Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৮ শুক্রবার, জুলাই ২০২৫ | ৩ শ্রাবণ ১৪৩২ | ঢাকা, ২৫ °সে

সীমান্তের দুই দিকেই ধর্ষণের শিকার হচ্ছেন অনুপ্রবেশকারী নারীরা

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২২ ডিসেম্বর ২০১৯, ০৬:৪০ PM
আপডেট: ২২ ডিসেম্বর ২০১৯, ০৬:৪০ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত ছবি


গত শনিবার ভারতের ব্যাঙ্গালোর থেকে আসা চারজন অনুপ্রবেশকারী বিজিবির হাতে আটক হন। তারা জানান, সেখানে ব্যাপকভাবে পুলিশি অভিযানের কারণে তারা চলে আসতে বাধ্য হয়েছেন। ভারত থেকে আসার সময় মহেশপুর সীমান্তে এপারে এবং ওপারে সর্বস্ব লুণ্ঠন ছাড়াও উভয় পারে নারীরা ধর্ষণের শিকার হয়েছেন!

সীমান্তে সরেজমিনে ঘুরে জানা যায়, এ উপজেলায় একটি শক্তিশালী মানবপাচারকারী সিন্ডিকেট চক্র সক্রিয় হয়ে উঠেছে ভারত থেকে অনুপ্রবেশকারীদের পারাপারে। এই পারাপারের সময় দুই দেশের দালালচক্র অনুপ্রবেশকারীদের অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে তাদের সবকিছু লুণ্ঠন করে নেওয়া ছাড়াও যুবতী নারীদের রাতের আঁধারে আশ্রয় দেওয়ার নামে নির্জন এলাকায় নিয়ে ধর্ষণ করছে। তারপর সর্বস্ব কেড়ে নিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে নিঃস্ব হাতে তাড়িয়ে দিচ্ছে।

জানা গেছে, ভারত থেকে যারা আসছেন তাদের হাওড়া রেল স্টেশনে পরিমল সিন্ডিকেটের লোকজন রিসিভ করে। তারা বিশেষ গাড়িতে করে তাদের বাংলাদেশের সীমান্তে হাসখালী থানার বন্যাবড়ে ও রামনগর গ্রামে নিয়ে রাখে। এখানে এজাজুলের ছেলে মোজাফ্ফরের নেতৃত্বে তার লোকজন বাংলাদেশের বাগাডাঙ্গা সীমান্তে সাইফুলের লোকজনের কাছে হস্তান্তর করে। এ সময় যুবতী মেয়েদের মোজাফ্ফর ও তার লোকজন ধর্ষণ করছে। অপরদিকে বাংলাদেশে প্রবেশের পর সাইফুল ও তার লোকজন একই ঘটনা ঘটাচ্ছে।

খোসালপুর গ্রামের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, বাবুল নামে এক দালালকে গত ৪দিন আগে ভোর বেলা ১২/১৩জন অনুপ্রবেশকারী নিয়ে মাঠ দিয়ে পারাপার হতে দেখেছেন। তিনি আরও জানান, এদের মধ্যে কয়েকজন নারী দালালদের দ্বারা নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। নির্যাতীত ঐ সকল নারী এ ঘটনার কথা বিভিন্নভাবে তাদের জানিয়েছে।

ভারতের হাসখালী থানার রামনগর গ্রামের সাইজুদ্দিন জানান, এই গ্রামের মোজাফ্ফরের নেতৃত্বে মতি, হাসান, নাসিরসহ ১০/১২ জন এ সকল পারাপার করে থাকে। গত ১৮ই ডিসেম্বর ২৪/২৫ জনকে রাতের আঁধারে পার করার সময় ২/৩জন মহিলাকে তারা ধর্ষণ করে। নির্যাতিত ওই নারীরা নিরাপদে পার হওয়ার আশায় এবং ভয়ে মুখ খোলেননি। যারা বিজিবির হাতে ধরা পড়ে তাদের কাছ থেকে গোপনীয়ভাবে অনেক তথ্য পাওয়া যায়।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, মহেশপুর উপজেলার বাগাডাঙ্গা গ্রামের আব্দুস সাত্তার ঝড়ুর ছেলে সাইফুল ইসলাম, আফিল উদ্দিনের ছেলে হাফি, বাকোসপোতা গ্রামের আব্দুল খালেকের ছেলে জাহাঙ্গীর, সলেমানপুর গ্রামের মিজা উদ্দিনের ছেলের নেতৃত্বে একটি বড় সিন্ডিকেট অর্থের বিনিময়ে মানুষ পারাপার করে আসছে। তারা দুই দেশে বড়ো ধরণের নেটওয়ার্ক তৈরি করেছে। গত এক মাসে এ ধরণের অনুপ্রবেশকারীদের পারাপার করে তারা আঙুল ফুলে কলা গাছ বনে গেছে।

এ বিষয়ে ৫৮ বিজিবির অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল কামরুল আহসান জানান, সীমান্তে অনুপ্রবেশ বন্ধ করার জন্য তারা কঠোর ব্যবস্থা গ্রহন করেছে। এছাড়া দালাল চক্রদের বিষয়ে তারা খোঁজ-খবর নিয়ে আইনের আওতায় আনার চেষ্টা করছে। গত শনিবার পর্যন্ত এ সীমান্তে ৩৩০জনকে আটক করা হয়েছে। এছাড়া গোপন পথে বিপুল সংখ্যক নারী-পুরুষ পার হয়েছে।

 

Bootstrap Image Preview