সংসদের সংরক্ষিত নারী আসনে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এরই মধ্যে নতুন মেয়াদে সংরক্ষিত নারী আসনে এমপি হতে সরব হয়েছেন আওয়ামী লীগের নেত্রীরা। রাজনীতিতে সক্রিয় বিভিন্ন পেশাজীবী নারীদের পাশাপাশি আলোচনায় আছেন অভিনেত্রীরা। সূত্রে জানা গেছে, ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝিতে তফসিল দিয়ে মার্চের মধ্যেই ভোটগ্রহণ করা হবে।
শহীদ বুদ্ধিজীবী শহীদুল্লা কায়সারের মেয়ে শমী কায়সার। তিনিও গেল কয়েক বছর ধরে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সক্রিয় হয়েছেন। গেল একাদশ সংসদ নির্বাচনে তিনিও রোকেয়া প্রাচীর সঙ্গে নৌকার প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন চেয়েছিলেন ফেনী-৩ আসনে। সরাসরি নির্বাচনের টিকিট না পেলেও তিনিও আশা করছেন সংরক্ষিত নারী আসনের মনোনয়ন পেয়ে দেশ ও দশের জন্য কাজ করবেন। আলোচনায় আছেন অভিনেত্রী অপু বিশ্বাস। সংরক্ষিত নারী আসনে এমপি হতে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চান তিনি।
অভিনেত্রী সুজাতা অনেকদিন থেকেই জড়িত রয়েছেন আওয়ামী সাংস্কৃতিক জোটের সঙ্গে। এ ছাড়া বঙ্গবন্ধু শিল্পী ঐক্যজোট, শিল্পী সংঘ, শিল্পী সমিতিসহ পরিচালক সমিতি, প্রযোজক সমিতির মতো নানা পেশাজীবী সংগঠনের সঙ্গে তিনি নিবিড়ভাবে জড়িত। এবার তিনি সংরক্ষিত নারী আসনে সংসদ সদস্য হতে চাচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘সাধারণ মানুষের পাশে থেকে তাদের জন্য কাজ করতে চাচ্ছি।’ মিষ্টি মেয়ে কবরী দীর্ঘদিন থেকে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে জড়িত। ২০০৮ সালে সংসদে সরাসরি ভোটে এমপি হয়েছিলেন। এবার তিনি সংরক্ষিত নারী আসনে এমপি হতে চান। তিনি বলেন, ‘জনসাধারণের জন্য আমি আগেও কাজ করেছি। আবার তাদের সুখ-দুঃখে পাশে থেকে কাজ করার আশা করছি।’
শিক্ষাজীবন থেকেই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন নাট্যনির্মাতা ও অভিনেত্রী তারানা হালিম। গত দুবার আওয়ামী লীগ সমর্থিত সংরক্ষিত নারী আসনের তিনি সংসদ সদস্য। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পাননি। তবে এবারও সংরক্ষিত নারী আসনে সংসদ সদস্য হতে চাচ্ছেন এই অভিনেত্রী। তিনি বলেন, ‘দল থেকে চাইলে আমি আবার সংসদ সদস্য হবো। আর সদস্য হয়ে নারী উন্নয়নে কাজ করে যাবো।’ দীর্ঘদিন ধরেই রাজনীতিতে সক্রিয় রোকেয়া প্রাচী। নিয়মিতই তাকে রাজপথে পাওয়া যায় আওয়ামী লীগের কার্যক্রমে। তিনি বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগের সংস্কৃতিবিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন। ফেনী-৩ আসনে নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশীও ছিলেন এই অভিনেত্রী। তার আগে চালিয়েছিলেন প্রচারণা। শেষ পর্যন্ত টিকিট পাননি। এবার তিনি আশা করছেন সংরক্ষিত আসনে দল থেকে মনোনয়ন পাবেন ও নির্বাচিত হয়ে নারী সমাজের জন্য কাজ করবেন।
নারী আসনের জন্য মনোনয়নপত্র কিনেছেন চিত্রনায়িকা মিষ্টি জান্নাত। বৃহস্পতিবার দুপুরে মনোনয়ন ফরম কিনেছেন তিনি। যদিও এই নায়িকা রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন না। তবে তার পরিবারের সদস্যরা আওয়ামী রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। সংরক্ষিত নারী আসনের মনোনয়নপত্র কিনে রাজনীতিতে সক্রিয় হতে চাচ্ছেন মিষ্টি। মনোনয়নপত্র কিনেছেন অভিনেত্রী রওনক বিশাখা শ্যামলী। তিনি দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের রাজনীতি করছেন। তিনি শরীয়তপুর জেলা তাঁতীলীগের সিনিয়র সহসভাপতি।
নারী আসনের জন্য মনোনয়ন চাইছেন অভিনেত্রী জ্যোতিকা জ্যোতি। ছাত্রজীবন থেকেই জ্যোতি সক্রিয় আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে। সংরক্ষিত নারী আসনের জন্য আওয়ামী লীগের মনোনয়নপত্র কিনেছেন চিত্রনায়িকা মৌসুমী। এর পর থেকেই তাকে ঘিরে ফেসবুকে নানা গুঞ্জন শুরু হয়। কেউ কেউ বলছেন, মৌসুমী এক সময় জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক সংগঠনের (জাসাস) নেত্রী ছিলেন। পাশাপাশি ওই সময়ের একটি ছবিও ফেসবুকে ভাইরাল করা হয়। তবে এসব গুঞ্জন উড়িয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে মৌসুমী জানিয়ে দেন, তিনি কখনই কোনো দল করেননি। তবে মনেপ্রাণে আওয়ামী লীগকে সমর্থন করেন।
জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত নারী আসনের জন্য এ ছাড়া মনোনয়নপত্র ক্রয় করেছেন আনোয়ারা, ফাল্গুনী হামিদ, সুবর্ণা মুস্তাফা, নূতন, অঞ্জনা, নিপুণ, অরুণা বিশ্বাস, তারিন, শাহনূরসহ অনেকে। যারাই মনোনয়ন কিনেছেন সবার একটাই কথা, সংসদ সদস্য হয়ে দেশের উন্নয়নের জন্য নিরলসভাবে কাজ করবেন।