Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৮ মঙ্গলবার, মার্চ ২০২৫ | ৩ চৈত্র ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

চিত্রনায়িকা শিমু হত্যায় আরও কেউ জড়িত রয়েছে, ধারণা পুলিশের

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৩ ফেব্রুয়ারী ২০২২, ০৯:৩৫ AM
আপডেট: ০৩ ফেব্রুয়ারী ২০২২, ০৯:৩৫ AM

bdmorning Image Preview
ছবি সংগৃহীত


চিত্রনায়িকা রাহিমা আক্তার শিমু ওরফে রাইমা ইসলাম শিমু (৪১) হত্যাকাণ্ডে আরও কেউ জড়িত থাকতে পারে বলে ধারণা করছে পুলিশ। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার পর জানা যাবে হত্যার সঙ্গে আর কারও সম্পৃক্ততা রয়েছে কি না। একই সঙ্গে পারিবারিক কলহের বাইরেও কারও সঙ্গে শিমুর দ্বন্দ্ব রয়েছে কি না তাও খতিয়ে দেখছেন তদন্ত সংশ্লিষ্টরা। বুধবার তদন্ত সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।

ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন সরদার বুধবার সময়ের আলোকে বলেন, মামলা এখনও তদন্তাধীন। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট হাতে পেলে চার্জশিটের কার্যক্রম শুরু হবে। শিমু হত্যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কেরানীগঞ্জ থানার পরিদর্শক (কলাতিয়া) শহিদুল ইসলাম বুধবার সময়ের আলোকে বলেন, ময়নাতদন্ত রিপোর্টের জন্য অপেক্ষায় রয়েছে পুলিশ। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার পর চার্জশিটের কার্যক্রম চালিয়ে যাব।

তিনি বলেন, গ্রেফতার শিমুর স্বামী খন্দকার শাখাওয়াত আলীম নোবেল ও তার বাল্যবন্ধু এসএমওয়াই আব্দুল্লাহ ফরহাদ হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে। এর বাইরেও আরও কেউ ইন্ধনদাতা রয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। 

তিনি আরও বলেন, গতকাল ময়নাতদন্ত রিপোর্টের জন্য স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ (মিডফোর্ড) হাসপাতালে গিয়ে জানা গেছে, এখনও রিপোর্ট তৈরি হয়নি। আরও কয়েকদিন সময় লাগবে বলে মিডফোর্ড হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগ থেকে জানানো হয়েছে।

গত ১৬ জানুয়ারি রোববার রাজধানীর কলাবাগানের গ্রিন রোডের ৩৪ নম্বর বাড়ি থেকে শিমুর লাশ একটি পাটের বস্তায় ভরে কেরানীগঞ্জের হযরতপুর ইউনিয়নের কদমতলী এলাকায় একটি ঝোঁপের মধ্যে ফেলে রেখে যায় স্বামী খন্দকার শাখাওয়াত আলীম নোবেল ও তার বাল্যবন্ধু এসএমওয়াই আব্দুল্লাহ ফরহাদ। পারিবারিক কলহের জেরেই চিত্রনায়িকা শিমুকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে তারা।

জবানবন্দির পর ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ দক্ষিণ) মো. হুমায়ুন কবীর এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, শিমুকে প্রথমে হত্যার পরিকল্পনা করে স্বামী নোবেল। বাল্যবন্ধু ফরহাদ সবসমই নোবেলের বাসায় যাওয়া-আসা করত। ফরহাদ একটি মেসে ভাড়া থাকত। ফরহাদের আর্থিক সমস্যা ছিল। তাই মাঝেমধ্যেই নোবেলের কাছ থেকে আর্থিক সাহায্য নিত। হত্যাকাণ্ডের দিন আর্থিক সাহায্য নিতে আসে ফরহাদ। এরপর জড়িয়ে যায় হত্যাকাণ্ডে। হত্যাকাণ্ডের সময় শিমুর সন্তানরা পাশের রুমে ঘুমন্ত অবস্থায় ছিল। হত্যার পর লাশটি ফেলার জন্য তারা দিনভর চেষ্টা করে কোনো সুযোগ না পেয়ে রাতে কেরানীগঞ্জে এসে ফেলে রেখে যায়। 

তবে পুলিশ যেসব তথ্য দিয়েছে প্রতিটি তথ্যে অস্পষ্টতা পাওয়া যাচ্ছে। পরকীয়ার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তেমন সদুত্তর পাওয়া যায়নি। 

কেরানীগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. শাহাবুদ্দিন কবীর সময়ের আলোকে বলেন, প্রাথমিক তদন্তে পারিবারিক কলহের জেরেই হত্যাকাণ্ডের তথ্য পেয়েছি। প্রথমে বন্ধুকে বাঁচানোর জন্য শিমুর স্বামী একাই হত্যা করেছে বলে পুলিশের কাছে দোষ স্বীকার করে। পরে আরও জিজ্ঞাসাবাদের পর জানায়, নোবেল পূর্বপরিকল্পিতভাবেই শিমুকে হত্যা করে। 

তিনি আরও বলেন, ঘটনার দিন সকালে ফরহাদ নোবেলের বাসায় আসে। আগে থেকেই জানত শিমুর সঙ্গে নোবেলের পারিবারিক কলহ চলছে। ঘটনার দিন ফরহাদ নোবেলের বাসায় আসার পর নোবেল সিদ্ধান্ত নেয়, শিমুকে হত্যা করতে হবে। এরপর শিমুর মুখ চেপে ধরে নোবেল। এ সময় ফরহাদ হাত শক্ত করে ধরে রাখে। এক পর্যায়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে লাশ ঘরের মধ্যে রাখে। দিনভর লাশ গুম করার জন্য চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়। এরপর বাইরে থেকে দুটি বস্তা নিয়ে আসে ফরহাদ। এ সময় প্লাস্টিকের একটি রুল আনে। পরে পরিকল্পিতভাবে লাশ কেরানীগঞ্জের হযরতপুর ইউনিয়নের কদমতলী এলাকায় একটি ঝোঁপের মধ্যে ফেলে রেখে যায়।

Bootstrap Image Preview