রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থী মাহমুদ হাবিব হিমেল নিহতের ঘটনায় ক্ষতিপূরণসহ শিক্ষার্থীদের সবকটি দাবির সঙ্গে সহমত জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার। আজ বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় হিমেলের জানাজায় অংশ নিয়ে তিনি সহমত জানান। এ সময় তিনি আজকের মধ্যেই হিমেলের মায়ের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ৫ লাখ টাকা জমা করা হবে বলে ঘোষণা দেন।
উপাচার্য আবেগজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘সন্তানহারা পিতার জন্য এই মুহূর্তে কিছু বলা সত্যিই কঠিন।
পিতার পিঠে সন্তানের লাশের বোঝা যে কতটা ভারী! কথা ছিল আমার লাশ আমার সন্তানের কাঁধে উঠবে। কিন্তু পিতাকেই সন্তানের লাশ কাঁধে নিতে হচ্ছে। আমার শোক জানানোর ভাষা নেই। ’
তিনি বলেন, আমি তো আর আমার ছেলেকে ফেরত আনতে পারবো না। কিন্তু আমরা তার পরিবারের ক্ষতিপূরণসহ শিক্ষার্থীরা অন্যান্য যেসব দাবি জানিয়েছে সেগুলোর ব্যাপারে সহমত পোষণ করছি। তাদের প্রত্যেকটি দাবিই পূরণ করা হবে। আমরা হিমেলের মায়ের সঙ্গে কথা বলেছি। তার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলে দিয়েছি। আজকের মধ্যে তাকে ৫ লাখ টাকা দেওয়া হবে এবং পর্যায়ক্রমে আরো ক্ষতিপূরণের টাকা প্রদান করা হবে।
শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো- নিহতের পরিবারকে ১০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হবে, বিশ্ববিদ্যালয়ে নিহতের বোনকে চাকরি দিতে হবে, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান পাল্টাতে হবে, প্রক্টরিয়াল বডির পদত্যাগ, ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং হিমেল নিহতের ঘটনাকে হত্যাকাণ্ড হিসেবে বিচার করতে হবে।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য দু’টি আবাসিক হল ও একটি বিশতলা একাডেমিক ভবন নির্মাণের কাজ চলছে। ২০তলা একাডেমিক ভবনটি নির্মাণ করা হচ্ছে শহীদ হবিবুর রহমান হলের দক্ষিণ পাশে। এই ভবনগুলো নির্মাণ করতে বেশ কয়েকটি ট্রাকযোগে নির্মাণ সামগ্রী আনা-নেওয়ার কাজ করছে। মঙ্গলবার রাতে শহীদ হবিবুর রহমান হলের দিক থেকে মোটরসাইকেলে ক্যাম্পাসের দিকে যাচ্ছিলেন হিমেল ও রিমেল। এ সময় নির্মাণাধীন বিশতলা একাডেমিক ভবনের গেটের সামনে পৌঁছলে একটি ট্রাক তাদেরকে চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই হিমেল মারা যান। আহত হন রিমেল। পরে আজ বুধবার জানাজা শেষে হিমেলের লাশ তার নানার বাড়ি নাটোরে নেওয়া হয়।