোহলিদের তুলনায় এখনও ৫৫৫ রানে পিছয়ে রয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ৷ ফলে অন বাঁচাতে তাদের দরকার ৪৫০ রান৷ অর্থাৎ ভারতকে দ্বিতীয়বার ব্যাট করতে বাধ্য করাতে হলে বাকি চার উইকেটে আরও ৩৫৬ রান তুলতে হবে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে৷ উদ্ভূত পরিস্থিতিতে যা কার্যত অসম্ভব দেখাচ্ছে৷

প্রথম দিনের ৪ উইকেটে ৩৬৪ রানের পর থেকে খেলতে নেমে দুই অপরাজিত ব্যাটসম্যান বিরাট ও ঋষভ দ্বিতীয় দিনের শুরু থেকে সাবলীলভাবে রান তুলতে থাকেন৷ ১৮৪ বলে সাতটি বাউন্ডারির সাহায্যে ব্যক্তিগত সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন বিরাট৷ টেস্টে এটি তাঁর কেরিয়ারের ২৪তম সেঞ্চুরি৷ শেষমেশ ২৩০ বলে ১০টি বাউন্ডারির সাহায্যে ১৩৯ রান করে লুইসের বলে দেবেন্দ্র বিশুর হাতে ধরা পড়েন কোহলি৷

পৃথ্বী শ ও বিরাট কোহলির দেখানো পথে যথাযথ এগচ্ছিলেন ঋষভ পন্ত৷ তবে নার্ভাস-৯০’এর ঘরে ঢুকেও নিজের আগ্রাসী মেজাজে রাশ টানতে না পারায় নিশ্চিত শতরান হাতছাড়া হয় তরুণ ভারতীয় উইকেটকিপারের৷ বরং বলা ভালো বাড়তি আক্রমণাত্মক হতে গিয়েই সেঞ্চুরির দোরগোড়া থেকে ফিরতে হয় ঋষভকে৷

মধ্যাহ্নভোজের বিরতির কিছুক্ষণ আগে দেবেন্দ্র বিশুকে তুলে মারতে গিয়ে উইকেট দিয়ে আসেন পন্ত৷ কীমো পলের হাতে ধরা পড়ার আগে ৮৪ বলে ৯২ রানের ঝোড়ো ইনিংস খেলেন তিনি৷ মারেন ৮টি চার ও ৪টি ছয়৷ অথচ একটু ধৈর্য্য দেখাতে পারলে টেস্টে উপর্যুপরি দ্বিতীয় সেঞ্চুরি করতে পারতেন ঋষভ৷ ওভালে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে শেষ টেস্টেও শতরান করেছিলেন তিনি৷

দুই সেট ব্যাটসম্যান আউট হওয়ার পর টেল এন্ডারদের নিয়ে লড়াই জারি রাখেন রবীন্দ্র জাদেজা৷ অশ্বিন ৭ ও কুলদীপ ১২ রান করে আউট হন৷ উমেশ যাদবকে সঙ্গে নিয়ে ব্যক্তিগত হাফসেঞ্চুরি পূর্ণ করার পাশাপাশি দলকে ছ’শোর গণ্ডি পার করান জাদেজা৷ পরে শামির সঙ্গে জুটি বেঁধে পৌঁছে যান কেরিয়ারের প্রথম টেস্ট শতরানে৷ জাদেজা সেঞ্চুরি করার পরেই ভারত ইনিংস ডিক্লেয়ার করে দেয়৷ তিনি অপরাজিত থাকেন ১০০ রানে৷ ১৩২ বলের ইনিংসে জাদেজা ৫টি চার ও ৫টি ছক্কা মারেন৷ শামি নটআউট থাকেন ২ রানে৷

ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে ৪টি উইকেট নেন বিশু৷ দু’টি উইকেট নিয়েছেন নবাগত লুইস৷ একটি করে উইকেট গ্যাব্রিয়েল, চেস ও ব্রাথওয়েটের৷ পাল্টা ব্যাট করতে নেমে ওয়েস্ট ইন্ডিজ শুরু থেকেই উইকেট হারাতে থাকে৷ মাত্র ৭ রানের মধ্যে মহম্মদ শামি ছেঁটে ফেলেন দুই ক্যারিবিয়ান ওপেনারকে৷ ব্রাথওয়েট ২ রান করে বোল্ড হন৷ পাওয়েল ১ রানে এলবিডব্লু৷ শাই হোপ ১০ রান করে অশ্বিনের বলে বোল্ড হন৷ হেতমায়েরকে (১০) ছেলেখেলার ছলে রানআউট করেন জাদেজা৷

বল হাতে নিয়েই অ্যাম্ব্রিসের (১২) উইকেট তুলে নেন রবীন্দ্র জাদেজা৷ ১০ রান করে ডওরিচ বোল্ড হন কুলদীপের বলে৷ কীমো পলকে সঙ্গে নিয়ে দিনের বাকি সময়টুকু কোনও রকমে কাটিয়ে দেন রোস্টন চেস৷ তিনি অপরাজিত রয়েছেন ২৭ রান করে৷ কীমো ব্যাট করছেন ব্যক্তিগত ১৩ রানে৷