ব্র্যাকের প্রতিষ্ঠাতা স্যার ফজলে হাসান আবেদের স্মৃতিচারণ করে প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী পরিচালক আসিফ সালেহ বলেছেন, স্যার ফজলে হাসান আবেদ সবসময় বলতেন, ব্র্যাক শুধু একটি প্রতিষ্ঠান নয়, একটি স্বপ্ন। তার স্বপ্ন ছিল পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর সম্ভাবনাকে জাগিয়ে তোলার জন্য। জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত মানুষের কথা ভেবেছেন তিনি।
শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) রাত ৮টা ২৮ মিনিটে রাজধানীর বসুন্ধরার অ্যাপোলো হাসপাতালে স্যার ফজলে হাসান আবেদ শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। তার মৃত্যুর পর সার্বিক বিষয় জানাতে রাতে অ্যাপোলো হাসপাতালে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক আসিফ সালেহ বলেন, স্যার ফজলে হাসান আবেদ সবসময় সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করেছেন। হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর যখন উনার মুখে অক্সিজেন লাগানো তখনও তিনি তার মেয়েকে ডেকে বলেছেন, আমাদের নতুন স্কুলগুলোকে কিন্তু মডেলে পরিণত করতে হবে।
এসময় সাংবাদিকরা জানতে চান স্যার ফজলে হাসান আবেদ ব্র্যাক নিয়ে তার কোনো স্বপ্ন বা দিক নির্দেশনা দিয়ে গেছেন কি না? জাবাবে আসিফ সালেহ বলেন, গত ৪/৫ মাস ধরে তিনি ব্র্যাকের গ্লোবাল গর্ভনেন্স নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। একটি গ্লোবাল বোর্ড গঠন করা হয়েছে যেখানে তিনজন সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। সেই গ্লোবাল বোর্ডের মাধ্যমে ব্র্যাকের বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালিত হবে। এছাড়া আমরা যারা কর্মী রয়েছি তারা সবাই মিলে ব্র্যাককে এগিয়ে নিয়ে যাব।
বিদেশে ভালো চাকরি ছেড়ে দেশে ফিরে এসেছিলেন দেশের জন্য কাজ করার স্বপ্ন নিয়ে। মাত্র ৩৬ বছর বয়সে তিনি ব্র্যাক শুরু করেন। ব্র্যাকের কার্যক্রম এখন ১৪টি দেশে আছে। তিনি সবসময় বলতেন, ব্র্যাক শুধু একটি প্রতিষ্ঠান নয়, একটি স্বপ্ন। যেটা পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর সম্ভাবনাকে জাগিয়ে তোলার জন্য। সেই স্বপ্নকে এগিয়ে নিতে আমরা সবাই মিলেই কাজ করব।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, রোববার (২২ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত আর্মি স্টেডিয়ামে সর্বসাধারণের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য তার মরদেহ রাখা হবে। এরপর দুপুর সাড়ে ১২টায় তার জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। জানাজার পরে তাকে বনানী কবরস্থানে দাফন করা হবে।
ব্র্যাকের প্রতিষ্ঠাতা স্যার ফজলে হাসান আবেদ শুক্রবার রাত ৮টা ২৮ মিনিটে রাজধানীর শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর। তিনি স্ত্রী, এক মেয়ে, এক ছেলে এবং তিন নাতি-নাতনি রেখে গেছেন। উল্লেখ্য, ফজলে হাসান আবেদের জন্ম ১৯৩৬ সালে। স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে তিনি বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাক প্রতিষ্ঠা করেন। ২০০১ সাল পর্যন্ত তিনি সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
ওই সময় তার বয়স ৬৫ হয়ে গেলে তিনি নির্বাহী পরিচালকের দায়িত্ব ছেড়ে দেন। এরপর ব্র্যাকের চেয়ারপারসন হিসেবে কর্মরত ছিলেন আরও ১৮ বছর। কয়েক মাস আগে তিনি সে পদটিও ছেড়ে দিয়ে অবসরে যান।