টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে এসএসসি পরীক্ষার্থী এক ছাত্রীকে কোমলপানীয়ের সাথে নেশাজাতীয় দ্রব্য সেবন করিয়ে ধর্ষণের ঘটনায় দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ধর্ষিতার বাবা সোমবার রাতে ধর্ষণকারী ও তিন সহযোগীকে আসামি করে মির্জাপুর থানায় মামলা দায়ের করেছেন। পুলিশ ধর্ষণকারী ও এক সহযোগীকে গ্রেপ্তার করেছে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলো বংশাই স্কুল অ্যান্ড কলেজ পরিচালনা পরিষদের সভাপতি আজগানা ইউনিয়নের বেলতৈল গ্রামের আতিকুল ইসলাম শিকদারে ছেলে রাকিবুল ইসলাম শিকদার ও আজগানা ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম শিকদারের ছেলে সোহান আহমেদ শিকদার।
মির্জাপুর থানা পুলিশ সোমবার বিকেলে বেলতৈল গ্রাম থেকে সন্দেহজনকভাবে তাদের আটক করেন। ধর্ষিতার বাবা সোমাবার রাত পৌনে একটার দিকে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে টাঙ্গাইল ডিবি পুলিশ (দক্ষিণ) গ্রেপ্তারকৃতদের পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করে আদালতে পাঠান। সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক আকরামুল হক তাদের ১ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এ ছাড়া একই দিন বিকেলে টাঙ্গাইল জেলা ও ডিবি পুলিশ অভিযান চালিয়ে আজগানা ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম শিকদার ও আতিকুল ইসলাম শিকদারকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে নিয়ে যান। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে মঙ্গলবার সকালে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয় বলে ডিবি পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শ্যামল কুমার দত্ত জানিয়েছেন।
মামলায় অন্য আসামিরা হলো বেলতৈল গ্রামের ইয়াকুব শিকদারের ছেলে আতিকুল ইসলামের গাড়ির চালক জসিম শিকদার ও তার স্ত্রী বিলকিস বেগম।
টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহিনুল ইসলাম ফকির ও মির্জাপুর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার দীপঙ্কর ঘোষ পৃথক অভিযান চালান।
উল্লেখ্য, রাকিব শিকদার ওই ছাত্রীর মায়ের মুঠোফোনে কুপ্রস্তাব দিয়ে একাধিকবার খুদে বার্তা পাঠায়। সর্বশেষ বিকাশের মাধ্যমে ৩ হাজার টাকাও পাঠায় সে। রাকিবের কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় গত ২০ নভেম্বর সকাল আটটার দিকে সোহান, জসিম ও বিলকিসের সহায়তায় রাকিব শিকদার ওই ছাত্রীকে জসিমের বাড়িতে ডেকে নেয়। পরে রাকিব জসিমের একটি কক্ষে ছাত্রীকে আটকিয়ে কোমলপানীয়র সাথে নেশাজাতীয় দ্রব্য সেবন করিয়ে ধর্ষণ করে। পরে অজ্ঞান অবস্থায় তাকে ঘরে রেখে রাকিব পালিয়ে যায়। এলাকাবাসী মেয়েটিকে অজ্ঞান অবস্থায় ঘর থেকে বের করেন। খবর পেয়ে মেয়ের মা ও বাবা ভ্যানযোগে মেয়েটিকে উদ্ধার করে বাড়ি নিয়ে আসে।
মির্জাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. সায়েদুর রহমান জানান, অভিযুক্ত রাকিব ও সোহানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ছাড়া ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামসহ দুইজনকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানান।