ঢাকাই সিনেমার আলোচিত নায়ক অনন্ত জলিল। তিনি একাধারে প্রযোজক ও পরিচালকও। এই ব্যবসায়ী অভিনেতা নানা রকম সামাজিক কার্যক্রমে অংশ নিয়ে অনেক প্রশংসিত হয়েছেন। প্রায় সময় নানা মন্তব্য করে আলোচনারও জন্ম দেন। এবার তিনি সবার আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে ধর্ষণ নিয়ে চলমান প্রতিবাদ-আন্দোলন নিয়ে মুখ খুলে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি ভিডিও শেয়ার করেছেন তিনি। সেখানে ধর্ষকদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির দাবি করেছেন। সেই সঙ্গে দেশের নারীদের পোশাককেও ধর্ষণের জন্য কাঠগড়ায় তুলেছেন। তার মতে, শালীন পোশাক পরা নারী কখনোই ধর্ষণের শিকার হয় না। পোশাক ভালো না হলে তার শরীর-ফিগার দেখে বাজে স্বভাবের লোকজন ধর্ষণের উসকানি পায়।
সেই বক্তব্যের জন্য আজ দারুণভাবে সমালোচিত হন তিনি। তার ভিডিও শেয়ার করে অনেকেই প্রতিবাদ জানান। একজন অভিনেতার কাছ থেকে এমন মন্তব্য হতাশাজনক বলে দাবি করেন তারা।
অবশেষে সেই প্রতিবাদ ও সমালোচনার মুখে নিজের ভিডিওতে সংশোধন এনেছেন অনন্ত জলিল। প্রথমে পোস্ট করা ভিডিওতে নারীর পোশাক সংক্রান্ত সব মন্তব্য মুছে দিয়েছেন। সেটি সম্পাদনা করেছেন। ৬ মিনিটের ভিডিও এখন ৩ মিনিটের। এটিও নতুন করে পোস্ট দিয়েছেন তিনি। নতুন ভিডিওতে অনন্ত’র প্রশংসাই করছেন সবাই।
গতকালকের ভিডিওতে আমি মূলত মেয়েদেরকে শালীনতা বজায় রাখার জন্য বলতে চেয়েছি। অনেকেই বিষয়টিকে পজিটিভভাবে নিয়েছেন, আবার অনেকেই নেগেটিভভাবে নিয়েছেন। আমি কোন বিতর্কে জড়াতে চাইনা। তাই আমি উক্ত বিষয়টি কারেকশন করে দিলাম। কেউ ভুল বুঝে থাকলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।
এর আগে গতকাল দেশজুড়ে ধর্ষণ ও নিপীড়নবিরোধী প্রতিবাদের মধ্যে শনিবার রাতে নিজের ফেইসবুক পেইজে ‘ধর্ষকদের শিক্ষা দিলেন অনন্ত জলিল’ শিরোনামে ওই ভিডিওবার্তা প্রকাশ করেন অনন্ত জলিল।
‘ভাই’ হিসেবে নারীদের ‘শালীন’ পোশাক পরার আহ্বান জানিয়ে তিনি সেখানে বলেন, “তোমাদের অশালীন ড্রেসের কারণে তোমাদের ফিগারের দিকে তাকিয়ে বিভিন্নভাবে মন্তব্য করে এই বখাটে ছেলেরা এবং র্যাপ (রেপ) করার চিন্তা তাদের মাথায় আসে।
“শালীন ড্রেস পরলে যারা বখাটে ছেলে যাদের মাথায় ধর্ষণের চিন্তা-ভাবনা আসে, তারাও কোনও এই ধরনের চিন্তা করবে না। শ্রদ্ধার সঙ্গে তোমার দিকে তাকাবে। এবং তাকিয়ে থাকার পর চোখ নিচের দিকে নিয়ে তোমাকে সম্মান জানাবে।”
“মডার্ন ড্রেস যেটা হবে, সেটাতে তোমার ফেইসটা দেখা যাবে, যেটা আল্লাহ তায়ালা তোমাকে দিয়েছেন। কিন্তু বডিতে শালীন ড্রেস পরতে হবে। যে ড্রেসটা পরলে তোমাকে ভালো লাগবে।
“ছেলেদের মত একটা টি-শার্ট পরে তোমরা রাস্তায় বের হয়ে যাও। মডার্ন মেয়ে তুমি। ইজ্জত শেষ হলে যখন বাসায় যাও তখন আত্মহত্যা করো, আর যদি আত্মহত্যা নাও করো, মানুষের সামনে আর মুখ দেখাতে পারো না।”
ওই ভিডিওবার্তার শুরুতে অনন্ত জলিল ধর্ষকদের উদ্দেশে বলেন, “তোমাদের সামনে তোমাদের স্ত্রী কন্যাকে যদি কেউ র্যাপ (রেপ) করে, তাহলে তোমার কেমন লাগবে? তুমি তো একটা অমানুষ, তোমার ভালোই লাগবে মনে হয় না? না হলে তো অন্যের মেয়েকে, অন্যের মা বোনকে র্যাপ (রেপ) করতে পারতে না। তোমার যে মনুষত্ব সেটা তো মরে গেছে।”
আর ভিডিও বার্তার শেষ দিকে ধর্ষকদের মৃত্যুদণ্ড চেয়ে প্রধানমন্ত্রীর আছে আর্জি জানান এই চলচ্চিত্র অভিনেতা।
“মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমার আকুল আবেদন, আপনি আমাদের অভিভাবক। আপনাকেই শক্ত হাতে এসব অমানুষের মৃত্যুদণ্ডের আইন ও বাস্তবায়নের সুব্যবস্থা করতে হবে। কারণ আপনার দিকেই সবাই তাকিয়ে আছে, আপনি কখন নির্দেশনা দেবেন।”