অনেকেই রাগে বা ইচ্ছাকৃতভাবেই কারো নাম বিকৃত বা উপহাস করে ভিন্ন নামে ডেকে থাকেন। কিন্তু কারো নাম বিকৃত করার বিষয়ে কঠোরভাবে নিষেধ করেছেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাহুআইহি ওয়াসাল্লাম।তিরমিজি শরীফে আছে নবী কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, মুমিন কখনো দোষারোপকারী, অভিশাপকারী, অশ্লীল ও গালিগালাজকারী হয় না।
একজন মানুষের নাম শুধুমাত্র তার পরিচয় বহন করে না পাশাপাশি নামের মধ্যদিয়ে তার পরিবার, সংস্কৃতি ও মূল্যবোধ ফুটে উঠে। যে কারনে নাম সুন্দর ও সুন্দর অর্থবহ হওয়া জরুরী। প্রত্যেক ব্যাক্তিই তার নামকে সবচেয়ে বেশী ভালবাসে যে কারনে সে কখনই চায় না তার কেও বিকৃত বা ব্যাঙ্গাত্বক ভাবে ডাকুক। নাম বিকৃত করার ফলে অধিকাংশ সময় নামের আসল অর্থ পরিবর্তন হয়ে যায় এবং নামের অর্থ বিকৃত হয়ে অনেক সময় বিপরীত অর্থ ধারণ করে। শব্দ বা উচ্চারণের বিকৃতি নামের শ্রুতিমধুরতা কে বিনষ্ট করে করে। নামের মালিককে সবার কাছে হাস্যকর ভাবে উপস্থাপন করা, বিকৃতি করা , হাসি ঠাট্টা করার জন্য উপনাম দেয়া ব্যাক্তির হক নষ্ট করার নামন্তর।মানুষকে অপমান করা বা ঠাট্টা মসকরা করার জন্য তার নাম বিকৃত করা কবীরা গুনাহ এবং তা গীবতের শামিল। সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ মাখলুক মানুষের নামকে ভেংচিয়ে, বিদ্রুপাত্বক ভাবে, অথবা নাম পরিবর্তন করে অন্য নামে ডাকা বড় ধরনের গুনাহের কাজ।
ইসলামি শরিয়তে এভাবে মানুষের নামকে বিকৃত করে কিংবা অপমানমূলক ব্যঙ্গ করে ডাকা মারাত্মক গোনাহের কাজ। আমরা অনেকে ইচ্ছা-অনিচ্ছায়, অড্ডা-কিংবা মজার ছলে আসর জমাতে গিয়েও অন্যকে বিকৃত নামে ডেকে কথা বলে থাকি। যা ইসলামে জঘন্য অন্যায় ও গর্হিত কাজ। আল্লাহ তাআলা বলেন-
‘হে ঈমানদারগণ! কেউ যেন অপর কাউকে উপহাস না করে। কেননা, সে উপহাসকারী অপেক্ষা উত্তম হতে পারে এবং কোনো নারী অপর নারীকেও যেন উপহাস না করে। কেননা, সে উপহাসকারিণী অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ হতে পারে। তোমরা একে অপরের প্রতি দোষারোপ করো না এবং একে অপরকে মন্দ নামে ডাকবে না। কেউ বিশ্বাস স্থাপন করলে তাদের মন্দ নামে ডাকা গোনাহ। যারা এহেন কাজ থেকে তওবাহ না করে তারাই অত্যাচারী।’ (সুরা হুজরাত : আয়াত ১১)
পবিত্র কোরআনে মুমিনদের আল্লাহতায়ালা বলেন, পাপ ও সীমালঙ্ঘনের ব্যাপারে একে অন্যের সহায়তা করো না। আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয়ই আল্লাহ তায়ালা কঠোর শাস্তিদাতা। (সুরা মায়েদাহ, আয়াত: ২)
আমাদের আদর্শ আল কুরআন ও নবী কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নাহ। আমরা সাহাবা, তাবেয়ীন এবং ফুকাহা, মুহাদ্দিসীনের আদর্শিক উত্তরাধিকারী। তাহলে আমরা কেন বিভ্রান্ত হব? এই আদর্শ আমাদেরকে আলোকিত পথে নিয়ে যাবে ইনশাল্লাহ।আল্লাহতায়ালা আমাদের সকলকে নম্রতা ও কোমলতা বজায় রেখে চলার তৌফিক দান করুন। (আমিন, ছুম্মা আমিন)