ভারতের কলকাতায় ১২ বছরের কিশোরী মা হয়েছেন। রোববার এমন সংবাদ প্রকাশ করেছে ভারতীয় গণমাধ্যম গুলো।
বৃহস্পতিবার ১৭ নভেম্বর কলকাতার লেডি ডাফরিন ভিক্টোরিয়া হাসপাতালে প্রায় দেড় কেজি ওজনের একটি পুত্র সন্তানের জন্ম দেয় এক নাবালিকা। প্রথমে ঝুঁকি থাকলেও এই মুহূর্তে মা ও সন্তান দু'জনেই ভালো রয়েছে বলে কিশোরীর পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন।
হাসপাতালের সুপার ডা. জয়ব্রতী মুখোপাধ্যায় বলেন, 'গত ১৬ নভেম্বর বুধবার ওই নাবালিকাকে নিয়ে তার নানী আমাদের হাসপাতালের আসেন। তাদের সঙ্গে থাকা আল্ট্রাসোনোগ্রাফি রিপোর্ট দেখে এবং হাসপাতালে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর চিকিৎসকরা নিশ্চিত হন ওই কিশোরী মা হতে চলেছে। গর্ভস্থ তার সন্তানের বয়স প্রায় আট মাস। পরের দিন সন্ধ্যাবেলায় ফের তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন তার পরিজনরা। দেখা যায় কিশোরীর প্রসব বেদনা উঠেছে। দেরি না করে সঙ্গে সঙ্গে তাকে ভর্তি করে লেবার রুমে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে 'নর্মাল ডেলিভারি'তে ওই কিশোরী একটি পুত্র সন্তানের জন্ম দেয়। শিশুটির ওজন ১ কেজি ৪৫০ গ্রাম। স্বাভাবিকের থেকে কম ওজন বলে তাকে এসএনসিইউতে রাখা হয়েছে। আপাতত মা এবং শিশু দু'জনেই সুস্থ আছেন এবং মা শিশুটিকে স্তন্যদানও করছে। যেহেতু মা নাবালিকা তাই বিষয়টি আমরা স্থানীয় মুচিপাড়া থানায় জানিয়েছি।' হাসপাতালের নথিতে ওই কিশোরীকে 'সিঙ্গল মাদার' হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়।
কিশোরীর পরিবার সূত্রে অভিযোগ, মা-বাবার পারিবারিক বন্ধু মহেশ স্যামুয়েলের ধর্ষণের শিকার হয়ে গর্ভবতী হয়ে পড়েছিল ওই নাবালিকা। পরে ঘটনা জানাজানি হলে তাকে নিয়ে কলকাতায় চলে আসে তার পরিবার। পরিযায়ী শ্রমিক হিসেবে দিল্লিতে থাকতেন মেয়েটির বাবা ও মা। মা পরিচারিকার কাজ করতেন। আর বাবা দরজা-জানালার গ্রিলের কারখানার কর্মী। ১২ বছরের মেয়েটি একাই বাড়িতে থাকত। ফাঁকা বাড়িতে পারিবারিক বন্ধু মহেশ স্যামুয়েল নামের এক ব্যবসায়ীর যাতায়াত ছিলো। মা-বাবার অবর্তমানে অভিযুক্ত মাঝেমধ্যেই মেয়েটিকে ধর্ষণ আর যৌন হেনস্তা করত বলে অভিযোগ। নাবালিকার মুখ বন্ধ রাখতে দেওয়া হতো নানা রকম হুমকি।
জানা গেছে, দীর্ঘ দিন ভয়ে মুখ বন্ধ রাখলেও সম্প্রতি অসহ্য পেট ব্যথা শুরু হয় নাবালিকার। তাকে কলকাতায় তার মামারবাড়িতে পাঠিয়ে দেন তার বাবা-মা। সেখানে তাদের বাড়ির কাছে এক চিকিৎসককে দেখালে তার সন্দেহ হওয়ায় তিনি আল্ট্রাসোনোগ্রাফি করান এবং দেখা যায় কিশোরী মা হতে চলেছে এবং গর্ভস্থ সন্তানের বয়স তত দিনে আট মাসের কাছাকাছি হয়ে গেছে। ওই চিকিৎসকের পরামর্শেই নাবালিকাকে সরকারি হাসপাতালে নিয়ে আসেন তার পরিজনরা।
এই ঘটনায় নির্যাতিতার পরিবার অভিযুক্ত মহেশ স্যামুয়েলের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছে।
সূত্র : আজকাল