অপরাধ করেছিলেন তাই শাস্তি মাথা পেতে নিয়েছেন। দীর্ঘ পাঁচ বছর পর সেই পাপ মচন করে আবারো জাতীয় দলে ফেরার লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন টাইগার দলের সাবেক টেস্ট অধিনায়ক মোহাম্মদ আশরাফুল।এই পাঁচ বছরে বাংলাদেশের ক্রিকেট অনেক এগিয়ে গিয়েছে।এসেছে চোট ও বড় অনেক সাফল্য। এই সব কিছুই দূর থেকে দেখেছেন দর্শক হয়ে। হয়তো তিনিও থাকতে পারতেন টাইগারদের এই সুসময়ের সঙ্গী হতে কিন্তু ফিক্সিংয়ে জড়িয়ে সব কিছুই যেন উলট-পালট হয়ে গিয়েছে তাঁর।
সেই সব ভুলে ক্যারিয়ারের বাকি সময়টুকু জাতীয় দলের হয়ে খেলতে চান দিতে চান অনেক কিছু।সেই স্বপ্ন পূরনের লক্ষে কঠোর অনুশীলন করছেন আশরাফুল। সপ্তাহে পাঁচ দিন জিমে হাড়ভাঙা ঘাম ঝরান। অনুশীলনের জন্য রেখেন নিজস্ব ট্রেইনার।গত আড়াই মাসে ওজন কমিয়েছেন ৮ কেজিরও বেশি। বয়স ৩৫ হলেও এখনো জাতীয় দলের হয়ে ৫-৬ বছর খেলতে চান।নিজের বর্তমান অবস্থা ও জাতীয় দলে থাকাকালীন সময়ে বন্ধু মাশরাফি ও অনেক স্মৃতির কথা শুনালেন বিডিমর্নিংয়ের বিশেষ সাক্ষাৎকারে।
এই বয়সে অনেক খেলোয়াড়রা যখন অবসরের কথা ভাবেন সেখানে জাতীয় দলের হয়ে খেলার কথা ভাবছেন আশরাফুল। তাই প্রথমে জানতে চাইলাম।
প্রশ্নঃ জাতীয় দলে খেলা নিয়ে কতটুকু আশাবাদী?
আশরাফুলঃ অবশ্যই সবাই স্বপ্ন দেখে বাংলাদেশ টিমে খেলার। যেহেতু লাস্ট পাঁচ বছর আমি বাংলাদেশ দলে নাই। ওই দিন থেকেই আমার স্বপ্ন আমি বাংলাদেশ টিমে খেলবো।তার পরেও প্রত্যেকটা জিনিসের জন্য একটা স্টেপ বাই স্টেপ আছে।এখন আমার সামনে লক্ষ্য ন্যাশনাল লিগ শুরু হবে।ঢাকা মেট্রোর হয়ে ন্যাশনাল লিগ খেলবো।আমি যেন ভালো খেলতে পারি। লাস্ট সিজেনটা ঢাকা মেট্রোর প্রথম ম্যাচে ১০০ করেছিলাম।পরে ডেঙ্গু হওয়ার কারনে দুইটা ম্যাচ মিস করে ফেলেছিলাম।পরের দুই ম্যাচ বড় ইনিংস খেলতে পারিনি তবে ব্যাটিং ভালো হয়েছিলো। তো এইবার এই কারনে ন্যাশনাল লিগের প্রথম ম্যাচটি যেন ভালো বড় ইনিংস খেলতে পারি। সেই কারনে লাস্ট আড়াই মাস ধরে ট্রেনিং করছি আশিক ভাইকে নিয়ে।একমাস ঢাকায় করেছি। একমাস ইংল্যান্ডে গিয়ে খেলে এসেছি ম্যাচ প্যাকটিস হয়েছে।তো আমি বিলিভ করি আমি ৮ কেজি ওজন কমিয়েছি লাস্ট আড়াই মাসে।তো মামি বিলিভ করে যে ভালো পারফম্যান্স করলে আমাকে আরেকটা হয়তো বা সুযোগ দিবে ক্রিকেট বোর্ড।এই লক্ষ্য নিয়েই এগোচ্ছি।
প্রশ্নঃ জাতীয় দলের হয়ে কতদিন খেলতে চান?
আশরাফুলঃ ব্যাটসম্যানরা সাধারণত বাইরের দেশ গুলো যদি দেখেন তারা কিন্তু অলমোস্ট ৩৯ ও ৪০ বছর পর্যন্ত ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট খেলে।তো আমাদের দেশে এই কালচারটা এখনো চালু হয়নি।শুধু সুজন ভাই,রফিক ভাই, পাইল্ট ভাইওনারা ও ৩৬,৩৭ বয়সেও খেলেছেন। কিন্ত লাস্ট ১০ বছর ওনারা রিটায়েট করার পরে ওই কালচারটা তৈরি হয়নি বাংলাদেশে যে ৩০ বা ৩৫ পরে ব্যাটসম্যানরা খেলবে।সেই কারনে আমি ট্রেনটা চেঞ্জ করতে চায় পারফম্যান্স দিয়ে।ডোমেস্টিক ক্রিকেটে ভালো খেলে। তারপর সুযোগ পেলে ইন্টারন্যাশনালে ভালো খেলে লম্বা সময় বাংলাদেশের হয়ে খেলতে চায়। কমপক্ষে ৫-৬ বছর বাংলাদেশ টিমে খেলতে চায়।
প্রশ্নঃ বিপিএলে কোন দলে খেলার ইচ্ছা আছে?
আশরাফুলঃ বিপিএলটা খুবই ইমপর্টেন আমি মনে করি।কারন এটা একটা টেলিকাস্ট টুর্নামেন্ট। ইন্টারন্যাশনাল মানের একটা টুর্নামেট বাংলাদেশে হয়।তো এই টুর্নামেন্টে যদি আমি সুযোগ পায়। কোন টিম যদি আমাকে সিলেকশন করে তাহলে আমি মনে করি এখানে পারফম্যান্স করলে। যে প্রশ্নগুলো উঠেছে আমার ফিটনেস স্কিল এই প্রশ্নের উত্তর দিতে পারব।
প্রশ্নঃ জাতীয় দলে থাকাকালীন সময়ে কোন স্মৃতি আছে কি?
আশরাফুলঃ জাতীয় দলে অবশ্যই প্রথম ম্যাচ যখন খেললাম শ্রীলংকার সাথে । সেই সময় থেকে শুরু করে ২০১৩ পর্যন্ত প্রত্যেকটা মুহূর্ত আমার কাছে স্পেশাল ছিলো। আমি আমার ফ্যামেলিকে তো অবশ্যই ভালোবাসি ।কিন্তু সবচেয়ে আমার ওই খেলার পিরডে আমি আমার ফ্যামেলির সাথে ঈদটা একটু বেশি পছন্দ করতাম। তো দেশের হয়ে খেলার কারনে দশটা ঈদ দেশের বাহিরে করেছিলাম টিমের সাথে। তো ওই মুহূর্ত আমার কাছে সব থেকে ফেভারিট আমি মনে করি।কারন ওই সময় যখন আমরা দেশের বাহিরে থাকতাম প্রবাসী বাঙালিরা আমাদের পেয়ে অনেক খুশি হত। ওই জিনিস গুলো আমি খুব ফিল করি বাংলাদেশ টিমে এখন যে নাই । আমি খুব মিস করি।
প্রশ্নঃ মাশরাফির সাথে মজার স্মৃতি?
আশরাফুলঃ মাশরাফি ও আমি ২০০১ থেকে একই সাথে আন্ডার সেভেন্টি খেলেছিলাম এশিয়া কাপে। সেখান থেকে পরিচয়।২০০০ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত আমি মনে করি যে আমরা রুমমেট ছিলাম।যদিও আমরা সিঙ্গেল রুমে থাকতাম।তার পরেও আমরা যখন টুরে যাইতাম যেখা যেত ওর রুমে ও লাগেজ রাখতো আর আমার রুমে আমরা থাকতাম।তো আমাদের ফেন্ডশিপটা এতো ক্লোজ ছিলো।এখনো আছে। লাস্ট ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে মাশরাফির কিছু কথায় আমার পারফম্যান্সে অনেক ডিফারেন্স হয়েছে আমি মনে করি। আমি পারফম্যান্স করছিলাম তার পর ও এসে ওর ফিল থেকে মনে করেছে আমাকে আরো ফিট হওয়া উচিত।কারন স্কেলে আমার কখনো সমস্যা ছিলো না ও ফিল করেছে।তো তার পরে আল্লাহর রহমতে ৬ ইনিংসে ৪টা সেঞ্চুরি ও একটা ফিফটি করেছি। টানা তিন ইনিংসে তিনটা সেঞ্চুরি করেছি। তো ওর ওই কথাটা আমি ভালো ফিল করেছি। আমি বিলিভ করি যেহেতু মাশরাফি বাংলাদেশের সার্ভিস দিচ্ছে এবং অসাধারণ খেলছে । ও একমাত্র ক্রিকেটার যে ৩৪ বছরেও খেলছে। লাস্ট দশ বছরেও এই জিনিসটা বাংলাদেশে নাই। তো আমি বিলিভ করি তাকে দেখে আমি মনে আমি ব্যাটসম্যান আমিও সার্ভিস দিতে পারবো বাংলাদেশকে।