ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডেও এবার #MeToo-র ছায়া! বিসিসিআই-এর প্রধান নির্বাহীর রাহুল জহরির বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ এনেছে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নারী। এক সপ্তাহের মধ্যে জহরিকে বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের ব্যাখ্যা দিতে বলেছে সুপ্রিম কোর্ট নিযুক্ত বোর্ডের কমিটি অফ অ্যাডমিনিস্ট্রেটরস (সিওএ)৷
২০১৬ থেকে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের সিইও-র পদে আছেন জহরি৷ ২০১৬ বোর্ডের সিইও পদে যোগ দেওয়ার আগে সাউথ এশিয়ার ফর ডিসকোভারি নেটওয়ার্কস এশিয়া পেসিফিকের একজিকিউটিভ ভাইস-প্রেসিডেন্ট এবং জেনারেল ম্যানেজার ছিলেন জহরি৷ শুক্রবার তার বিরুদ্ধে সোশ্যাল মিডিয়ায় যৌন হেনস্থার অভিযোগ আনেন নাম জানাতে অনিচ্ছুক এক মহিলা৷ শনিবার মিডিয়ায় এ খবর প্রকাশিত হওয়ার পর জহরিকে তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের ব্যাখ্যা দিতে বলে সিওএ৷
এক বিবৃতিতে বিসিসিআইয়ের সিওএ জানায়, ‘কিছু মিডিয়ার রিপোর্ট এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় বিসিসিআই সিইও রাহুল জহরির বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ উঠেছে৷ টুইটার হ্যান্ডলে নাম গোপন করে এই অভিযোগ করেছেন৷ যদিও ঘটনাটি ঘটেছিল জহরির আগের মিডিয়া কোম্পানিতে কাজ করার সময়৷’
‘মি টু’ আন্দোলনের মাঝেও এখনো অনেকেই আছেন যাঁরা সরাসরি নিজেদের নাম প্রকাশ করতে ভয় পাচ্ছেন। অনেকেই সামাজিক হেনস্তার ভয়ে নিজেদের ঘটনা প্রকাশ করতে চাচ্ছেন না। তাঁদের সুযোগ করে দিয়েছেন লেখিকা হারনিধ কৌর ও প্লেব্যাক গায়িকা চিন্ময়ী শ্রীপদ। যৌন হেনস্তাকারীদের নাম জানিয়ে সে ঘটনা টুইটারে মেসেজ হিসেবে পাঠিয়ে দিচ্ছেন ভুক্তভোগীরা। আর সেটা প্রকাশ করছেন তাঁরা। এমনই একটি স্ক্রিনশট দেখিয়েছেন কৌর। সেখানে একজন ভুক্তভোগী দাবি করেছেন, চাকরির কথা বলে বাসায় ডেকে তাঁকে হেনস্তা করেছেন জোহরি। জোহরি তখন এখন শীর্ষ স্যাটেলাইট চ্যানেলের বিক্রয় বিভাগের প্রধান ছিলেন। টুইটারে লেখা সে অভিযোগে বলা হয়েছে,
‘রাহুল জোহরি: বিসিসিআইয়ের বর্তমান প্রধান নির্বাহী, ডিসকভারি চ্যানেলের সাবেক কর্মকর্তা। রাহুল সাবেক সহকর্মী ছিলেন। রাজের বাসায় পার্টিতে, মিডিয়াতে সফল ব্যবসা গড়ার সময় এবং বিভিন্ন চ্যানেলে কাজ করার পুরো সময়টায় আমার সঙ্গে যোগাযোগ ছিল।’
মেসেজে দাবি করা হয়েছে, একবার একটি চাকরি নিয়ে আলোচনার সময় জোহরি তাঁকে বাসায় যাওয়ার প্রস্তাব দেন। অভিযোগ দেওয়া নারীর দাবি, জোহরির স্ত্রীর সঙ্গে তাঁর পরিচয় ছিল। এর আগে দেখা করেছেন, দুজনকে বাসায় দাওয়াত করে খাইয়েছেন। দুজনে যখন বাসার কাছে পৌঁছালেন, তখন জোহরি পকেট থেকে চাবি বের করতেই সন্দেহ হয়েছিল তাঁর। জিজ্ঞাসা করেছিলেন, স্ত্রী বাসায় নেই এটা কেন জানাননি জোহরি। জবাবে বর্তমান ক্রিকেট বোর্ড কর্মকর্তা বলেছিলেন, এটা জানানোর মতো কিছু না। বাসায় ঢুকে পানি চাইলে প্যান্ট নামিয়ে জোহরি এগিয়ে আসেন এবং হয়রানি করেন—এমনটাই অভিযোগ করা হয়েছে।
‘সে ঘটনার দায় এখনো বহন করছি আমি, নিজেকে দোষ দিয়েছি—ভেবেছি আমিই হয়তো নিজেকে আগ্রহী দেখিয়েছি, কিন্তু আমার সেটা মনে হয় না। আমি এখনো এ নিয়ে বিভ্রান্তিতে আছি। বছরের পর বছর আমি নিজেকে ছোট বলেছি। কিন্তু সত্য হলো, এত দ্রুত সে ঘটনা ঘটেছে এবং এত বিশ্রী ছিল ঘটনাটি যে আমার বোঝার উপায়ই ছিল না কী হচ্ছে।’