হলিউডের পর ‘মি টু ক্যাম্পেইনে’ একত্রিত এবার গোটা বলিউড। নানা পাটেকর যৌন হেনস্থা করেছেন বলে যখন তনুশ্রীর অভিযোগে সরগরম গোটা বলিউড, ঠিক সেই সময় বলিউড অভিনেত্রী, চলচ্চিত্রনির্মাতা পূজা ভাট বলেছেন, পৃথিবীর সব পুরুষই যৌন-সহিংস নন, সব নারীও যৌন সহিংসতার শিকার নন। পূজা আরো বলেন, এমনও ঘটেছে, অনেক পুরুষ সত্যিই নিরপরাধ, কিন্তু তাঁদের নামে নিন্দামন্দ করা হয়েছে।
পূজা ভাট বিশিষ্ট চলচ্চিত্র পরিচালক-অভিনেতা মহেশ ভাটের কন্যা ও হালের আবেদনময় অভিনেত্রী আলিয়া ভাটের বড় বোন।
গতকাল রবিবার ‘সড়ক’ অভিনেত্রী পূজা বলেন, ‘এই পৃথিবীর প্রত্যেক পুরুষ, শুধু পুরুষ হওয়ার কারণে যৌন নিপীড়ক হতে পারে না। এবং প্রত্যেক নারী, শুধু নারীর হওয়ার কারণে ভিকটিম নয়। কখনো কখনো নারীও অপরাধী। প্রত্যেক পুরুষকে একই ব্রাশ দিয়ে কালি লেপে দেওয়া ঠিক নয়।’
পূজা ভাট মনে করেন,‘বলিউডে এটা কি সত্যিই বাস্তবতা? হ্যাঁ, মিডিয়া, রাজনীতি ও কলেজে এটা বাস্তবতা। যেখানেই ক্ষমতার বিনিময় হয়, সেখানেই এটা বাস্তবতা। যদি ক্ষমতার বিনিময় চলতে থাকে, তাহলে পা রাখার জায়গার জন্য নারীর যৌনতা ব্যবহৃত হবে। যেকোনো ঘটনার দিকে তাকানোর সময় আরো ভারসাম্যপূর্ণ আচরণ করা জরুরি।’
পূজা বলেন, ‘এমন অনেক নারী আছে, যাঁরা বিয়ে করে, কারণ ওই ভদ্রলোক খুবই ক্ষমতাবান। যাঁরা খ্যাতির জন্য যৌনতা বিনিময় করে, এ ধরনের নারীর সঙ্গে তাঁদের কোনো পার্থক্য নেই।’
পূজা ভাট এ-ও বলেন, ‘এমন অনেক ঘটনার কথা বলা যায়, যেখানে তাঁরা সত্যিই নির্দোষ; অথচ তাঁদের অপমান করা হয়েছে। এমনকি তাঁরা আদালতে যাওয়ার আগেই মিডিয়া ট্রায়ালের শিকার হয়েছে। আগেই শেষ হয়ে গেছে তাঁদের সম্মান, তাঁদের পারিবারিক জীবন ধ্বংস হয়ে গেছে।’
এ বিষয়ে বর্ষীয়ান অভিনেতা অনু কাপুর বলেন, যদি অভিযোগ থাকে, তনুশ্রী দত্ত পুলিশের কাছে যাক। দোষী হলে নানা পাটেকার শাস্তি পাবেন। কিন্তু সবকিছু প্রমাণ হওয়ার আগেই মিডিয়া ট্রায়াল হচ্ছে কেন?
এরপর শনিবার মুম্বাই পুলিশের কাছে অভিনেতা নানা পাটেকার ও কোরিওগ্রাফার গণেশ আচার্যর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেন তনুশ্রী দত্ত। তনুশ্রীর আইনজীবী বলেছেন, অভিযোগ মামলা হিসেবে নেওয়া না হলে উচ্চ আদালতের শরণাপন্ন হবেন তাঁরা। পুলিশ বলছে, তদন্ত চলছে।
রবিবার অভিনেত্রী অমৃতা রাও বলেন, ‘শুধু নারী নয়, যেকোনো পেশায় কেউ কিছু করতে না চাইলে তাঁকে জোর করা যাবে না। আমি মনে করি, এটা প্রত্যেক ব্যক্তির অধিকার, কেন শুধু নারী? পুরুষ না চাইলেও তাঁদের জোর করা যাবে না। বলিউডে অনেক অভিনেতা আছেন, যাঁরা চুমুর দৃশ্যে অভিনয় করতে চান না; তাঁদের সম্মান করতে হবে।’
গত মাসে তনুশ্রী দত্ত অভিযোগ করেন, ২০০৮ সালে ‘হর্ন ওকে প্লিজ’ ছবির একটি আইটেম গানের শুটিং চলাকালে নানা পাটেকার তাঁকে যৌন হেনস্তা করেছিলেন। এ অভিযোগের পরই বলিউডে চলছে মি টু ঝড়।