Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৪ বুধবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১১ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

দুর্ঘটনার পর স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারছেন না অহনা

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৪ জানুয়ারী ২০১৯, ০৪:১৮ PM আপডেট: ২৪ জানুয়ারী ২০১৯, ০৪:১৮ PM

bdmorning Image Preview


চলতি মাসের গত ৯ জানুয়ারি দিবাগত রাত সোয়া ৩টার দিকে সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হন টেলিভিশনের জনপ্রিয় মুখ অহনা। বেশ কয়েক দিন চিকিৎসা শেষে কিছুটা সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরেছেন তিনি। তবে এখনো হুইল চেয়ারের চাকায় ভর করে চলছেন এই অভিনেত্রী। তবে সেই রাতের ঘটনার ভয়াবহতা এখনো ভুলতে পারছেন না তিনি।

সেই রাতের বর্ণনা দিয়ে অহনা বলেন, ‘সেদিন পুরান ঢাকায় এক বন্ধুর গায়েহলুদ অনুষ্ঠান শেষ করে বাসায় ফিরছিলাম। অনেক রাত হয়ে গিয়েছিল। সঙ্গে খালাতো বোন লিজা মিতুকে নিয়ে ২টা থেকে আড়াইটার দিকে বের হই। গাড়ি চালাচ্ছিলাম আমি। হাউস বিল্ডিং হয়ে ৭ নম্বরে সেক্টরে পৌঁছলে দেখি আমার পেছনে একটি পাথরবোঝাই ট্রাক।

ট্রাকটি হঠাৎ তার গতি বাড়িয়ে দিয়ে আমাকে ওভারটেক করে। আর সেটি করতে গিয়ে আমার গাড়ির সামনের অংশে লাগিয়ে দেয়। আমি গাড়িটা একটু আড়াআড়িভাবে দাঁড় করিয়ে ট্রাকটাকে থামাই। লিজাকে ভিডিও করতে বলে আমি গাড়ি থেকে নেমে গিয়ে ট্রাক ড্রাইভারকে জিজ্ঞেস করি- এটি কী করলেন? চালক উত্তর দেয়, যা করছি ঠিকই আছে।

ট্রাকটা উঁচু হওয়ায় নিচ থেকে ঠিকমতো কথা বলা ও শোনা যাচ্ছিল না। তখন আমি তাকে নেমে আসতে বলি। কিন্তু সে আমার কথা কানে না নেয়ায় বাধ্য হয়ে ট্রাকের পা রাখার জায়গায় দাঁড়াই। এ সময় চালকের পাশে বসে থাকা ১৪-১৬ বছর বয়সী তার সহকারী আমাকে দেখে। ওই ছেলেটি চালককে বলে ওঠে, ‘ওস্তাদ, এটি কিন্তু নায়িকা, উনি বাঁইচা গেলে আমরা কিন্তু ফাঁইসা যামু!’

এটি শুনে আমি অবাক হই এবং ভয় পেয়ে যাই। সঙ্গে সঙ্গে লিজাকে পুলিশে কল দিতে বলি। ঠিক তখনই ট্রাকটা চালক ছেড়ে দেয়। আমি শক্ত করে ট্রাকের দরজায় ঝুলে থাকি। চালক শুরুতে আমাকে ফেলে দেয়ার চেষ্টা করে। এরপর সে ট্রাক চালিয়ে বিভিন্ন ল্যাম্পপোস্টের সঙ্গে আমাকে বাড়ি দেয়ার চেষ্টা করে। আমি যে কীভাবে তখন শক্ত করে এই ঠাণ্ডার মধ্যে ট্রাকের হাতল ধরে দাঁড়িয়ে ছিলাম তা এখন আর বলতে পারব না।

ওরা ট্রাকটা নিয়ে সোজা ১২ নম্বর সেক্টরের আগে রেডিকেল মেডিকেলের সামনে নিয়ে যায়। এর মধ্যে চালক তার সহকারীকে একটি জায়গা দেখিয়ে বলে, এইটারে গাড়িসহ এখানে ফালায়া দিমু। বাঁচলে বাঁচল, মরলে তো গেলই। তোরে যখন বলব তখন দৌড় দিবি।

আমি তাদের কথাবার্তা সবই শুনতে পারছিলাম। ওই সময় আমি সৃষ্টিকর্তাকে স্মরণ করছিলাম আর আমার মায়ের মুখটা মনে পড়ছিল। অনেকটা নিশ্চিত ছিলাম যে, একটু পরই মরে যাব। হঠাৎ ট্রাকটা হার্ডব্রেক করে একটি সুপারশপের পাশে রাখা কাচের ওপর ফেলে দেয় আমাকে। আমার সৌভাগ্য যে কাচের ওপর পড়িনি।’

তিনি আরো বলেন, ‘টিস্যু ছিঁড়ে গেছে। খুব ব্যথা হয়। এভাবে দুর্ঘটনায় না পড়লে বুঝতাম না মানুষ কতটা অসহায় হয়ে পড়ে। তিন মাসের মধ্যে কোমরের টিস্যুর ক্ষত সেরে না উঠলে বিদেশে গিয়ে চিকিৎসা নিতে হবে বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। কয়েক রাত ধরে ঘুমাতে পারছি না আমি। ঘটনাটি এমনভাবে মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে যে, স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারছি না।’

Bootstrap Image Preview