আসামির মাথায় আইএসের টুপির সাদৃশ্যের বিষয়ে কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের প্রধান, অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম বলেছেন, জানা মতে, আইএসের কোনো টুপি নেই। আইএসের সৃষ্টি থেকে এ যাবৎ পর্যন্ত কোনো টুপি তারা তৈরি করেনি। তারপরও তাদের কোনো টুপি আছে কি না, তা বিশ্লেষণ করে দেখব। পাশাপাশি কারো গাফিলতির কারণে এরকম টুপি এজলাসে এসেছে কি না- তা খতিয়ে দেখা হবে।
রায়ের পর আজ দুপুরে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, হলি আর্টিসান মামলার রায় সন্ত্রাসীদের জন্য একটা মেসেজ (বার্তা)। এ রায়ের মাধ্যমে সন্ত্রাসীরা কঠিন বার্তা পেলো, ভবিষ্যতে এ ধরনের কর্মকাণ্ড করতে কেউ সাহস পাবে না।
সিটিটিসি প্রধান আরও বলেন, “কালো কাপড় ব্যবহার করা যেকোনও জঙ্গি সংগঠনের রেওয়াজ। আল-কায়দার জঙ্গিরাও কালো কাপড়ে ‘লাইলাহা ইল্লাল্লাহু’ লেখে। ফলে টুপিতে ‘লাইলাহা ইল্লাল্লাহু’ লিখলেই কোনও কিছু বোঝা যায় না।”
মনিরুল ইসলাম আরও বলেন, ‘টুপি বানানোর ধারণা আইএস প্রধান আবু বকর আল বাগদাদির মাথায়ও আসেনি। এই ক্ষেত্রে আমরা বিশ্লেষণ করে দেখবো এটি আইএসের টুপি কিনা। পাশাপাশি এটি কীভাবে সে পেলো, সেখানে দায়িত্বে পালনে কারো গাফিলতি ছিল কিনা, তা আমরা তদন্ত করে দেখবো।’
আদালত চত্বর ও কাঠগড়ায় জঙ্গিদের ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচারণের সমালোচনা করে এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘জঙ্গিরা আদালত প্রাঙ্গণে যে বক্তব্য দিয়েছে, প্রিজনভ্যানে যে বক্তব্য দিয়েছে, এতে প্রমাণিত হয় তারা এই নৃশংস হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। এর পক্ষেই তারা কথা বলেছে। এটি তাদের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া।’
তিনি বলেন, ‘যারা হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে এবং বিভিন্ন সময় পরিকল্পনায় অংশ নিয়েছে, এই ২১ জনকে মানুষের পর্যায়ে ফেলা যায় না। এদের কোনও মনুষ্যত্ব নেই। এতবড় নৃশংস হত্যাকাণ্ড যারা ঘটাতে পারে, সেটি আবার ধর্মের নামে জাস্টিফাই করে! তারা মানবতার বিরুদ্ধে কাজ করেছে, রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে কাজ করেছে এবং ধর্মের বিরুদ্ধে কাজ করেছে।’
মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘তাদের বার্তা আমরা আদালত প্রাঙ্গণে লক্ষ করেছি। দেশের সাধারণ মানুষ তাদের ঘৃণা করছেন। তাদের এই মেসেজ মানুষের মনে কোনও প্রভাব ফেলবে না।’ জঙ্গিদের এই আচরণে সাধারণ মানুষ আরও বেশি তাদের ঘৃণা করবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
রাজধানীর গুলশানে হলি আর্টিসান রেস্তোরাঁয় জঙ্গি হামলার মামলার আট আসামির মধ্যে সাতজনের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। বাকি একজন মিজানুর রহমান ওরফে বড় মিজান খালাস পেয়েছেন। বুধবার (২৭ নভেম্বর) ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মজিবুর রহমান এ রায় ঘোষণা করেন।
রায় ঘোষণার পর আদালত থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত আসামি রাকিবুল হাসান রিগান ও জাহাঙ্গীর হোসেনের মাথায় আইএসের টুপির মতো দেখা যায়।
বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও ইতোমধ্যে সমালোচনা শুরু হয়েছে। প্রশ্ন তোলা হচ্ছে, কারাবেষ্টনির মধ্যে কীভাবে আসামিদের মাথায় এ ধরনের টুপি এলো?