ঢাকার ভাটারার প্রথম শ্রেণির স্কুলছাত্রী ইয়াসফাকে ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে হত্যা করেছে এক কিশোর। পরে দুর্দান্ত অভিনয় করে ঘটনা গোপনের চেষ্টা করে সে। ওই কিশোর আদালতে এ ঘটনার লোমহর্ষক বর্ণনা দিয়েছে।
সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ভাটারা থানার এসআই আবু জাফর হাওলাদার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
পুলিশের এ কর্মকর্তা বলেন, গত ২৬ ডিসেম্বর বিকালে ইয়াসফাকে নিজ কক্ষে ধর্ষণের চেষ্টা চালায় ওই কিশোর। ৬ বছরের ইয়াসফা চেঁচামেচি করলে মুখে গামছা গুঁজে দেয় আসামি। হাত-পা বেঁধে আবারও ধর্ষণের চেষ্টা করে। শিশুটি এক পর্যায়ে শ্বাসরোধে মারা যায়।
তিনি বলেন, আসামি কিশোর রবিবার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। শিশু ইয়াসফাকে হত্যার সবিস্তারে বর্ণনা দিয়েছে সে। আসামির বয়স ১৭ বছর। হত্যার আগে ওই শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছিল কি না, এ বিষয়ে ফরেনসিক পরীক্ষার অনুমতি দিয়েছেন আদালত।
ইয়াসফা ভাটারায় বেসরকারি ‘গুড নেইভার’ স্কুলের ছাত্রী ছিল। সে ভাটারার বারবিঘা এলাকায় নিজেদের বাসায় বাবা, মা ও বড় ভাইয়ের সঙ্গে থাকত। তাদের বাসার এক ভাড়াটিয়ার কক্ষের খাটের নিচ থেকে তার লাশ উদ্ধার হয়। এ ঘটনায় ইয়াসফার বাবা ইয়াছিন মুন্সী ভাটারা থানায় হত্যা মামলা করেছেন।
নিহত ইয়াসফার পরিবার ও পুলিশ জানায়, ঘটনার দিন ইয়াসফা বাসার অন্য শিশুদের সঙ্গে খেলছিল। একপর্যায়ে সন্ধ্যা হয়ে যায়। কিন্তু সে ঘরে না ফেরায় তার মা মরিয়ম মেয়ের খোঁজ শুরু করেন। সেদিন সন্ধ্যার আগে ওই কিশোর তার কক্ষে টিভি দেখছিল। ইয়াসফা তখন কিশোরের কক্ষে যায়। তাকে ধর্ষণের চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে হত্যা করে ওই কিশোর। এরপর লাশ খাটের নিচে রেখে চুপচাপ নিজের কক্ষে বসেছিল সে। খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে তাদের বাসার ভাড়াটে ওই কিশোরের কক্ষে যান মরিয়ম। তখন কিশোরও খোঁজ করার অভিনয় করে। এভাবে দীর্ঘক্ষণ মরিয়মের সঙ্গে দুর্দান্ত অভিনয় করে যাচ্ছিল আসামি। তৃতীয়বার ইয়াসফার মা কিশোরের কক্ষে যান। তিনি কিশোরের খাটের নিচে তার মেয়ের লাশ দেখতে পান। এ সময় ওই কিশোর পালিয়ে যায়। পরে নেত্রকোণা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। কিশোরের বাবা রাজমিস্ত্রি।
শিশু ইয়াসফার বড় ভাই ইশতিয়াক আহমেদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ছাত্র। তিনি বলেন, ওই কিশোর সব সময় তার কক্ষে থাকত। সে অধিকাংশ সময় টিভি দেখত আর মোবাইলে লুডু খেলত।