মিসির আলি হুমায়ূন আহমেদের এক অনবদ্য চরিত্র। যে সবকিছু বিচার করেন বৈজ্ঞানিক যুক্তি দিয়ে। অনম বিশ্বাসের ‘দেবী’ ছবিটি নিয়ে মিসির আলির ভক্তদের আকাঙ্ক্ষার পারদও ছিল অনেক উঁচুতে। কেননা এই ছবির মাধ্যমেই বইয়ের পাতার মিসির আলি প্রথমবারের মত হাজির হচ্ছেন দর্শকের সামনে। কিন্তু পর্দার মিসির আলি কি সফল হতে পেরেছে?
‘দেবী’ ছবিতে মিসির আলীর চরিত্রে অভিনয় করেছেন ‘আয়নাবাজি’ খ্যাত অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী। তবে এই অভিনেতা নিজের বয়স, চুল, পোশাক এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ‘দেবী’ ছবির দৃশ্যপট এর সাথে তাল মিলিয়ে হুমায়ূন আহমেদের সেই কল্পনার মিসির আলিকে দর্শকের সামনে তুলে ধরতে পেরেছেন কিনা তা নিয়ে যথেষ্ট সমালোচনা রয়েছে।
সবকিছুকে বিচার বিজ্ঞানের যুক্তি দিয়ে করা মিসির আলীর ‘দেবী’ ছবিতেও কাজ সেটাই। কিন্তু সিনেমাটি শেষ পর্যন্ত রহস্যের নাকি ভৌতিক সেই প্রশ্নটা থেকেই যায়। মিসির আলির বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা খুব একটা জোরালো করে সিনেমায় ফুটে উঠেনি। অন্তত শেষে নীলুর সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনা সিনেমাটিকে ভৌতিক দিকে মোড় ঘুরিয়ে দেয় বলে মনে হয়েছে। ফলে ভৌতিক সিনেমা দেখতে বসে যারা মিসির আলির উপর আস্থা রেখেছেন সমাধানের জন্যে তারা নাখোশ হয়েছেন বটে!
সিনেমায় মিসির আলির প্রভাব তেমন নেই। পুরোটাই রানুর অলৌকিক ক্ষমতার গল্প। মিসির আলি খুব বেশি বিকশিত হতে পারেনি। এই আক্ষেপ দর্শক হিসেবে থেকেই যাবে। মিসিরের আরও অনুসন্ধান, ব্যাখ্যা বিশ্লেষণের অপেক্ষা করতে করতেই যেন সিনেমাটা শেষ হয়ে গেলো। তার চরিত্র দিয়ে সিনেমায় অন্যরকম থ্রিল অনুভূতি তৈরি হওয়ার কথা ছিল। সে জায়গা খুব বেশি সফলতা পায়নি গল্পটি। এছাড়াও যখন মিসির আলি গ্রামের পথে পথে ঘুরছেন, রানুর বিষয়ে খোঁজখবর নিচ্ছেন, মনে হচ্ছিলো গল্পটাও ঝুলে যাচ্ছে। সব মিলিয়ে যারা মিসির আলীকে দেখার সাসপেন্স নিয়ে যাবেন তাদের অনেকটাই খালি হাতেই ফিরতে হবে।