বাংলাদেশ বধির স্পোর্টস ফাউন্ডেশনের আয়োজনে এবং ওয়ালটন গ্রুপের পৃষ্ঠপোষকতায় আগামী ১৪ থেকে ২১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলবে ‘ওয়ালটন বধির টি-টোয়েন্টি ত্রিদেশীয় ক্রিকেট সিরিজ ২০১৮’।
স্বাগতিক বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানকে নিয়ে আয়োজন করা হচ্ছে ত্রিদেশীয় সিরিজটি। ফতুল্লার খান সাহেব ওসমান আলী ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টুর্নামেন্টের ম্যাচগুলো হবে। ডাবললিগ পদ্ধতিতে ফাইনালসহ মোট ম্যাচ হবে ৭টি।
টুর্নামেন্ট সম্পর্কে বিস্তারিত জানাতে বুধবার সকালে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেছিল আয়োজকরা।এতে উপস্থিতি ছিলেন বাংলাদেশ বধির স্পোর্টস ফাউন্ডেশ নের ভাইসপ্রে সিডেন্টজা কির হোসেন খান, পৃষ্ঠ পোষক ওয়ালটন গ্রুপের ডেপুটি এক্সিকিউ টিভ ডিরেক্টর উদয় হাকিম, ওয়ালটন গ্রুপের সিনিয়র সহকারি ডিরেক্টর মিলটন আহমেদ, বাংলাদেশ বধির স্পোর্টস ফাউন্ডেশনের ম্যানেজার ও সমন্বয়ক আনিসুল ইসলাম নিপু।
বাংলাদেশ বধির স্পোর্টস ফাউন্ডেশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট জাকির হোসেন খান তার বক্তব্যে বলেছেন, ‘আমরা দীর্ঘ দিন ধরে ক্রিকেট খেলে আসছি। আমাদের দলটি ২০০৫ সালে যাত্রা শুরু করে।দেশে এবং দেশের বাইরে আমরা একাধিক টুর্নামেন্টে অংশ গ্রহণ করি। আমাদের সাফল্যও বেশ দারুণ।কিন্তু আমরা এ যাবৎ কাল পর্যন্ত কোনো স্পন্সর পায়নি। ওয়ালটন গ্রুপ প্রথম প্রতিষ্ঠান হিসেবে বাংলাদেশ বধির ক্রিকেট দলের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে।এটা আমাদের জন্য অত্যন্ত আনন্দের বিষয় এবং এজন্য ওয়ালটন গ্রুপকে ধন্যবাদ।আশা করছি, ভবিষ্যতেও তারা আমাদেরকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেবেন এবং বাংলাদেশ বধির ক্রিকেট দলকে অনুপ্রাণিত করবেন।’
ওয়ালটন গ্রুপের ডেপুটি এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর উদয় হাকিম বলেন, ‘ওয়ালটন গ্রুপ সব সময় সব ধরনের ক্রীড়ার সঙ্গে যুক্ত হয়। বাংলাদেশ বধির জাতীয় ক্রিকেট দলকে ওয়ালটন গ্রুপ ধন্যবাদ জানাতে চায়।শত বাধা সত্ত্বেও তারা ক্রিকেট খেলছে, বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করছে। এজন্য ওয়ালটন গ্রুপ তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ। ভারত, পাকিস্তান ও বাংলাদেশকে নিয়ে এ টুর্নামেন্ট আয়োজন। আমরা অবশ্যই চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য লড়াই করব।আমরা প্রত্যাশা করছি বাংলাদেশই চ্যাম্পিয়ন হবে। আপনারা সফল হলে আমরা নিশ্চয়ই ভবিষ্যতে আপনাদের সঙ্গে থাকব।এটা হচ্ছে করপোরেট স্যোশাল রেসপনসিবিলিটি (সিএসআর)।সামাজিক দায় বদ্ধতা থেকে আমরা এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছি। বধিররা সমাজে পিছিয়ে পড়া শ্রেণি। তাদের পাশে দাঁড়ানো আমাদের সামাজিক দায়িত্ব।’
‘যত বড় বড় টুর্নামেন্ট আছে যেমন-এশিয়াকাপ, আইসিসি টুর্নামেন্ট কিংবা দ্বিপাক্ষিক যেসব টুর্নামেন্ট হয়, সেসব টুর্নামেন্টে স্পন্সরের অভাব হয় না। কিন্তু দেশের ঘরোয়া ক্রিকেটে কেউ ফিরে তাকায় না। কোনো স্পন্সর পাওয়া যায় না। অথচ ঘরোয়া ক্রিকেট হচ্ছে ক্রিকেটার গড়ার আসল জায়গা। এটা হচ্ছে পাইপ লাইন।ওয়ালটন গ্রুপ এই পাইপলাইন তৈরির কাজটা করে। দেশের ঘরোয়া ক্রিকেটে একমাত্র স্পন্সর ওয়ালটন’ – যোগ করেন উদয় হাকিম।
ওয়ালটন গ্রুপের সিনিয়র এডিশনাল ডিরেক্টর মিলটন আহমেদ বলেছেন, ‘বাংলাদেশ বধির স্পোর্টস ফাউন্ডেশনের সঙ্গে এবারই প্রথম ওয়ালটন গ্রুপ যুক্ত হলো। মাঠে আপনাদের সাফল্যের ওপর নির্ভর করবে আমাদের পরবর্তী যাত্রা। আশা করছি, এই ত্রিদেশীয় টুর্নামেন্টের মধ্য দিয়ে আপনারা নতুন দিগন্তের সূচনা করবেন। খেলাধুলায় ভারত ও পাকিস্তান আমাদের কঠিন প্রতিপক্ষ। সেটা ক্রিকেট, ফুটবল সব ক্ষেত্রেই। এবার সেই উত্তেজনা থাকবে আপনাদের ক্রিকেটে। দুই প্রতিপক্ষকেই হারিয়ে বাংলাদেশ বধির ক্রিকেট দল চ্যাম্পিয়ন হবে সেই প্রত্যাশা করছি।’
টুর্নামেন্টে প্রতিটি ম্যাচে ম্যাচ সেরার পুরস্কার দেবে ওয়ালটন গ্রুপ । টুর্নামেন্টের চ্যাম্পিয়ন দল ট্রফিসহ পাবে ৫০ হাজার টাকা এবং রানার্স আপ দল ট্রফির সঙ্গে পাবে ২৫ হাজার টাকা।
বাংলাদেশ বধির ক্রিকেট দলের অধিনায়ক শাহরিয়ার আহমেদ চৌধুরী ওয়ালটন গ্রুপকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘আমরা দীর্ঘ দিন ধরে ক্রিকেট খেলছি। কিন্তু কখনো কোনো স্পন্সর পাই নি। এবার ই প্রথম কোনো স্পন্সর আমাদের দলের প্রতি আগ্রহ দেখিয়েছে। আমরা আমাদের অভিভাবক পেয়েছি। আমরা আমাদের দল নিয়ে আশাবাদী। আমরা আগেও বাইরে খেলেছি, এবার দেশে খেলব। ক্রিকেট অনেক ব্যয় বহুল খেলা। আমাদের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলে আমরা আরো সাফল্য পাব বলে বিশ্বাস করি।’
ত্রিদেশীয় সিরিজে অংশ নিতে বৃহস্পতিবার বাংলাদেশে এসে পৌঁছাবে ভারত ও পাকিস্তান বধির ক্রিকেট দল।
বাংলাদেশ স্কোয়াড: শাহরিয়ার আহমেদ চৌধুরী (অধিনায়ক), রাসেল আহমেদ, ওয়াহিদুল আলম মুমিন, আফসার উদ্দিন রিয়াদ, আকসার আহমেদ, আহমেদ আব্দুল্লাহ আলহাসিব (উইকেটরক্ষক), রুবেল হোসেন, সোহেল, ইমরান খান, আহমেদ নাফিস ইমতিয়াজ দ্বীপ, জি. এম. মাহাবুবুর রহমান সেতু, ইম্মি চৌধুরী, আকিব মাহমুদ, সাঈদুর রহমান, রায়হান মনির।