Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৪ মঙ্গলবার, জুন ২০২৫ | ১০ আষাঢ় ১৪৩২ | ঢাকা, ২৫ °সে

ঘুমন্ত অবস্থায় পুড়িয়ে মারা নাঈমের মায়ের চোখের পানি শুকিয়ে গেছে

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৭ নভেম্বর ২০২৩, ১১:৪৬ AM
আপডেট: ০৭ নভেম্বর ২০২৩, ১১:৪৬ AM

bdmorning Image Preview
ছবি সংগ্রহীত


বিএনপি-জামায়াতের মহাসমাবেশের পরের দিন ভোর ছয়টা থেকে দু’দিনের হরতাল ঘোষণা করে দল দুটি। কিন্তু ভোর ছয়টার আগেই রাত তিনটার দিকে ডেমরা স্টাফ কোয়ার্টার এলাকায় দাঁড়িয়ে থাকা অছিম পরিবহনের বাসে আগুন দিলে তার মধ্যে ঘুমন্ত হেলপার নাঈম চৌকিদার পুড়ে মারা যান। সেদিন থেকে শেষ হয়ে গেছে নিহত নাঈমের পরিবারের সব আশা, ভরসা, স্বপ্ন! ঘটনার পর আট দিন পার হয়ে গেলেও এখনো পরিবার দেখতে পায়নি খুনিদের গ্রেফতার হওয়া, পায়নি কোনো ক্ষতিপূরণ।

গত ২৯ অক্টোবর রাতে বাসটিতে ঘুমিয়ে ছিলেন দুই হেলপার নাঈম ও রবিউল। আগুন দেয়ার পর রবিউল দগ্ধ অবস্থায় বের হতে পারলেও পুড়ে মৃত্যু হয় নাঈমের। পুড়ে মারা যাওয়া নাড়িকাটা ধন নাঈমকে অভাবের মধ্যেও আদর যত্নে পেলে-পুষে বড় করা মায়ের চোখের পানিও যেন শুকিয়ে গেছে! বার বার পারভিন বেগম বলছিলেন, এমনভাবেই মারা হলো ছেলেকে যে, শেষবারের মতো বুকেও জড়িয়ে ধরতে পারেননি তিনি।

 

ছেলের উপার্জনের আশ্বাসে রিকশা চালানো ছেড়ে দেয়া বাবাকে সবাই মানা করেছিলেন মৃত ছেলের মুখ না দেখতে, কারণ এ দৃশ্য সইবার নয়। তারপরও মানেনি বাবার মন, বরিশালের চরমোনাইতে লাশ নেয়ার পর আদরের বড় ছেলের চেহারা শেষবারের মতো দেখেছিলেন তিনি। আগুন সন্ত্রাসের রাজনীতিকে ধিক্কার জানিয়েছেন এই বাবা।নাঈমের স্বজন ও পরিচিতরা জানান, ছোট ভাইয়ের চিকিৎসা, মেজো ভাইয়ের পড়াশোনার খরচ সামলাতে পরিবারকে কিছুটা বেশি টাকা পাঠানোর আশায় দিনভর গাড়িতে কাজ করে রাতেও গাড়িতেই ঘুমাতেন নাঈম চৌকিদার। অসহায় পরিবারটির দিকে নজর দেয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তারা। দৃষ্টি আকর্ষণ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার।


২৯ তারিখ রাতে বাসগুলো পাহারা দিচ্ছিলেন সালাউদ্দিন মিয়া। জানালেন, গান পাউডার ব্যবহার করায় মাত্র দুই মিনিটেই ছড়িয়ে পড়েছিলো আগুন। নাঈম যেভাবে ঘুমিয়েছিলেন ওইভাবে পুড়ে মারা গেছেন। যদিও একই গাড়িতে ঘুমন্ত আরেক হেলপার রবিউল অগ্নিদগ্ধ হয়েছিলেন, কিন্তু তিনি বের হতে পেরেছিলেন। যিনি বর্তমানে চিকিৎসাধীন আছেন শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউটে।

 

পুড়ে যাওয়া সেই বাসে আবার লাগছে মেরামতের ছোঁয়া, দেয়া হচ্ছে নতুন রংয়ের প্রলেপ। কিন্তু যে নাঈমের মৃত্যু হয়েছে এই বাসে ঘুমিয়ে তার পরিবারে এখন শুধুই কান্না আর হতাশা। আদৌ তার পরিবার ঘুরে দাঁড়াতে পারবে কিনা জানেন না কেউ, বিচার পাবে কিনা তারও নিশ্চয়তা নেই। সেদিনের বর্বরোচিত ঘটনার ৭ দিন পর চলতি মাসের ৫ তারিখ সকালে অছিম পরিবহনের আরেকটি বাসেও পেট্রোল বোমা ছোঁড়া হয়। এ ঘটনায় সবুজ নামে এক ড্রাইভার অগ্নিদগ্ধ হন। যিনি বর্তমানে শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন আছেন। এসব ঘটনায় বিচার চেয়েছেন ভুক্তভোগীদের পরিবার।

 

 

 

Bootstrap Image Preview