বৈষম্যহীন সমাজের জন্য বাজেট প্রক্রিয়ার গণতন্ত্রায়নের বিকল্প নেই বলে জানিয়েছেন, ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।
তিনি বলেন, বাজেট যোগানের সিংহভাগ জনগণের পরোক্ষ করের মাধ্যমে এলেও জাতীয় বাজেট প্রণয়নে তাদের মতামত চাওয়া পাওয়ার কোনো প্রতিফলন নেই। বাজেটের স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার সাথে সাথে বাজেট প্রণয়ণ এবং বাস্তবায়নে জনঅংশগ্রহণ নিশ্চিত হলে দেশের সার্বিক উন্নয়ন আরো অগ্রসর হবে।
সোমবার (২১ ডিসেম্বর) সকালে গণতান্ত্রিক বাজেট আন্দোলন, পার্টিসিপেটরি রিসার্চ অ্যাকশান নেটওয়ার্ক-প্রান এবং একশনএইড বাংলাদেশের আয়োজিত বাজেট অলিম্পিয়াড ২০২০ এর ভার্চুয়াল গ্র্যান্ড ফিনালে অনুষ্ঠানে বক্তারা এমন অভিমত ব্যক্ত করেন।
বাজেট অলিম্পিয়াড আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক এমএম আকাশ, সম্পাদক নুরুল আলম মাসুদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্ণর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।
বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার এন্ড পলিসির পরিচালক অধ্যাপক কাজী মারুফুল ইসলাম, একশানএইড বাংলাদেশের পরিচালক আসগর আলী সাবরি, কেয়ার বাংলাদেশের পরিচালক আমানুর রহমান, গণতান্ত্রিক বাজেট আন্দোলনের সম্পাদক মনোয়ার মোস্তফা, সহসম্পাদক সেকেন্দার মিনা সুমন ও বাজেট অলিম্পিয়াড আয়োজক কমিটির সম্পাদক নুরুল আলম মাসুদ। অনুষ্ঠানে বাজেট অলিম্পিয়াডের বিগত বছরগুলোর চ্যাম্পিয়নও অনুষ্ঠানে অংশ নেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, শুধু সরকারি অর্থ আহরণ এবং ব্যয়ের ব্যাপারেই নয়, বাজেটের অন্যতম কাজ হলো উন্নয়নের সুফল সবার কাছে পৌছে দেওয়া। যদিও বাংলাদেশের বাজেটের নীতি বাস্তবায়নে এর প্রভাব-প্রতিফলন নেই। শুধু প্রবৃদ্ধির দিকে দৃষ্টি না দিয়ে বাজেটে জনগনের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা, সুশাসন প্রতিষ্ঠা, দুর্নীতি দমন এবং মানুষের সার্বিক আর্থ সামাজিক উন্নয়নের দিকে গুরুত্বারোপ করতে হবে। কাজী মারুফুল ইসলাম বলেন, তরুণদের মাঝে বাজেট নিয়ে প্রশ্ন করার মানসিকতাটা তৈরি করা বেশ জরুরি। যাদের কথা বলার সক্ষমতা আছে, তাদেরকে আরো সক্ষম করে তুলতে এবং গণতান্ত্রিক বাজেট আন্দোলনের ধারাকে সমুন্নত রাখতে বাজেট অলিম্পিয়াড এবং অংশগ্রহণকারীরা ভূমিকা রাখবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন আসগর আলী সাবরি
সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক ড. এম এম আকাশ বলেন, নাগরিকরা সরকারকে যে টাকা দিচ্ছে সে টাকা সঠিকভাবে হচ্ছে কিনা তা জানার এবং মত প্রকাশের অধিকার জনগণের রয়েছে। জনঅংশগ্রহমূলক বাজেট নিশ্চিত করতে হলে হলে অবশ্যই বাজেটের বিকেন্দ্রীকরণ প্রয়োজন। এই ধারণা এবং দাবিকে প্রতিস্থাপন করতে তরুণদের আলোচনা এবং অংশগ্রহণ এক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা রাখতে পারে।
দেশব্যাপী তরুণ বাজেট বিতার্কিক গড়ে তোলার উদ্দেশ্যে গণতান্ত্রিক বাজেট আন্দোলন- ডিবিএম ২০১৭ সাল থেকে বাজেট অলিম্পিয়াড আয়োজন করে আসছে । এই বছর দেশের শতাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রায় ৪০০০ শিক্ষার্থী এ বছর বাজেট অলিম্পিয়াডের বিভিন্ন রাউন্ডে অংশগ্রহণ করেন এবং তাদের মধ্য থেকে বিভিন্ন প্রতিযোগিতার মাধ্যমে নির্বাচিত ১০০ জন চূড়ান্ত পর্বের প্রতিযোগিতায় অংশ নেন।
বাজেট অলিম্পিয়াড ২০২০ এ চ্যাম্পিয়ন হন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলাম কিবরিয়া লিমন।
প্রথম ও দ্বিতীয় রানার আপ হয়েছেন যথাক্রমে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আরিফুজ্জামান উজ্জ্বল এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শামসুজ্জামান রাজু।
এছাড়াও অনুষ্ঠানে আঞ্চলিক পর্বের বিজয়ী এবং চূড়ান্ত পর্বের শীর্ষ দশ বিজয়ীর নাম ঘোষণা করা হয়েছে।