টিপ পরায় শিক্ষিকাকে হেনস্তার ঘটনায় প্রতিবাদকারীদের ব্যঙ্গ করায় সিলেট জেলা পুলিশের আদালত পরিদর্শক লিয়াকত আলীকে দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
সিলেট জেলা পুলিশ সুপার ফরিদ উদ্দিন জানান, পুলিশের ওই কর্মকর্তাকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়েছে। একইসঙ্গে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এর আগে টিপ পরায় এক নারীকে হেনস্তার ঘটনায় দেশজুড়ে প্রতিবাদ চলছে। এই প্রতিবাদকারীদের নিয়েই ব্যঙ্গ করেছেন আরেক পুলিশ সদস্য। লিয়াকত আলী নামের ওই পুলিশ কর্মকর্তা সিলেট জেলা পুলিশের আদালত পরিদর্শক হিসেবে কর্মরত।
সোমবার (৪ এপ্রিল) ফেসবুকে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে টিপকাণ্ডের প্রতিবাদকারীদের বিদ্রূপ করেন লিয়াকত। এতে নারীর পোশাক নিয়েও মন্তব্য করেন তিনি।
পরিদর্শক লিয়াকত তার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে লেখেন, প্রসঙ্গ: টিপ নিয়ে নারীকে হয়রানি। ফালতু ভাবনা : (18+) টিপ নিয়ে নারীকে হয়রানি করার প্রতিবাদে অনেক পুরুষ নিজেরাই কপালে টিপ লাগাইয়া প্রতিবাদ জানাচ্ছে। কিন্তু আমি ভবিষ্যৎ ভাবনায় শংকিত। বিভিন্ন শহরে অনেক নারীরা যেসব খোলামেলা পোশাক পরে চলাফেরা করেন তার মধ্যে অনেকেরই ব্রায়ের ওপর দিকে প্রায় অর্ধেক আনকভার থাকে। পাতলা কাপড়ের কারণে বাকি অর্ধেকও দৃশ্যমান থাকে। এখন যদি কোনো পুরুষ এইভাবে ব্রা পরার কারণে কোনো নারীকে হয়রানি করে তবে কি তখনও আজকে কপালে টিপ লাগানো প্রতিবাদকারী পুরুষগণ একইভাবে ব্রা পড়ে প্রতিবাদ করবেন?
লিয়াকতের ওই পোস্টের নিচে সমালোচনা করে মন্তব্য করেন কেউ কেউ। তবে বেশিরভাগ মন্তব্যকারীই লিয়াকতের বক্তব্যের সঙ্গে সহমত প্রকাশ করে তার প্রশংসা করেছেন। তবে সন্ধ্যার দিকে নিজের ওই পোস্টটি মুছে (ডিলিট) দেন লিয়াকত।
এর আগে দুপুরে নিজের ফেসবুক আইডি থেকে দেওয়া স্ট্যাটাসে লিয়াকত লিখেন, ‘টিপ নিয়ে নারীকে হয়রানি করার প্রতিবাদে অনেক পুরুষ নিজেরাই কপালে টিপ লাগাইয়া প্রতিবাদ জানাচ্ছে। কিন্তু আমি ভবিষ্যৎ ভাবনায় শঙ্কিত।’ তিনি নারীদের নিয়ে আপত্তিকর পোস্ট দেন।
সিলেটের পুলিশ সুপার জানান, লিয়াকতকে ক্লোজড করে পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়েছে। তাছাড়া তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। লিয়াকতের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সদর দপ্তরে প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।
এ বিষয়ে সিলেট জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি ও মিডিয়া) মো. লুৎফুর রহমান বলেন, ‘কারো ব্যক্তিগত অপকর্মের দায়বার পুলিশ বাহিনী নিবে না। তিনি ফেসবুকে যা মন্তব্য করেছেন তা অশালীন ও বিব্রতকর মনে হয়েছে। তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যেই তাকে ক্লোজড করা হয়েছে এবং তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।’