বর্তমানে ইউটিউব, নেটফ্লিক্সের দিকে বেশি ঝুঁকেছেন দর্শকরা। এই চাহিদা বিবেচনা করে এখন সারাবিশ্বেই নির্মাতারা তৈরি করছে ওয়েব সিরিজ। বলিউড ও টালিউডের তারকারা অনেক আগেই ওয়েব সিরিজে অভিনয় শুরু করেছেন। এবার এই মাধ্যমে নতুন ভাবে দেখা মিলবে ঢালিউড তারকাদের। এই তালিকায় রয়েছেন পপি, আঁচল, পরীমনি, এ বি এম সুমন, বিপাশা কবির, জলি, সাঞ্জু জন, শিপন, দিপালী প্রমুখ।
সম্প্রতি ‘ইন্দুবালা’ নামে ১২ পর্বের ওয়েব সিরিজে অভিনয় করেছেন চলচ্চিত্র তারকা পপি, আঁচল এবং এ বি এম সুমন। ইনোভেট সলিউশনের ব্যানারে নির্মিত এই সিরিজটির প্রচারণা চলছে। এ মাসের শেষের দিকে সিরিজটি ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ‘সিনেস্পট’ এ মুক্তি পাবে।
গত সপ্তাহে গিয়াস উদ্দিন সেলিমের প্রীতি সমাচার নামে এক পর্বের ওয়েব কনটেন্টে অভিনয় করতে দেখা যায় পরীমনিকে। এটি বায়োস্কোপ অরিজিনালে উঠবে। এছাড়া আগামী ১লা ডিসেম্বর থেকে হিমেল আশরাফের পরিচালনায় শুরু হতে যাচ্ছে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শেষের কবিতা নিয়ে ১২ পর্বের একটি ওয়েব সিরিজ নির্মাণের কাজ। সেখানে লাবণ্য চরিত্রে দেখা যাবে চিত্রনায়িকা পরীমনিকে।
চলতি মাসের শুরুতেই অস্ট্রেলিয়ায় আঘাত নামে ১০ পর্বের একটি ওয়েব সিরিজে অভিনয় করেন বিপাশা কবির ও দিপালী। এছাড়াও ফোনএক্স নামে ১২ পর্বের একটি ওয়েব সিরিজ প্রচারিত হচ্ছে সিনেস্পটে এবং সেখানে প্রধান চরিত্রে রয়েছেন অভিনেত্রী জলি। এই সিরিজে প্রতিটির ব্যাপ্তি রয়েছে ২০-৩০ মিনিট।
ওয়েব সিরিজ এবং ওয়েব কনটেন্টের প্রতি চলচ্চিত্র তারকাদের এই আগ্রহ বাড়ার কারণ হিসেবে অনেকেই মনে করছেন যে, অনলাইনের বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে এখন বিশ্বব্যাপী বাড়ছে অনেক পরিচিতি। আর তা ছাড়া ওয়েব কনটেন্টগুলোর বাজেটও বেশ ভালো থাকে এবং এগুলো অনেকটা সিনেমার মতোই তৈরি হয়। আর কেউ কেউ মনে করছেন, বর্তমান সময়ে সিনেমা নির্মাণটা অনেকটাই কমে গেছে এবং সেই জন্যই বিকল্প পথ হিসেবে তারা বেছে নিচ্ছেন এই ক্ষেত্রকে।
এ প্রসঙ্গে পপি বলেন, ‘বর্তমান যুগে কাজের ধারার অনেক পরিবর্তন হয়ে গেছে। আর এই যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়েই আমাদের কাজ করতে হবে। ওয়েব সিরিজ এবং ওয়েব কনটেন্টের যুগ তো অনেক আগেই শুরু হয়ে গেছে যা কিনা টালিউড ও বলিউডের তারকারাও অনেক আগে থেকেই এই মাধ্যমে কাজ শুরু করেছেন। আর ভালো কাজ হলে আমি সব মাধ্যমেই কাজ করতে চাই।’
আঁচল বলেন, ‘আসলে এখন সিনেমা বাজার এমন পর্যায়ে চলে গেছে যে এক শাকিব খানের ছবি ছাড়া অন্যদের সিনেমা তেমন একটা দর্শক দেখা না যার জন্য সিনেমা তৈরিও অনেকটাই কমে গেছে। আর এই পরিস্থিতিতে কম বাজেটের সিনেমাতে কাজ না করে ওয়েব সিরিজে কাজ করাটা অনেক ভালো।’
এ বি এম সুমন বলেন, ‘ডিজিটাল এই যুগে সবকিছুই এখন রয়েছে মানুষের হাতের নাগালে। এখন আর মানুষ প্রেক্ষাগৃহে গিয়ে সিনেমা ততটা দেখতে চায় না। কেননা এখন হাতের মোবাইল ফোন দিয়ে এসব কনটেন্ট কোনো বিজ্ঞাপনের ঝামেলা ছাড়াই তারা দেখার সুযোগ পাচ্ছেন।’
তবে তিনি মনে করেন, আসলে এসব ওয়েব সিরিজগুলোও মানুষ অর্থ খরচ করে দেখছেন আর সে জন্য এই সকল কনটেন্টগুলোর নির্মাণ অবশ্যই আন্তর্জাতিক মানের হওয়া উচিত।
অভিনেত্রী পরীমনি এর আগেও অনেক ওয়েব সিরিজ ও এক পর্বের ওয়েব কনটেন্ট করার প্রস্তাব পেয়েছেন, কিন্তু তিনি কখনও করেননি। এবার তিনি মূলত চরিত্রের লোভে পড়েই এই কাজটি করছেন। পরীমনি বলেন, ‘আসলে শেষের কবিতার এই লাবণ্য চরিত্রটি আমি হাতছাড়া করতে চাইনি। এই চরিত্রটি নিয়ে যেকোনো কিছু তৈরি হলেই সেটাতে কাজ করতে রাজি হতাম আমি।’