Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৪ বুধবার, মে ২০২৫ | ৩০ বৈশাখ ১৪৩২ | ঢাকা, ২৫ °সে

পছন্দের বর পাওয়ার আশ্বাস দিয়ে ১৬ বছরের কিশোরীকে ধর্ষণ

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৩ জুন ২০২১, ০১:৪৬ PM
আপডেট: ২৩ জুন ২০২১, ০১:৪৬ PM

bdmorning Image Preview
অভিযুক্ত কবিরাজ মো. ইকরাম হোসেন কানন ভূঁইয়া।


প্রেমিককে বশে আনতে কবিরাজের কাছে যায় মাদরাসাছাত্রী (১৬)। সঙ্গে নিয়ে যায় খালাতো বোনকে। সেখানে ওই খালাতো বোনকে (কিশোরী) পছন্দের বর পাওয়ার আশ্বাস দিয়ে পানি পড়া খাওয়াতে পাশের রুমে নিয়ে যান কবিরাজ ইকরাম হোসেন। সেখানে তাকে ধর্ষণ করেন বলে অভিযোগ কিশোরীর। এখন ওই কিশোরী আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা। অনাগত সন্তানকে পিতৃপরিচয় দিতে সমাজের গণ্যমান্যদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছে কিশোরীর পরিবার।

কুমিল্লার দেবীদ্বার উপজেলার ভাণী ইউনিয়নের সূর্যপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত কবিরাজ মো. ইকরাম হোসেন কানন ভূঁইয়া ওই এলাকার মৃত জয়নাল আবেদীন ভূঁইয়ার ছেলে। জয়নালও কবিরাজি করতেন। তার বাড়িতেই ওই গত আট মাস আগে ওই ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। কানন কবিরাজ বিবাহিত এবং এক সন্তানের জনক। 

বিষয়টি কাউকে না জানাতে কবিরাজের নির্দেশ ছিল। জানালে গুম-খুনসহ নানাভাবে ক্ষতি করার হুমকি দেওয়া হয়েছিল বলে জানিয়েছে ভুক্তভোগী কিশোরী।

তিনি জানায়, ঘটনার দিন খালাতো বোনের সঙ্গে যায় ওই কবিরাজ কাননের কাছে যায় সে।  এ সময় খালাতো বোনকে ড্রইং রুমে বসিয়ে তাকে পছন্দের বর পাওয়ার আশ্বাস দিয়ে পাশের রুমে পানি পড়া খাওয়ানোর কথা বলে নিয়ে যায়। সেখানে তাকে ধর্ষণ করে কবিরাজ কানন। রুম থেকে বের হয়ে খালাতো বোনকে বিষয়টি জানালে সে বলে, কিছু হবে না, কাউকে কিছু বলিস না।

ভুক্তভোগী কিশোরীর মা বলেন, প্রথমে বিষয়টি পারিবারিকভাবে সমাধানের চেষ্টা করি, কবিরাজ পরিবারের পক্ষ থেকে সমাধানের আশ্বসও দেওয়া হয়। তবে সাংবাদিক, থানা পুলিশ কিংবা আদালতের আশ্রয় নিলে বাড়িঘর জ্বালিয়ে তাদের গ্রাম ছাড়া করারও হুমকি দেয় তারা।

কিশোরীর বাবা বলেন, কানন কবিরাজ পরিবার প্রভাবশালী হওয়ায় সমাজপতিদের মধ্যেও পিছুটান দেখা দিয়েছে। হুমকির মুখে আমার মেয়েকে আত্মগোপনে রেখে নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাতে হচ্ছে। তিনি অভিযোগ করেন, কানন কবিরাজ সূর্যপুর ও সাহারপাড় গ্রামের আরো তিনটি মেয়ের সর্বনাশ করে টাকা এবং প্রভাবের জোড়ে পার পেয়ে গেছে। আমি এখন সমাজের সিদ্ধান্তের বাহিরে যেতে পারছি না।

মো. নজরুল ইসলাম ভূঁইয়া জানান, ঘটনা মীমাংসার স্বার্থে তিন দফা সালিস ডাকা হয়। অভিযুক্ত ধর্ষক কবিরাজ কানন ভূঁইয়া কোনো সালিসেই উপস্থিত থাকেনি। কবিরাজের পরিবারের পক্ষ থেকে ধর্ষণের দায়ে অভিযুক্ত গত ১৩ জুন এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে সিদ্ধান্তও মানছে না।

এ ঘটনায় গত ১৩ জুন সাহাড়পাড় মো. আজহার মেম্বারের বাড়িতে এক সালিসের আয়োজন করা হয়। সালিসের সভাপতি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও সাবেক ইউপি মেম্বার জহিরুল ইসলাম বলেন, ওই সালিসে ১৩ সদস্যের একটি জুরিবোর্ড গঠন করা হয়, জুরি বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ১৬ জুন অন্তঃস্বত্বা কিশোরীর অনাগত সন্তানের পিতৃপরিচয়ের স্বীকৃতি দানে কানন কবিরাজের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনের সিদ্ধান্ত নেয়া হলেও তা এখনো কার্যকর হয়নি।

মঙ্গলবার দুপুরে স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. আজহার বলেন, 'বিষয়টি স্পর্শকাতর, মেয়েটি কিশোরী এ ঘটনা আইন আদালতের বাহিরে বিচার-সালিসে সমাধান যোগ্য নয়, তবুও সামাজিক স্বার্থে চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছি। মেয়ে পক্ষ আইনি সহায়তা নিলে সার্বিক সহযোগিতা করব।'

দেবিদ্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্ত (ওসি) মো. আরিফুর রহমান বলেন, আট মাস আগে আমি এখানে ছিলাম না। এখনো আমার কাছে কেউ এ বিষয়ে অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেবো।

Bootstrap Image Preview