Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৯ শুক্রবার, মার্চ ২০২৪ | ১৫ চৈত্র ১৪৩০ | ঢাকা, ২৫ °সে

যেসব কাজ দিয়ে আজীবন বেঁচে থাকবেন আমজাদ হোসেন

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৪ ডিসেম্বর ২০১৮, ১০:২৯ PM আপডেট: ১৪ ডিসেম্বর ২০১৮, ১০:২৯ PM

bdmorning Image Preview


ব্যাংককের বামরুনগ্রাদ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ শুক্রবার (১৪ ডিসেম্বর) দুপুর ৩টার দিকে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন দেশীয় চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি নির্মাতা আমজাদ হোসেন। কিন্তু নিজ কর্ম দিয়ে আজীবন বেঁচে থাকবেন বাংলা সাহিত্য ও চলচ্চিত্র অঙ্গনের এই কিংবদন্তী।

আমজাদ হোসেন একাধারে একজন চলচ্চিত্র পরিচালক, প্রযোজক, গল্পকার, অভিনেতা, গীতিকার ও সাহিত্যিক হিসেবে পরিচিত।তার জন্ম ১৯৪২ সালের ১৪ আগস্ট, জামালপুরে। তার নির্মিত ছবিগুলো খুব সহজেই দর্শক হৃদয়কে করেছে আকৃষ্ট।

আমজাদ হোসেনের পরিচালনায় জনপ্রিয়তা পাওয়া ছবিগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘বাল্যবন্ধু’, ‘পিতাপুত্র’, ‘এই নিয়ে পৃথিবী’, ‘বাংলার মুখ’, ‘নয়নমনি’, ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’, ‘সুন্দরী’, ‘কসাই’, ‘জন্ম থেকে জ্বলছি’, ‘দুই পয়সার আলতা’, ‘সখিনার যুদ্ধ’, ‘ভাত দে’, ‘হীরামতি’, ‘প্রাণের মানুষ’, ‘সুন্দরী বধূ’, ‘কাল সকালে’, ‘গোলাপী এখন ঢাকায়’ ‘গোলাপী এখন বিলেতে’ ইত্যাদি।

অভিনেতা আমজাদ হোসেন ও বেশ জনপ্রিয়। জীবন থেকে নেয়ার আলোচিত চরিত্র ‘মধু ভাই’ রূপে অনবদ্য অভিনয় করে দর্শকদের হৃদয়ে তিনি গেঁথে আছেন। এছাড়া হারানো দিন, আগুন নিয়ে খেলা, বেহুলা, প্রাণের মানুষ, প্রেমী ও প্রেমী সহ অনেক সিনেমাতে তিনি অভিনয় করেছেন।

এক সময়কার বাংলাদেশীদের ঈদ বিনোদনের অন্যতম অনুষঙ্গ জনপ্রিয় টিভি সিরিজ ‘জব্বার আলী’র নাম ভূমিকায় তিনিই অভিনয় করেছেন।

আগুন নিয়ে খেলা (১৯৬৭) ও দুই ভাই (১৯৬৮) এই ছবি দুটি তিনি যৌথভাবে নির্মাণ করেন। প্রথম এককভাবে পরিচালনায় আসেন ১৯৭৬ সালে ‘নয়ন মনি’ সিনেমা দিয়ে। এটি তিনি নির্মাণ করেন নিজের লেখা উপন্যাস ‘নিরক্ষর স্বর্গে’ অবলম্বনে। ১৯৭৮ সালে আমজাদ হোসেন পরিচালনা করেন বিখ্যাত সিনেমা ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’। ১৯৭৯ সালে নির্মাণ করেন বিখ্যাত সিনেমা ‘সুন্দরী’। ১৯৮১ সালে নির্মাণ করেন দারুণ ব্যবসাসফল ছবি ‘জন্ম থেকে জ্বলছি’। ১৯৮৪ সালে নির্মাণ করেন নিজের ক্যারিয়ারের সবচেয়ে সেরা ছবি ‘ভাত দে’।

এরপর একে একে নির্মাণ করেন সখিনার যুদ্ধ (১৯৮৪), হীরামতি (১৯৮৮), গোলাপী এখন ঢাকায় (১৯৯৫), আদরের সন্তান (১৯৯৫), সুন্দরী বধূ (২০০২), প্রাণের মানুষ (২০০৩), কাল সকালে (২০০৫) ও গোলাপী এখন বিলাতে (২০১০)। মাঝে শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘কাশীনাথ’ এর অনুপ্রেরণায় নির্মিত ছবি ‘বড় বাড়ীর মেয়ে’র সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন।

‘গোলাপী এখন ট্রেনে’ ও ‘ভাত দে’ চলচ্চিত্রের জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ পরিচালক হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন। শিল্পকলায় অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে দেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মান একুশে পদক (১৯৯৩) ও স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত করেছে। এছাড়া সাহিত্য রচনার জন্য তিনি ১৯৯৩ ও ১৯৯৪ সালে দুইবার অগ্রণী শিশু সাহিত্য পুরস্কার ও ২০০৪ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার লাভ করেন।

আমজাদ হোসেন একাধিক মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক উপন্যাস লিখেছেন। সেইখান থেকে তৌকির আহমেদ বানিয়েছেন ‘জয়যাত্রা’। যেটার জন্য তিনি জাতীয় পুরস্কারও পেয়েছিলেন। তিনিই লিখেছেন জীবন থেকে নেয়া, আবার তোরা মানুষ হ।

Bootstrap Image Preview