Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০৫ বৃহস্পতিবার, জুন ২০২৫ | ২২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ | ঢাকা, ২৫ °সে

কলেজছাত্রী প্রেমিকাকে বিয়ের প্রলোভনে শারীরিক সম্পর্ক, অন্যত্র বিয়ে করলেন অভিযুক্ত পুলিশ

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৮ জানুয়ারী ২০২০, ১০:১৭ PM
আপডেট: ০৮ জানুয়ারী ২০২০, ১০:১৭ PM

bdmorning Image Preview


প্রেমিকাকে বিয়ের প্রলোভনে শারীরিক সর্ম্পক করেন পুলিশ সদস্য আশিক মাহমুদ পুষ্প। চাপে পড়ে এফিডেভিটে বিয়ে করে সাফ অস্বীকারের পর অন্যত্র বিয়ে করেন তিনি। এ অবস্থায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়ে বিচার না পেয়ে থানায় মামলা করলেও গত ২৫ দিনে অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য ধর্ষক রয়েছে অধরা। বহাল তবিয়তে ঢাকার মেট্রোপলিটনের নিজ কর্মস্থলে কর্মরত থেকে মামলা তুলে নিতে বিভিন্ন হুমকী-ধামকী ছাড়াও নানান কথাবার্তা ছড়াচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন প্রতারণা ও ধর্ষণের শিকার কলেজছাত্রী।

জামিন না নিয়ে দ্বিতীয় দফা ছুটি কাটিয়ে আজ বুধবার (৮ জানুয়ারি) ফের কর্মস্থলে যোগ দিয়েছেন অভিযুক্ত সেই পুলিশ সদস্য। ইউনিট প্রধান সাফ বলছেন, এটা তার (অভিযুক্ত) ও কোর্টের ব্যাপার।

প্রতারণা ও ধর্ষণের শিকার ওই ছাত্রীর বাড়ি ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার একটি চরাঞ্চলে। আর অভিযুক্ত প্রতারক ও ধর্ষণে অভিযুক্ত হচ্ছেন একই উপজেলার রাজিবপুর ইউনিয়নের রামগোবিন্দপুর গ্রামের মো. শহিদুল ইসলামের ছেলে আশিক মাহমুদ পুষ্প। তার বিরুদ্ধে গত ১৫ ডিসেম্বর প্রতারণা করে ধর্ষণের অভিযোগে ঈশ্বরগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন কলেজছাত্রী। এরপর থেকে মামলা তুলে নিতে ওই কলেজছাত্রীর মোবাইল ফোনে এসএমএস পাঠিয়ে ও ফোন করে বিভিন্ন ধরনের হুমকী দেওয়া হচ্ছে।

অন্যদিকে মামলায় অভিযুক্ত হওয়ার পর গত ২৫ দিনে কমপক্ষে দু’দফায় ছুটি নিয়ে বাড়ি ও শ্বশুড়বাড়িতে অবস্থান করেছেন সেই পুলিশ সদস্য। এ খবর বাদী পুলিশকে জানালেও তাকে গ্রেফতার করা হয়নি। আরো বলা হয়, এখানে ধরার নিয়ম নেই। এ অবস্থায় ছুটি কাটিয়ে বুধবার তিনি নিজ কর্মস্থল পিওএম (পশ্চিম) বিভাগ, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশে ফিরেছেন।

নির্যাতনের শিকার কলেজছাত্রী জানান, তিনি জেলার একটি উপজেলার সরকারি কলেজের সম্মান তৃতীয় বর্ষে পড়াশোনা করছেন। তার বড়বোনের বিয়ে হয়েছে পাশের একটি গ্রামে। বড়বোনের বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে মো. আশিক মাহমুদ পুষ্পের সাথে। পুষ্প পুলিশ কনস্টেবল পদে চাকরি করেন। তিনি তাকে নানা প্রলোভন দেখিয়ে শারীরিক সর্ম্পক গড়ে তোলে। এক পর্যায়ে বিয়েতে রাজী করায়। কিন্তু নিকাহ রেজিস্ট্রারের মাধ্যমে বিয়ে না করে একটি এফিডেভিট করে সময় মতো বিয়ে করবে বলে অঙ্গীকারবদ্ধ হয়। নথি ঘেঁটে দেখা যায়, গত বছরের ৪ অক্টোবর ময়মনসিংহের নোটারি পাবলিক কার্যালয়ে ওই এফিডেভিটটি নিবন্ধিত (নং-৬৬৩) হয়।

কলেজছাত্রী আরো জানান, এক পর্যায়ে ওই এফিডেভিটের বদৌলতে পুষ্প তার বাড়িতে থেকে তার সাথে স্বামী-স্ত্রীর মতো মেলামেশা করতে থাকে। কিন্তু তিনি ও তার পরিবারের লোকজন পুষ্পকে বারবার চাপ দেয় কাজী ডেকে বিয়েটি রেজিস্ট্রি করার জন্য। কিন্তু তার অসুস্থ মা সুস্থ হলে বিয়ে রেজিস্ট্রি করার কথা বলে চলে যান। এরপর তিনি বিয়ে করার জন্য ১০ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন।

ছাত্রী আরো বলেন, তিনি যৌতুক দাবি করা প্রসঙ্গে পুষ্পকে ফোন করলে সে এক পর্যায়ে সবকিছু অস্বীকার করে নানা প্রকার হুমকি ধামকি দিতে থাকেন। এর মধ্যে সে অন্যত্র বিয়ে করে ফেলে।

তিনি আরো জানান, পুষ্প চাকুরিতে বহাল থেকে তার লোকজনকে দিয়ে বিভিন্ন ধরনের অপবাদ ছাড়াও মামলা তুলে নেওয়ার হুমকি দিচ্ছে। সামনে পরীক্ষা থাকায় এখন তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন। সেই সাথে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।

ছাত্রীর বাবা জানান, তিনি একটি বায়িং হাউজে চাকরি করতেন। মেয়ের এই সমস্যার কারণে তিনি চাকরি ছেড়েছেন। আমার মানসম্মান সব শেষ করে দিয়েছে ওই আশিক। একজন কনস্টেবল হয়ে বিয়ের নামে আমার উচ্চশিক্ষিতা মেয়ের চরম সর্বনাশ করেছে। এখন সে পুলিশি দাপট কাজে লাগাচ্ছে। আমি পুষ্পের চাকরিস্থলসহ পুলিশের সিকিউরিটি সেল ও পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বরাবরে অভিযোগ দিয়েছি। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে অভিযোগের তদন্ত মাঝ পথে থেমে গেছে। ছাত্রীর বাবা প্রশ্ন করে বলেন, পুলিশ বাহিনী কেন একজন অপরাধীর দায় নিচ্ছে তা আমার কাছে বোধগম্য নয়। সাধারণ মানুষ কি তাহলে ন্যায় বিচার পাবে না।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও ঈশ্বরগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক রেজাউল করিম জানান, থানা থেকে সকল কাগজপত্র অভিযুক্তের কর্মস্থলের কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। এখন সেখান থেকেই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এ ব্যপারে ওই ইউনিটের আর আই ইন্সপেক্টর আব্দুল গফুর ছুটি কাটিয়ে কনস্টেবল পুষ্প কর্মস্থলে যোগ দিয়েছে স্বীকার করে বলেন, জামিন নিয়েছে কি না এটা তার ব্যাপার। ধর্ষণে অভিযুক্ত একজন আসামি কি করে এখনও কর্মস্থলে কর্মরত রয়েছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা কোর্টের ব্যাপার। সূত্রঃ কালের কণ্ঠ

Bootstrap Image Preview