শনিবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির সামনে আয়োজিত ‘ধর্ম ব্যবসায়ী ও মৌলবাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী সন্ধ্যা’ শিরোনামের কর্মসূচিতে চলমান ভাস্কর্যবিরোধী আন্দোলন, ধর্মের নামে মানুষ হত্যা ও সহিংসতার প্রতিবাদ জানান তারা।হাতে মশাল, কণ্ঠে কবিতা-গান, নির্বাক অভিনয় ও ব্যঙ্গচিত্র প্রদর্শনীর মাধ্যমে সাম্প্রদায়িকতা ও মৌলবাদের বিরুদ্ধে শৈল্পিক প্রতিবাদ জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী।
ডাকসুর সদ্য সাবেক সদস্য তানভীর হাসান সৈকতের উদ্যোগে আয়োজিত এই কর্মসূচিতে টিএসসির বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন অংশ নেয়। এতে সংগীত পরিবেশ করেন কৃষ্ণপক্ষ, দুর্গ, অর্জন ব্যান্ডসহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ব্যান্ড সোসাইটির শিল্পীরা।শিল্পমাধ্যম ভাস্কর্যের বিরোধিতার প্রতিবাদ ও সমসাময়িক ধর্মীয় সহিংসতার নানা দিক তুলে ধরে কবিতা আবৃত্তি করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কালচারাল সোসাইটির আবৃত্তি শিল্পী রাগীব রহমান ও কামরুন নাহার মুন্নী। এছাড়া বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণকে কেন্দ্র করে ‘ভয়েস আব ইন্সপাইরেশন’ নামে মুকাভিনয় করেন ঢাকা ইউনিভার্সিটি মাইম অ্যাকশনের সাধারণ সম্পাদক হাফিজুর রহমান।
মুজিববর্ষে রাজধানীর ধোলাইড়পাড়ে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণকে কেন্দ্র করে সম্প্রতি ভাস্কর্যবিরোধী আন্দোলন শুরু করেছে কয়েকটি ধর্মীয় সংগঠন, যার নেতৃত্বে রয়েছেন হেফাজতে ইসলামের আমির জুনায়েদ বাবুনগরী, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মামুনুল হক ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নায়েবে আমির সৈয়দ ফয়জুল করিম। প্রতিবাদী এই কর্মসূচিতে তাদের ব্যঙ্গচিত্র প্রদর্শনীর মাধ্যমে ধর্মীয় গোড়ামির প্রতি ঘৃণা প্রকাশ করা হয়।
সৈকত বলেন, “আমরা কোনো ধর্মের বিরোধী নই। পৃথিবীর সব ধর্মই শান্তির কথা বলে। ধর্ম চর্চা ভালো, কিন্তু উগ্রবাদ নয়। সম্প্রতি সারা বাংলাদেশে ধর্মীয় উগ্রবাদী চর্চা শুরু হয়েছে। ধর্মকে হাতিয়ার হিসেবে নিয়ে এক শ্রেণির ধর্ম ব্যবসায়ী ধর্মের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে রাষ্ট্রে বিশৃঙ্খলা ও উসকানিমূলক আচরণ করছে।“তারা শিল্পমাধ্যম ভাস্কর্যের বিরোধিতা করছে। কুষ্টিয়ায় বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাংচুর করা হয়েছে। ধর্মের নামে বিভিন্ন জায়গায় মানুষ হত্যা করা হচ্ছে। এই সময়টাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বসে থাকতে পারে না। আমরা চাই, আমাদের হাজার বছরের সংস্কৃতি নিয়ে অসাম্প্রদায়িক এক বাংলাদেশ।”