বরগুনায় পারিবারিক কলহের কারণে বাড়ি ছেড়ে চলে যাওয়া স্ত্রীকে ফেরাতে ব্যর্থ হয়ে হতাশায় নিজের ঘরে কবর খুঁড়লেন স্বামী জাফর গাজী (৫০)।
গতকাল শুক্রবার বিকেল ৫টার দিকে সদর উপজেলার আয়লা ইউনিয়নের কদমতলা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
প্রতিবেশী গ্রাম পুলিশসহ স্থানীয়রা বিষয়টি জানতে পেরে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে জাফর গাজীকে বাড়ি থেকে উদ্ধার করে কদমতলা বাজারে নিয়ে আসে। এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। লোকজন ভীড় করছে কবর দেখতে।
আয়লা ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের গ্রাম পুলিশ সাইফুল ইসলাম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, প্রায় এক যুগের বেশী সংসার জাফর ও হাজেরার। তাদের সংসার জীবনে প্রায় নানা বিষয় নিয়ে প্রতিদিনই ঝগড়া চলে আসছে। এক সপ্তাহ আগে এই বিষয়ে ইউনিয়ন পরিষদে দুই পক্ষের মধ্যে সালিশ বৈঠকেও হয়েছে। হাজেরা সালিশ মানছেন না। দু'জনেই এক মাস ধরে আলাদা থাকছেন। হাজেরা বাজারে একটি দোকান দিয়ে সেখানেই বসবাস করছে। নিজ ঘরেই কবর খুঁড়ার সংবাদ পেয়ে আমি দ্রুত ছুটে গিয়ে জাফরকে কবর খোঁড়া থেকে বিরত রাখি।
এ বিষয়ে জাফর গাজী জানান, ‘১৩ বছর আগে ঢাকায় হাজেরার সঙ্গে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই হাজেরা তার কথার অবাধ্য ছিল। পরে তারা বরগুনার গ্রামের বাড়িতে বসবাস শুরু করেন। এখানেও কিছু দিন পরে পারিবারিক কলহ তৈরি হলে দু'জনে আলাদা থাকতে শুরু করেন। হাজেরা প্রায়ই তাকে মারধর করে এবং অশ্লীল গালি দেয়। এ নিয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধির উপস্থিতিতে একাধিকবার সালিশ করলেও হাজেরা তা মানছেন না।
সর্বশেষ চলতি বছরের গত ২২ জুন (বুধবার) রাগ করে হাজেরা তার নিজের চায়ের দোকানে বসবাস শুরু করেন। তাকে দোকান থেকে ঘরে ফেরত আনার একাধিক চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে নিজের কবর খুঁড়তে শুরু করেন তিনি।’
জাফর গাজী জানান, বাহিরে আমার কোন জায়গা নেই, আল্লাহ মৃত্যু যখন রাখে এই কবরেই থাকতে চাই।
এ বিষয় হাজেরা সাংবাদিকদের নিকট ভিন্ন অভিযোগ করে জানান, ১৩ বছর আগে বিয়ের সময় তার সঙ্গে প্রতারণা করেছে জাফর গাজী। জাফর আগের স্ত্রীকে তালাক না দিয়েই মিথ্যা তালাকনামা তৈরি করে তা দেখিয়ে আমাকে বিয়ে করে। এ সব নিয়ে ঝগড়া ঝামেলা শুরু হলে গ্রামে চলে আসেন তারা। বর্তমানে সংসারে অমনোযোগী হওয়ায় প্রায় সময় ঝগড়া চলে আসছে তাদের মধ্যে। এখন সে জাফরের সঙ্গে সংসার করতে রাজি না।
স্থানীয় ইউপি সদস্য কাজি মোখলেচুর রহমান জানান, মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে জাফর যাতে কোন অঘটন না ঘটাতে পারে সে জন্য ঘর থেকে গ্রাম পুলিশের মাধ্যমে কদমতলা বাজারে নিয়ে আসা হয়েছে জাফরকে। এ বিষয়ে পুলিশ পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে।
বরগুনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী আহম্মেদ বলেন, আপনাদের মাধ্যমে বিষয়টি শুনেছি। কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে আমরা ব্যবস্থা নেব।