হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে শনিবার দিবাগত রাত ১টার দিকে রাজধানীর বারিধারায় নিজ বাসভবনে মৃত্যুবরণ করেন কিংবদন্তী শিল্পী শাহনাজ রহমত উল্লাহ। ১৯৫২ সালে জন্মগ্রহণ করা শাহনাজ রহমত উল্লাহ ব্যক্তিগত জীবনে ১৯৭৩ সালে আবুল বাশার রহমত উল্লাহ সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। এই দম্পতির এক কন্যা ও এক পুত্র রয়েছে। তারা হলেন- নাহিদ রহমত উল্লাহর এবং একেএম সায়েফ রহমত উল্লাহ।
আনুষ্ঠানিকভাবে ১৯৬৪ সালে রেডিও ও চলচ্চিত্রে গান গাইতে শুরু করেন শাহনাজ রহমত উল্লাহ। ২০১৪ সালে পঞ্চাশ বছর পূর্তি হয় তার ক্যারিয়ারের।
তিনি তার দীর্ঘদিনের ক্যারিয়ারে গেয়েছেন অসংখ্য কালজয়ী গান। অর্জন করেছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, বাচসাস পুরস্কার। রাষ্ট্র তাকে সম্মানিত করেছে একুশে পদকেও। তবে শাহনাজ রহমত উল্লাহ চিরকাল শ্রদ্ধার আসনে থাকবেন বাংলা গানের ইতিহাসে সেরা বিশের তালিকার চার গানের শিল্পী হিসেবে।
২০০৬ সালের মার্চ মাস জুড়ে বিবিসি বাংলার শ্রোতারা তাদের বিচারে সেরা যে পাঁচটি গান মনোনয়ন করেছেন, তার ভিত্তিতে বিবিসি বাংলা তৈরি করেছে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ ২০ টি বাংলা গানের তালিকা। সেই তালিকায় চারটি গান রয়েছেন শাহনাজ রহমত উল্লাহ গাওয়া। তার মধ্যে ৯ নম্বরে আছে ‘এক নদী রক্ত পেরিয়ে’ গানটি। এই গানের গীতিকার ও সুরকার খান আতাউর রহমান।
তালিকায় ১৩ নম্বর স্থান দখল করে আছে শাহনাজের গাওয়া ‘জয় বাংলা বাংলার জয়’ গানটি। এই গানের গীতিকার মাজহারুল আনোয়ার ও সুরকার শিল্পীর বড় ভাই আনোয়ার পারভেজ। এই গানটি স্বাধীন বাংলা বেতারের সূচনা সংগীত হিসেবে তৈরি করা হয় ১৯৭০ সালে। এটি বাঙালির জাতীয় স্লোগানও।
তালিকার ১৫ নম্বর গানটি ‘একবার যেতে দে না আমার ছোট্ট সোনার গাঁয়’। শিল্পী শাহনাজ রহমত উল্লাহর গাওয়া এই গানের গীতিকার মাজহারুল আনোয়ার ও সুরকার আনোয়ার পারভেজ।
‘একতারা তুই দেশের কথা বল’ গানটি রয়েছে ১৯ নম্বর স্থানে। এই গানটিও আনোয়ার পারভেজের সুরে গাজী মাজহারুল আনোয়ারের কথায় গেয়েছেন শাহনাজ রহমত উল্লাহ।
তবে গাজী মাজহারুল আনোয়ারেরই লেখায় ‘প্রথম বাংলাদেশ আমার শেষ বাংলাদেশ’ গানটি দেশের অন্যতম রাজনৈতিক দল বিএনপি তাদের দলীয় সংগীত হিসেবে বেছে নিলে কিছুটা বিতর্কের মধ্যেও পড়ে যান শাহনাজ রহমত উল্লাহ। এই গানটিও তুমুল জনপ্রিয় বাংলা গানের শ্রোতাদের কাছে।
এই গায়িকার বড় ভাই সুরকার আনোয়ার পারভেজ ও ছোট ভাই প্রয়াত চিত্রনায়ক জাফর ইকবাল।